জটের মধ্যেও ইতালিতে বাংলাদেশিদের জন্য মৌসুমি কাজের ভিসা প্রক্রিয়া ফের শুরু

ইতালি সরকার 'ফ্লুসি ডিক্রি' কর্মসূচির মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে মৌসুমি ও অ-মৌসুমি খাতে কর্মী নিয়োগ করে থাকে। দীর্ঘ ৮ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশ পুনরায় এ কর্মসূচির আওতায় আসায় বাংলাদেশিদের জন্য ইতালিতে মৌসুমি কাজে অংশ নেওয়ার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সম্প্রতি ঢাকাস্থ ইতালীয় দূতাবাসে বৃদ্ধি পেয়েছে ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা।
২০২৪ সালে ইতালি 'ল ডিক্রি নং ১৪৫' জারি করে; এর আওতায় ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবরের আগে ইস্যুকৃত সকল ওয়ার্ক পারমিট স্থগিত করা হয়। নতুন এই আইনের বিধান অনুযায়ী, কেবল প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষেই ঢাকাস্থ ইতালীয় দূতাবাস ভিসা অনুমোদন বা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
ফলে স্থানীয় ইতালীয় দূতাবাস মুলতবি ভিসা অনুমোদনের জন্য প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, যা সময়সাপেক্ষ। তবুও তারা ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার মুলতবি আবেদনের মধ্যে ৮ হাজারেরও বেশি নিষ্পত্তি করেছে। এছাড়া, আরও প্রায় ২০ হাজার সম্ভাব্য আবেদনকারীর ওয়ার্ক পারমিট ও সংশ্লিষ্ট ভিসা প্রক্রিয়াকরণের যাচাই-বাছাই শিগগিরই শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
নুল ওস্তা তথা ওয়ার্ক পারমিটগুলোর জট দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়টি দুই দেশই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ বছরের মে মাসের প্রথম দিকে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফরসহ ইতালীয় রাষ্ট্রদূত ও সফররত ইতালীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সব বৈঠকেই বিষয়টি জোরালোভাবে উত্থাপন করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমীমাংসিত ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে ইতালি সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
গত ৬ মে বাংলাদেশ ও ইতালি অভিবাসন সহযোগিতা বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে। স্থগিতাদেশ কেবল ২২ অক্টোবর ২০২৪-এর আগে ইস্যুকৃত অনুমতিপত্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়ায়, এর পর আবেদন করা শত শত প্রার্থী ইতোমধ্যেই ভিসা পেয়েছেন, এবং আরও অনেকের ভিসা শিগগিরই পাওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও রোম মিশন ইতালির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে ইতালির দূতাবাস জনবলও বৃদ্ধি করেছে।
তবে এক বা একাধিক অসাধু চক্রের মাধ্যমে জাল ওয়ার্ক পারমিট ও নকল নথিপত্র জমা পড়ায় আবেদনগুলোর যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগছে। ইতোমধ্যে ইতালিতে এ সংক্রান্ত একাধিক ফৌজদারি তদন্ত চলমান রয়েছে।
ইতালির দূতাবাস স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, ভিসা প্রক্রিয়ায় কেবল সরকারিভাবে নির্ধারিত ফি-ই প্রযোজ্য। দালালকে অর্থ প্রদান করলে ভিসা বাতিল ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঝুঁকি থাকে, পাশাপাশি প্রকৃত আবেদনকারীদের জন্য প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।
বৈধ নুলা ওস্তা থাকা আবেদনকারীদের ধৈর্য ধরতে এবং গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দূতাবাস।