জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে খসড়া প্রস্তাবনা দিয়েছে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের অনুরোধে সরকার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা গ্রহণ করেছে এবং এ বিষয়ে বিএনপি সরকারের কাছে লিখিত প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার থেকে বিএনপিকে জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি দলীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, আলোচনার মাধ্যমে পর্যালোচনা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত রাতেই নতুন করে একটি খসড়া বা ড্রাফট পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা ইতোপূর্বে একটি প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি একটি খসড়া দুইজন উপদেষ্টার কাছে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ফিডব্যাক পায়নি। গত কয়েকদিন আগে একজন উপদেষ্টা আমাদের মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা করে একটা প্রস্তাবনা দিয়েছে। সেটি পাওয়ার একদিনের মধ্যেই মিটিং করে এডিট করে, ড্রাফট করে সরকারের নিকট পাঠিয়েছি। এবিষয়ে গোপনীয় রক্ষা করা উচিত হবে।'
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের একাদশ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান তিনি।
জুলাই ঘোষণাপত্র সংবিধানে যুক্ত করার বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটুকু বলবো স্বাধীনতা পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সময়েও ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ৭২ এর সংবিধানে যুক্ত হয়নি। কারণ ঘোষণাপত্র একটি ঐতিহাসিক দলিল, লিটারেচার যার রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। সংবিধান লিটারেচার নয়। সাধারণত ঘোষণাপত্র সংবিধানে যুক্ত করা হয় না।
বিএনপি গণঅভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে চায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, 'আমরা গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এর মর্যাদা, মহিমা ও গুরুত্ব ধারণ করি। আমরা এটাকে স্বীকৃতি দিই, সারা জাতি স্বীকৃতি দেয়। আমরা এটাকে যথাযথ মর্যাদায়, যথাযথ স্থানে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে চাই।'
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুই জন বিচারপতির মধ্যে থেকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়াই প্রধান বিচারপতি নিয়োগের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু এনিয়ে এখনো চূড়ান্ত ঐক্যমত হয়নি বলেও জানান তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে বাইরে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিষয়ে সবাই একমত। এজন্য অনেকগুলো বিকল্প খুঁজতে হবে। আমার মতামত হলো সর্বশেষ রাষ্ট্রপতিকে রাখার বিধানটা, তবে আমরাও খুশি হব যদি এর বিকল্প পাওয়া যায়। কারণ এর আগে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। এর বাইরে উচ্চকক্ষ থেকেও কোন ব্যবস্থা করা যায় কিনা। তার আগে আমরা বলেছি উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।
'জরুরি অবস্থা' নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বলেছি জরুরি অবস্থার ঘোষণার জন্য যুদ্ধ পরিস্থিতির বাইরে 'অভ্যন্তরীণ গোলযোগ' শব্দ দুটি বাদ দেওয়া যেতে পারে। কারণ এর মাধ্যমে ইতোপূর্বে জরুরি অবস্থা রাজনৈতিকভাবে অপব্যবহার হয়েছে। আমরা এর সাথে সাংবিধানিক সংকটস, জাতীয় অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব এবং ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ যোগ করার কথা বলেছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা জরুরি অবস্থার মধ্যেও 'রাইট টু লাইফ' ও 'ডিগনিটির' কথা বলেছি। তবে কেউ কেউ বিচারপ্রাপ্তির কথা বলেছে। সে বিষয়ে আমাদের ভিন্নমত আছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই আলোচনা শেষ করা হবে।