জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য জাকসু নির্বাচন কেন গুরুত্বপূর্ণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন দীর্ঘ ৩৩ বছর পর নবমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিয়মিতভাবে নির্বাচন হলেও ১৯৯২ সালের পর থেকে কার্যত বন্ধ ছিল এ প্রক্রিয়া।
সাংবিধানিকভাবে জাকসু একটি অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। এর মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা, গুণগত বিদ্যাচর্চা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাগত সুযোগ সৃষ্টি করা, দায়িত্বশীল নাগরিক ও নেতৃত্ব গড়ে তোলা, দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো এবং ক্রীড়া কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
গণতান্ত্রিক চর্চা ও নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্র
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান লিমন বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে যে রাজনৈতিক আবহ তৈরি হয়েছে, তা আমাদের সংগ্রামেরই ফসল। এতদিন আমরা স্বাধীনভাবে গণতন্ত্র চর্চা করতে ব্যর্থ হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হলে যেমন গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত থাকবে, তেমনি এখান থেকেই ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ব্যক্তিত্বের জন্ম হবে।'
শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষায় কার্যকর প্ল্যাটফর্ম
পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল হক নবো বলেন, 'শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও চাহিদা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হলো ছাত্রসংসদ। মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করা এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জাকসু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক চর্চা যেমন প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার, তেমনি শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন আমাদের দাবি ও অধিকার আদায়ের অন্যতম মাধ্যম।'
সিনেটে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ অনুপস্থিতি
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে গত ৩৩ বছর শিক্ষার্থীদের কোনো প্রতিনিধি ছিল না। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, 'দীর্ঘ ৩৩ বছর সিনেট ভবনে কোনো প্রতিনিধি না রেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নৈতিক অধিকার খর্ব করে রাখা হয়েছিল। ফলে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত থেকে বঞ্চিত হয়েছে শিক্ষার্থীরা, তাদের দাবি-দাওয়াও আদায় সম্ভব হয়নি। অবশেষে দীর্ঘদিন পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।'