অবৈধ সিসা বার পরিচালনার অভিযোগে সেলিম প্রধানসহ ৯ জন কারাগারে

রাজধানীর গুলশানে অননুমোদিত সিসা বার পরিচালনার অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা হিসেবে পরিচিত সেলিম প্রধানসহ নয় জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান এ আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন- রাকিবুল ইসলাম রাফি, সাদিকুল ইসলাম সুমন, তৌফিকুল ইসলাম, রিফাত হাসান, রবিউল হাসান, মিনহাজুর রহমান তাজবীর, মেহেদী হাসান ও সাইমুম ইসলাম।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান আসামিদের আদালতে হাজির করে জেলহাজতে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছেন যে তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই স্থানে অবৈধ সিসা বার পরিচালনা করে আসছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাদের কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন বলে আবেদনে জানানো হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এসআই হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার ভোররাতে রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ নয় জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, একই দিন রাত আড়াইটার দিকে গুলশান থানার বারিধারার ডিপ্লোম্যাটিক জোনের নেক্সাস ক্যাপে প্যালেস রেস্টুরেন্টে অবৈধ মাদকদ্রব্য বিক্রির তথ্য পায় পুলিশ।
ভোর তিনটার দিকে অভিযানে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালানোর চেষ্টা করে। এসময় তাদের আটক করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি সিসা, ৭টি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মামলা রয়েছে। ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে র্যাব-১।
পরে তার গুলশান ও বনানীর বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় সেদিনই বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এরপর ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযোগপত্রে তার বিরুদ্ধে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়।
তদন্ত শেষে মোট ৫৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মেলে। ওই মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আদালতে তার আট বছরের কারাদণ্ড হয়।