পদত্যাগের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দেনদরবারে আসিফ ও মাহফুজ
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব ছেড়েছেন আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দুজনেই আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। কিন্তু কোন দলের হয়ে নির্বাচন করবেন, সেটি এখনো নিশ্চিত করেননি দুজনের কেউ।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একাধিক নেতা বলেন, শেষপর্যন্ত আসিফ ও মাহফুজ তাদের সঙ্গেই যোগ দেবেন। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দুজনেই গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে দেনদরবার করছেন বলে জানা গেছে।
কয়েকজন নেতা আরো জানান, এনসিপিতে তাদের দুজনের দলীয় অবস্থান ও পদ-পদবি নিয়ে বিবদামান পক্ষগুলোর সমঝোতা না হলে চূড়ান্ত কিছু জানানো যাচ্ছে না। আসিফের জন্য ঢাকা-১০ ও মাহফুজের জন্য লক্ষ্মীপুর-১ আসন ফাঁকা রেখেছে এনসিপি। তবে বিএনপি ইতিমধ্যে ঢাকা-১০ আসনে রবিউল আলম ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনে শাহাদাত হোসেন সেলিমকে মনোনয়ন দিয়েছে।
তাদের ব্যাপারে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমাদের সব সহযোদ্ধাকে আমরা এনসিপিতে চাই। কিন্তু তাদেরও ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে, তারা যেকোনো দলে যেতে পারেন।'
এদিকে আসিফ মাহমুদের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, আসিফ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেননি, হয়তো শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি আসিফের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, দায়িত্বে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে বা কিছু ভুল করে থাকেন। তবে তার কাছে সংগ্রামের অবদানে আসিফের সেসব ভুল তুচ্ছ।
নুর আরো বলেন, 'আসিফ হঠাৎ গজিয়ে ওঠা বা ২০-২৫ দিনের আন্দোলনের কোনো নেতা নয়। আসিফ ফ্যাসিবাদের উত্তাল সময়ে রাজপথের সংগ্রাম থেকে গড়ে ওঠা নেতা, রাজপথে আমার সংগ্রামের সারথি।'
এদিকে আসিফ মাহমুদ সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, আপাতত তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। মাহফুজ আলম জানান, তিনি কয়েকদিন সময় নিচ্ছেন; এরপর নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন।
তবে মাহফুজের ভাই ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম বলেছেন, মাহফুজ লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। তবে তিনি কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তার এনসিপিতে আসা কিংবা স্বতন্ত্র নির্বাচন করার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন এই সাবেক দুই উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ামাত্র তাদের পদত্যাগ কার্যকর হয়।
