ফ্যাসিবাদ রুখতে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনই সর্বোত্তম: চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনই সর্বোত্তম। এ পদ্ধতির পক্ষে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, 'পিআর পদ্ধতিতে দলগুলো প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদীয় আসন পায়। এতে কোনো দল এককভাবে ক্ষমতা দখল করতে পারে না, ছোট দলগুলোরও সংসদে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় পারস্পরিক আলোচনা, আপস ও যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিবেশ তৈরি হয়। এতে একনায়কতান্ত্রিক প্রবণতা প্রতিহত করা সম্ভব।'
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট নগরের দরগাহ গেইট এলাকার কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ সুলেমান হলে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ সিলেট জেলার সভাপতি হযরত মাওলানা রেদওয়ানুল হক চৌধুরী রাজু।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, 'পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ সম্ভব হয়। এতে বড় দলগুলোর একচ্ছত্র আধিপত্য হ্রাস পায়, ছোট দলগুলোর অংশগ্রহণ বাড়ে। রাজনৈতিক বৈচিত্র্যকে সম্মান জানাতে ও আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াকে অধিকতর প্রতিনিধিত্বমূলক এবং জবাবদিহিমূলক করতে এই পদ্ধতিই শ্রেষ্ঠ।'
মুসলমানদের অনৈক্যের কারণে মুসলিম বিশ্ব আজ দিশেহারা মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের মুসলমানরাও আজ বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে বাস করছে। সমাজে, রাষ্ট্রে—সব জায়গায় ইসলাম ও ইসলামপ্রিয় জনগণকে কোণঠাসা করার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। ওলামায়ে কেরামের দায়িত্ব অনেক। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দায়িত্ব পালন করলে জালিম শক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।'
তিনি বলেন, 'উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরাম অতীতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জালিমের বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের ছোটখাটো পার্থক্য যেন বিভেদের কারণ না হয়। না হলে মুসলিম সমাজ আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।'
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর হাফিজ মাওলানা শায়খ মজদুদ্দীন আহমদ, শায়খ মাওলানা নুরুল ইসলাম, জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি রেজাউল করিম আবরার, জামেয়া গলমুকাপন মাদ্রাসার শাইখুল হাদিস শায়খ মাওলানা রুহুল আমিন, পরিষদের সিলেট বিভাগীয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুফতি মাঈনুদ্দীন খান তানভীর, জামেয়া কাজিরবাজার মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ, লামারগ্রাম মাদ্রাসা জকিগঞ্জের মুহাদ্দিস মাওলানা মুফতি আবুল হাসান, পরিষদের সিলেট মহানগর সভাপতি আসআদ উদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিলেট মহানগরীর সভাপতি মাওলানা গাজী রহমতুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুফতি সাইদ আহমদ, মহানগর সভাপতি ডা. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, শিক্ষা সচিব মাওলানা মাশুক আহমদ সালামী এবং খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুতাছিম বিল্লাহ জালালী প্রমুখ।