হাদি হত্যা: প্রধান আসামি ফয়সালকে আত্মগোপনে সহায়তাকারী রাজু রিমান্ডে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদকে সীমান্ত এলাকায় আত্মগোপনে সহায়তাকারী মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে রাজুকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, আসামিকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ।
আবেদনে বলা হয়, আসামি আমিনুল ইসলাম (রাজু) ঘটনার পরপরই বিকালে নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে ফিলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। এজাহারনামীয় আসামি ফয়সাল করিম মাসুদকে সীমান্ত এলাকায় আত্মগোপনে সহায়তা করেছে। এছাড়াও সে এ মামলায় সরাসরি জড়িত আসামি ও উক্ত আসামিদের আত্মগোপনে সহায়তাকারীদের অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছে। ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সুকৌশলে এড়িয়ে যায়।
আবেদনে আরও বলা হয়, মামলার মূল রহস্য উদঘাটন, পলাতক এজাহারনামীয় ও সহযোগী আসামির অবস্থান শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী, অর্থ প্রদানকারী ও মদদদাতাদের শনাক্তকরণ, আসামিদের সীমান্ত এলাকায় আত্মগোপনে অন্যান্য সহায়তাকারীদের শনাক্তকরণের স্বার্থে আসামিকে নিজ হেফাজতে রেখে বিশদভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড প্রয়োজন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। শুনানিকালে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. কাইয়ুম হোসেন নয়ন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, আজ বুধবার রাত দেড়টায় মিরপুর-১১ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলাটিতে এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শরীফ ওসমান হাদি অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তরা ১২ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে তার মাথা ও ডান কানের নিচের অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক জখম হন। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর হত্যাচেষ্টা মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এটি হত্যা মামলায় রূপান্তর নেয়।
