যাত্রাবাড়ীতে দুই পৃথক হত্যা মামলায় আরও ৮ দিনের রিমান্ডে সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় রাসেল বকাউল ও রিটন উদ্দিন হত্যার অভিযোগে পৃথক দুই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে ফের ৮ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড শুনানিতে আদালতকে তিনি বলেন, অসত্যর একটা সীমা আছে। সেটা লঙ্ঘন হলে আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবেন।
বুধবার (১৬ জুলাই) শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন সকালে তাকে কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। সোয়া ১০টার দিকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট ও হাতকড়া পরানো অবস্থায় এজলাসে ওঠানো হয় তাকে। মামলাগুলোর তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো শাহানুজ্জামান ও সারোয়ার জাহান পৃথক দুই মামলায় পাঁচ দিন করে দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানিতে ফারজানা বলেন, 'আমার মক্কেল সরকারি চাকরিজীবী। সরকারের আদেশের বাহিরে ওনাদের যাওয়ার সুযোগ নেই। মন্ত্রণালয়ের আদেশে সকল সরকারি চাকরিজীবীদের মানতে হয়। আর ওনার হার্টের রিং পরানো। শারীরিক ভাবে অসুস্থ। এর আগেও ওনাকে কয়েক দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আসামির রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন চাচ্ছি।'
কাঠগড়ায় দাঁড়নো অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম বিচারকের কাছে কথা বলার অনুমতি চান।
বিচারক অনুমতি দিলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অসত্যের সীমা একটা আছে। আল্লাহ সহ্য করবেন না। সীমা লঙ্ঘন হলে আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবেন। আমাকে নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। আমি গত ৫ আগস্ট অফিস করিনি। অথচ ২৭ জুলাইয়ের ঘটনা ৫ আগস্ট দেখানো হচ্ছে।
রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রাসেল বকাউল হত্যা মামলায় পাঁচ ও রিটন উদ্দিন হত্যায় তিন দিন মোটা আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০২৪ সালের ১ অক্টোবর সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ওইদিন তার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার একটি আদালত। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।
রাসেল হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনের সড়কে আন্দোলনে অংশ নেন ভুক্তভোগী রাসেল বকাউল (২২)। এসময় পুলিশের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৮ আগস্ট নিহতের বড়ভাই হাসনাত বাকাউল বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
রিটন হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন রিটন উদ্দিন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।