ত্রুটিপূর্ণ নীতির কারণে জ্বালানি সংকটে যেভাবে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকছে

'নীতি যখন বুমেরাং'—এই তিনটি শব্দই বাংলাদেশের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কৌশলের অবস্থাকে পুরোপুরি তুলে ধরার জন্য যথেষ্ট।
এলএনজি আমদানি সত্ত্বেও গত দুই দশক ধরে দেশ ক্রমবর্ধমান গ্যাস সংকটে ভুগছে। তবু জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করেই বিগত সরকারগুলো একের পর এক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দিয়ে গেছে।
এর ফল হলো, অলস বসে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য মোটা অঙ্কের ক্যাপাসিটি পেমেন্ট গুনতে হচ্ছে, অথচ দেশ বঞ্চিত হচ্ছে সস্তা বিদ্যুৎ থেকে।
এ পরিস্থিতির সর্বশেষ শিকার মেঘনাঘাটের জেরা-র ৭১৮ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। ২৮ জুলাই বাণিজ্যিক উৎপাদনে এলেও দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। কারণ, কেন্দ্রটি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ১৩০ এমএমসিএফডি গ্যাস পেট্রোবাংলা সরবরাহ করতে পারেনি।
আর সামনে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
আগামী ১৮ মাসের মধ্যে মোট ১,৯৫৬ মেগাওয়াট সक्षমতার আরও চারটি বড় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে এগুলোর জন্য অতিরিক্ত ৬১৫ এমএমসিএফডি গ্যাসের প্রয়োজন হবে, যা বর্তমান সরবরাহ সংকটের মধ্যে জোগান দেওয়া প্রায় অসম্ভব বলে স্বীকার করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ সরাসরিই বলেন: 'রূপসা, জেরাসহ অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না করে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল।'
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, 'এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আসলে আমাদের জন্য যন্ত্রণার কারণ।'
সমস্যা শুধু গ্যাস সংকটেই নয়, লজিস্টিকসেও রয়েছে।
জেরার দ্রুত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, 'মেঘনাঘাটে বেশ কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে। আমাদের একাধারে গ্যাস সংকট ও বিতরণ লাইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই জেরা কেন্দ্রটি বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।'
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, তারা সামনে উৎপাদনে আসা কেন্দ্রগুলোর খরচের সঙ্গে বিদ্যমান কয়লা ও তরল জ্বালানিভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর খরচের তুলনা করবেন।
তিনি আরও বলেন, 'কেন্দ্রগুলোতে কীভাবে গ্যাস সরবরাহ করা যায়, ভেবে দেখছি আমরা। তবে এতে সময় লাগবে।'
প্রাকৃতিক গ্যাস এখনও বাংলাদেশের সবচেয়ে সাশ্রয়ী জ্বালানি উৎস। গ্যাস থেকে উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়ে ৬-৮ টাকা, যেখানে কয়লার ক্ষেত্রে ১২-১৫ টাকা ও তরল জ্বালানির ক্ষেত্রে ২৫-২৭ টাকা দাম পড়ে।
অথচ সবচেয়ে সস্তা উৎসটিই সবচেয়ে অস্থিতিশীল।
জেরাকে শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন
সরকার জেরাকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর তারিখ (সিওডি) ঘোষণার অনুমতি দিয়েছিল এই শর্তে যে তারা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ট্যারিফ কমাতে রাজি হবে। তবে জেরা তা প্রত্যাখ্যান করে বলে, যেকোনো রকমের মূল্য পুনর্নির্ধারণের জন্য তাদের অর্থায়নকারীদের অনুমোদন প্রয়োজন।
জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, 'আমরা জেরাকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ট্যারিফ কমানোর শর্তে সিওডি দিয়েছিলাম। নইলে কেন্দ্রটি শুধু কারিগরিভাবে চালু রাখার জন্য গ্যাস পেত। এ কারণেই কেন্দ্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
তিনি আরও জানান, কোনো ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দেওয়া হবে না। কারণ চুক্তিতে একাধিক শর্ত ছিল, যা পূরণ করা হয়নি।
২০১৯ সালের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) অনুযায়ী, বিপিডিবি ২২ বছরের জন্য ৭১৮ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি থেকে ৫.৮৫ টাকা লেভেলাইজড ট্যারিফে প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ কিনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। তবে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এই দাম প্রায় ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে।
