চট্টগ্রামে ‘মব’ তৈরি করে কিশোর হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ২

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চোর সন্দেহে 'মব' সৃষ্টি করে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা ও দুজনকে আহত করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এ মামলা দায়ের করেন নিহত কিশোর মো. রিহান মাহিনের (১৫) মা খাদিজা বেগম। মামলায় এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ নূর আহমেদ মামলা দায়ের এবং দুইজনকে আটক করার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, 'বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।'
আটককৃতরা হলেন মুহাম্মদ নোমান (২২) ও মুহাম্মদ আজাদ (২৩)। তারা দুজনই কাঞ্চননগর ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চননগর গ্রামের বাসিন্দা। তাদের দুজনকে আজ সকালে আদালতে সোপর্দ করার পর কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার অপর তিন আসামি—নাজিম উদ্দিন, মোহাম্মদ তৈয়ব ও মহিউদ্দিন এখনও পলাতক রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে মো. রিহান মাহিন (১৫) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় রিহানের সঙ্গে থাকা অন্য দুই বন্ধু মো. মানিক ও মো. রাহাত গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোররাত ৩টার দিকে কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চেইঙ্গার সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাহিন কাঞ্চননগর উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও একই গ্রামের সাগর আলী তালুকদার বাড়ির মুদিদোকানি মো. লোকমানের ছেলে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে চুরির অভিযোগে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা, আহত ২
স্থানীয়রা জানান, নিহত রিহান গতকাল অন্য দুই বন্ধুর সাথে চট্টগ্রাম নগরে বেড়াতে যায়। বাড়ি ফেরার সময় রাত তিনটার দিকে বাড়ির কাছে এলে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা ৭-৮ জন ব্যক্তি তাদের চোর আখ্যা দিয়ে ধাওয়া দেন। তিনজন দৌড়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে তাদের ধরে সেতুর ওপর আনা হয়। এরপর তিন কিশোরকে রশি দিয়ে বেঁধে পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাহিন মারা যায়।
ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আহমদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ছেলেটিকে চোর আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরিবার মামলা করার কথা জানিয়েছে। পুলিশ মূল হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।'
নিহতের বাবা মো. লোকমান স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার ছেলেকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা বলেছে মাহিন নাকি টাকা নিয়েছে। আমি বলেছি, যদি নিয়ে থাকে আমি টাকা ফেরত দেব। তবুও তারা ছাড়েনি। আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই।'