বিজয় সরণিতে শেখ মুজিবের ভাস্কর্যের স্থানে নির্মিত হবে জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিস্তম্ভ

রাজধানীর বিজয় সরণিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে নতুন ভাস্কর্য, গণমিনার ও উন্মুক্ত স্থান নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
এর মধ্যে 'মৃত্যুঞ্জয়' ভাস্কর্যের স্থানেও নতুন স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হবে। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় এই ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়।
ডিএনসিসি জানায়, বিজয় সরণি মোড় থেকে জিয়া উদ্যানের বিমান চত্বর পর্যন্ত খালি জায়গায় গণমিনার ও উন্মুক্ত স্থান তৈরির নকশা ও পরিকল্পনা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। 'মৃত্যুঞ্জয়' ভাস্কর্যের স্থানে কী ধরনের স্মৃতি স্থাপন হবে তা নিয়ে পরিকল্পনা চললেও নকশা তৈরির কাজ এখনো প্রক্রিয়াধীন।
আধা কিলোমিটারেরও বেশি এলাকাজুড়ে এই প্রকল্পে গণমিনার ও উন্মুক্ত স্থান নির্মাণে প্রায় ১০ কোটি টাকা এবং ভাস্কর্য নির্মাণে আরও ৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। শুক্রবার এই কাজের অংশ হিসেবে ডিএনসিসি 'মৃত্যুঞ্জয়' ভাস্কর্যের অবশিষ্ট সাতটি দেওয়াল ভেঙে ফেলে।
শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, স্থাপনাগুলোর উপরের অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং বিজয় সরণি থেকে জিয়া উদ্যান মোড় পর্যন্ত সড়কের মাঝখানের অংশে এসএস রেলিং স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
ডিএনসিসির সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল সার্কেল) ফারুক হাসান মো. আল মাসুদ বলেন, "বিজয় সরণি ও বীর উত্তম মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান রোডের মধ্যবর্তী সবুজ চত্বরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণে গণমিনার নির্মিত হবে। সেখানে আন্দোলনের বিভিন্ন পরিক্রমা, নিহত ও আহতদের স্মরণে চিত্র ও উপস্থাপন থাকবে। একইসঙ্গে সেখানে গণপরিসর তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।"
তিনি আরও জানান, "শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যসহ সাতটি দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঐ স্থানে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ভাস্কর্য এবং ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি-স্মারক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।"
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, করপোরেশনের বোর্ড সভায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে এবং প্রকৌশল বিভাগ নকশা প্রণয়নে কাজ করছে। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এই ভাস্কর্য ও গণমিনার নির্মাণ করা হবে।
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ আজাজ বলেন, "বিজয় সরণির এ অংশ বহুদিন পরিত্যক্ত ছিল। এখন সেই স্থান পরিষ্কার করা হচ্ছে। সেখানে একটি নতুন ভাস্কর্য নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি চিত্রিত করা হবে। পাশাপাশি একটি পাবলিক স্পেস তৈরি করা হবে, যেখানে নগরবাসী আসবে, সময় কাটাবে ও ইতিহাস জানবে।"
তবে পুরো পরিকল্পনা ও নকশা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।