জ্বালানি নিয়ে অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও কেন জেরার বিদ্যুৎকেন্দ্রকে উৎপাদনে আসার অনুমতি দেওয়া হলো, সে বিষয়ে সচিব ফারজানা মমতাজ টিবিএসকে বলেন, বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী, সরকার সিওডি জারি না করলেও নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে কেন্দ্রের মালিক নিজেই সিওডি ঘোষণা করতে পারেন।
গ্যাস সংকটে কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বিদ্যুৎ বিভাগের ট্যারিফ নিয়ে পুনঃআলোচনার প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার টিবিএসের পক্ষ থেকে জেরা এশিয়ার জনসংযোগ বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার পেই ইয়ংকে ইমেইল করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জেরা ২০১৯ সালে ভারতের রিলায়েন্স পাওয়ারের কাছ থেকে মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণের পর ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর প্রকল্প কোম্পানিটির নতুন নামকরণ করা হয় জেরা মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড (জেএমপিএল)।
নির্মাণাধীন কেন্দ্রগুলোর অবস্থা
বিপিডিবির তথ্য অনুসারে, আরও কয়েকটি প্রকল্প আসছে। ঘোড়াশালের ৪০৯ মেগাওয়াট রিপাওয়ারিং ইউনিট-৪ ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে চালু হওয়ার কথা; এর জন্য ২৭৫ এমএমসিএফডি গ্যাস লাগবে। ১৫৬ মেগাওয়াটের ইউনিট-৩ ২০২৬ সালের জুনে উৎপাদনে আসার কথা; এর জন্য ১০০ এমএমসিএফডি গ্যাস লাগবে। দুটোই প্রায় শেষ হওয়ার পথে।
নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ৮০০ মেগাওয়াটের রূপসা এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০২৭ সালের জানুয়ারিতে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৯ সালে এর চুক্তি স্বাক্ষর হয়, এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজে অগ্রগতি প্রায় ৭৫ শতাংশ।
আরেকটি এলএনজিভিত্তিক কেন্দ্র হলো চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ইউনাইটেড-চট্টগ্রাম পাওয়ারের ৫৯০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড-সাইকেল প্রকল্প। ২০২৭ সালের জানুয়ারিতে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে কেন্দ্রটির। ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর এ কেন্দ্রের চুক্তি স্বাক্ষর হয়; নির্মাণকাজে অগ্রগতি ৬৬ শতাংশ।
রূপসা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, 'কেন্দ্রটি যাতে শুধু অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য গ্যাস পায় এবং কারিগরিভাবে চালু থাকে, সেজন্য আমরা একে সিওডি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তা না হলে কেন্দ্রটি অকার্যকর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।'
বিদ্যমান কেন্দ্রগুলোর অবস্থা
বাংলাদেশে মোট ১১ হাজার ৫০৪ মেগাওয়াট সক্ষমতার ৫১টি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এগুলোর জন্য ২,৪২০ এমএমসিএফডি গ্যাসের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ করা হয় মাত্র ৮৫০-১,০৫০ এমএমসিএফডি। দেশের মোট ২৬ হাজার ৯৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৪৩ শতাংশই গ্যাসভিত্তিক।
এই ৫১টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ৩২টি চালু রয়েছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অধীন ২১টি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট গ্যাসের চাহিদা ৯৯৬ এমএমসিএফডি, কিন্তু গড় সরবরাহ মাত্র ৩০০-৩২০ এমএমসিএফডি।
এগুলোর মধ্যে ৩,৩০৬ মেগাওয়াট সক্ষমতার ১৩টি কেন্দ্র গ্যাসের অভাবে পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে, আর কোনোটিই পূর্ণ সক্ষমতায় চলছে না।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিডিসিএল) অধীন ১৫টি গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের মোট ক্ষমতা ২,৭৫৫ মেগাওয়াট। এগুলোর জন্য ৪২৩.৯ এমএমসিএফডি গ্যাসের প্রয়োজন হলেও সরবরাহ করা হয় মাত্র ১৮৯.৮ এমএমসিএফডি।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) অবস্থা আরও খারাপ। প্রতিষ্ঠানটির অধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চাহিদা ১৮৫ এমএমসিএফডি, সরবরাহ মাত্র ৪৫.৩ এমএমসিএফডি।
জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের (জেজিটিডিএসএল) অধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর অবস্থা কিছুটা ভালো। সেখানে ৩৯৫ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে ২৬৯ এমএমসিএফডি সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির অধীন ৬৫২ মেগাওয়াট ক্ষমতার আটটি কেন্দ্র কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
