শুল্কে সুবিধা পেতে বাড়তি দামে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২.২০ লাখ টন গম কিনছে সরকার

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর দর কষাকষিতে সুবিধা পেতে কিছুটা বেশি দামে এ গম কেনা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আজ বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ গমে প্রোটিনের হার কিছুটা বেশি। দামও কিছুটা বেশি পড়বে। তবে তিন উদ্দেশ্যে এ গম কেনা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- শুল্ক ইস্যুতে দেশটির সঙ্গে দর কষাকষিতে সহায়তা পাওয়া। একই সঙ্গে গম আমদানির উৎস বাড়ানো।
বৈঠকে উপস্থাপিত খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় বলা হয়, সরকার থেকে সরকার (জি-টু-জি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব গম কেনা হবে। প্রতি মেট্রিক টন গম কিনতে ব্যয় হবে ৩০২.৭৫ মার্কিন ডলার। সে হিসাবে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম কিনতে ব্যয় হবে ৮১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। প্রতি কেজি গমের দাম পড়বে ৩৭ টাকা ২০ পয়সা।
বৈঠকের আগে মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছিলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ কমাতে সরকার দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের উদ্যোগ নিয়েছে। এই গম আমদানির সিদ্ধান্ত তারই অংশ।'
এর আগে, গত ২০ জুলাই খাদ্য মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের গম রপ্তানিকারক সংগঠন ইউএস উইট অ্যাসোসিয়েশনসের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। এতে বলা হয়, আগামী পাঁচ বছর সরকার প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিযোগিতামূলক দরে ৭ লাখ টন গম আমদানি করবে।
সূত্র জানায়, গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারি বা বেসরকারি কোনো পর্যায়েই গম আমদানি হয়নি। গত ২২ বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২২ লাখ টনের কিছু বেশি গম আমদানি হয়েছে, যার মধ্যে বেসরকারি খাতে এসেছে ১৭ লাখ টনের বেশি।
সবচেয়ে বেশি গম আমদানি করা হয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে, যার পরিমাণ ছিল সাড়ে ৪ লাখ টন। ওই সময় সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, নাবিল গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আমদানিতে অংশ নেয়।
সরকারি পর্যায়ে সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি হয়েছিল ২০১৭ সালে।