আচরণবিধি চূড়ান্ত: নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার নিষিদ্ধ, একজন প্রার্থীর ২০ এর বেশি বিলবোর্ড নয়

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার জন্য পোস্টার ব্যবহার করা যাবে না। আর একজন প্রার্থী একটি সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়া রেক্সিন, পলিথিন, প্লাস্টিক, পিভিসি বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর অন্য কোনো উপাদানে তৈরি লিফলেট, হ্যান্ডবিল, ফেস্টুন বা ব্যানার করা যাবে না।
রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় এসব কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই বিধিমালা চূড়ান্ত করেছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন প্রস্তাবের সঙ্গে সমন্বয়ে রেখে গত মঙ্গলবার নতুন আচরণ বিধিমালা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বিধিমালায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোনো ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। বিলবোর্ডের আয়তন হবে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট বাই ৯ ফুট।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বিলবোর্ড বিষয়ে ইসি বলেছে, যেগুলো ডিজিটাল বিলবোর্ড, সেগুলোতে আলোর ব্যবহার করা যাবে। বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীর প্রচারে বিলবোর্ডের ব্যবহার অতীতে ছিল না; এবার যুক্ত করা হয়েছে। আর ব্যানার ও ফেস্টুনের ব্যবহার নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থীর ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড ও দলের ক্ষেত্রে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
রোজার আগে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের লক্ষ্যে ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। এরই মধ্যে ভোটের কর্মপরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়েছে।
রোডম্যাপ অনুযায়ী, এ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপও শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এমন পরিস্থিতিতে দলের সঙ্গে সংলাপের আগেই আরপিও, দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি নিয়ে কোনো পরামর্শ পেলে তা বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
আচরণবিধিতে আরও বলা হয়েছে, প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলে রাখতে হবে। প্রচারণার সময় থাকবে তিন সপ্তাহ। আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে দলের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামাও নেবে ইসি।
আচরণবিধির 'গুরুতর' অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিওতে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে। আগে আচরণবিধিতে আরপিও অনুচ্ছেদটি ছিল না, এবার যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী অপরাধে আরপিও ৯১ ধারা অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিল করে থাকে ইসি। এ বিষয়টি আচরণ বিধিমালায় স্পষ্ট করা হয়েছে।
নির্বাচন উপলক্ষে কর্মপরিকল্পনাতে দেখা গেছে, তফসিল ঘোষণার পরে বাংলাদেশ বেতার এবং বিটিভিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারণা এবং দলীয় প্রধানের বক্তব্য দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠাবে ইসি।
ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিটিভি এবং বাংলাদেশ বেতারের সম্প্রচার বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া প্রচার করতে পারবে।
একটি সংসদীয় আসনের সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে একই মঞ্চ বা প্ল্যাটফর্মে এবং একই দিনে নির্বাচনী ইশতেহার বা ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এই প্ল্যাটফর্মের ব্যবস্থা করবেন।
নির্বাচন উপলক্ষে ইসির কর্মপরিকল্পনাতে দেখা গেছে, প্রতীক বরাদ্দের পর পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনী আসন ভিত্তিক রিটার্নিং অফিসাররের তত্ত্বাবধানে একই প্লাটফর্মে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে ভোটার ও অংশীজনদের উপস্থিতে নির্বাচনি ইশতেহার পাঠের সুযোগ করে দিবে ইসি। যেখানে সম্পৃক্ত থাকবে জেলা নির্বাচন অফিস।