‘আমার ছেলের পুরো শরীরই পুড়ে গেছে’: বার্ন ইনস্টিটিউটে স্বজনের আহাজারি

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে বিস্ফোরণের পর দগ্ধ স্কুলশিক্ষার্থীদের একের পর এক অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে (এনআইবিপিএস) আনা হচ্ছে।
রবিবার (২১ জুলাই) বিকেল থেকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি ইউনিটের সামনে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের ভিড় বাড়ছে।
ঘটনাস্থল থেকে আমাদের প্রতিবেদক জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি দগ্ধকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই স্কুলশিক্ষার্থী। অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
আহাজারি করতে করতে ১১ বছরের শিক্ষার্থী আরিয়ানের মা আখি বলেন, 'আমার ছেলের পুরো শরীরটাই পুড়ে গেছে। কয়েকদিন ধরে অসুস্থ থাকায় আমি তাকে স্কুলে যেতে দিইনি। কিন্তু আজ সে গেল। তার মাথার চুল পর্যন্ত পুড়ে গেছে।'
আরেক অভিভাবক নাসিমা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, 'হে আল্লাহ, আমার ছেলেকে বাঁচাও।' তার ১৫ বছরের ছেলে নাবিল মাইলস্টোন কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
তিনি বলেন, 'স্কুল শেষে মাঠে খেলছিল তারা, তখনই বিস্ফোরণ হয়। প্রথমে তাকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আমি একবারই তাকে দেখতে পেরেছি, পুরো শরীরটাই পুড়ে গেছে।'
মাইলস্টোন কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিফ হোসেনের মুখ ও পিঠ পুড়ে গেছে। তার মামা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, 'মুখ আর পিঠে মারাত্মক পুড়েছে, তবে এখনো কথা বলতে পারছে।' আফিফকেও প্রথমে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধদের রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে—জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং উত্তরার একাধিক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হচ্ছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সাইদুর রহমান উপস্থিত হয়েছেন।
এর আগে দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের পর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়ে বিস্ফোরণের মাধ্যমে আগুন ধরে যায়। এতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।