গ্যাস সংকটের কারণে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিএল) অধীন মোট ২২২ মেগাওয়াট সক্ষমতার চারটি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (এসজিসিএল) ১৭৪ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মাত্র ৯৮.৯ এমএমসিএফডি।
পেট্রোবাংলার হিসাবের চেয়ে চাহিদা বেশি
পেট্রোবাংলার তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার দেশে গ্যাসের চাহিদা ছিল প্রায় ৩,৮০০ এমএমসিএফডি, যদিও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই এই সংখ্যাটিকে অবাস্তব বলে উল্লেখ করেন। গড়ে পেট্রোবাংলা ২,৫০০-২,৬০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করে, যা মাঝে মাঝে ২,৮০০-২,৯০০ এমএমসিএফডিতে পৌঁছায়।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন সম্প্রতি এক পলিসি ডায়ালগে টিবিএসকে বলেন, 'গ্যাসের চাহিদা নিয়ে পেট্রোবাংলার দাবি অযৌক্তিক। প্রকৃত চাহিদা ৪,৫০০ এমএমসিএফডির বেশি। প্রত্যাশিত চাহিদা মেটাতে না পেরে পেট্রোবাংলা চাহিদা কম দেখায়।'
জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়ে বলেন, দেশে গ্যাসের প্রকৃত চাহিদা ৫,০০০ এমএমসিএফডি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরের ওপর গ্যাস সংকটের প্রভাব
চলমান গ্যাস সংকটের কারণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কম প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলতে বাধ্য হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো গড়ে ৩২ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলেছিল, তাতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয় ৬.৩০ টাকা।
প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র তার সর্বোচ্চ সম্ভাব্য উৎপাদনের তুলনায় প্রকৃতপক্ষে কতটা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, তার পরিমাপ।
বিপিডিবির তথ্য বলছে, প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর বেশি হলে উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে আসে। যেমন, ৩৮৩ মেগাওয়াটের বিবিয়ানা (দক্ষিণ) কেন্দ্রটি ২০২৪ অর্থবছরে ৭২ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলে; এতে সেখানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ আসে ৩.৬৮ টাকা। একইভাবে ৪০০ মেগাওয়াটের বিবিয়ানা-৩ কেন্দ্রটি ৭৮ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলে, এতে সেখানে খরচ আসে ৩.৪৯ টাকা।
বিপরীতে কম কার্যক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রগুলোর খরচ বাড়ছে। ১৭১ মেগাওয়াটের বাঘাবাড়ী কেন্দ্রটি মাত্র ২ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৪৩.৩৬ টাকা। আর ১৬৩ মেগাওয়াটের চাঁদপুর সিসিপি কেন্দ্রটি ৫ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলায় এ খরচ হয়েছে ২০.০৪ টাকা। ১০৫ মেগাওয়াটের টঙ্গী কেন্দ্রটি শূন্য প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলায় খরচ হয়েছে ১,৩৪৫.৩১ টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছরে গড় প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর ছিল ৩৫ শতাংশ ও ইউনিটপ্রতি উৎপাদন খরচ ছিল ৫.১৩ টাকা। এ থেকেই দেখা যেয়ে, ব্যবহার বেশি হলে খরচ কমে আসে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ বলেন, 'বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার জন্য কেন্দ্রগুলোর পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ ও সঞ্চালন অবকাঠামো থাকতে হবে। আমরা এই পর্যায়ে সব কেন্দ্রের জন্য গ্যাস নিশ্চিত করতে পারছি না।'
এরপর কী?
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা পেট্রোবাংলার আছে কি না, জানতে চাইলে পরিচালক (অর্থ) এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, 'আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বাড়াব না। আমাদের অগ্রাধিকার হলো শিল্প এবং সার উৎপাদনে বেশি গ্যাস সরবরাহ করা।'
তিনি আরও বলেন, 'বিপিডিবিকে এখন বরাদ্দকৃত গ্যাস রেশনিং করতে হবে। কম দক্ষ কেন্দ্রের চেয়ে বেশি জ্বালানি-সাশ্রয়ী কেন্দ্রগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে তাদের। যেসব কেন্দ্র বেশি গ্যাস ব্যবহার করে কিন্তু কম উৎপাদন করে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।'
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তার জন্য পেট্রোবাংলা কেন আরও গ্যাস আমদানি করছে না, এ বিষয়ে মিজানুর রহমান বলেন, 'আমাদের অর্থায়ন ও রিগ্যাসিফিকেশন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এফএসআরইউ গড়ে ৮৫ শতাংশ সক্ষমতায় চলতে পারে। রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য এটি সারাবছর ১০০ শতাংশ সক্ষমতায় চালু রাখা সম্ভব নয়।'