সুষ্ঠু নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে নির্দেশ উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিনের

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আজ (২৮ জুন) চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, 'আমাদের প্রধান কাজ একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা। মন্ত্রণালয়গুলোতে যেসব সংস্কার চলছে, তা গুরুত্বপূর্ণ হলেও এগুলো আসলে আমাদের সময় ও সুযোগের বাইপ্রোডাক্ট। এখন মূল মনোযোগ হওয়া উচিত নির্বাচনের প্রস্তুতির দিকে।'
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিকেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় তিনি বলেন, 'আমরা এখানে অল্প সময়ের জন্য এসেছি। তবে আমরা কিছু ইতিবাচক ধারা শুরু করার চেষ্টা করেছি।'
'সুশাসন একদিনে আসে না, কিন্তু আমরা যেন পুরনো চর্চায় না ফিরি, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগোতে হবে।'
নির্বাচনের আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, 'অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এখনই অভিযান শুরু করা জরুরি। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অপরিহার্য। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি ও সশস্ত্র ক্যাডার আছে, যারা সহজে অস্ত্র জমা দেবে না। তবুও অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। নির্বাচনের সময়ে বৈধ অস্ত্রও জমা রাখতে হবে।'
সভায় দেশের প্রথম পানির নিচের টানেল কর্ণফুলী নদীর টানেল প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এটি 'শো-পিস' প্রকল্পে পরিণত হয়েছে। তিনি মন্তব্য করেন, 'এমন প্রকল্পের দরকার যেগুলোর বাস্তব ব্যবহারিক উপযোগিতা আছে, শুধু প্রতীকী মূল্য থাকলেই চলবে না। মানুষ বারবার শুধু টানেল দেখতে আসবে না। এটা কোনো দৃশ্যমান আকর্ষণ নয়।'
সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহেদ হোসেন এ সময় টানেলের বিকল্প সড়ক প্রশস্ত করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, যানবাহন চলাচল কম হওয়ায় টানেল ব্যবহার কম হচ্ছে।
উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন এর বিপরীতে সরাসরি মন্তব্য করেন, 'এই টানেল এখন সাদা হাতির প্রকল্প। নির্মাণের পর এর প্রভাব নিয়ে ভাবা হচ্ছে কেন? পরিকল্পনা আগে হওয়া উচিত ছিল। এখন এটি লোকসানে চলছে।'
'এছাড়াও আনোয়ারা প্রান্তে পাঁচতারকা ও সাততারকা মানের রিসোর্ট নির্মাণ হয়েছে। বিপুল বিনিয়োগ করা হয়েছে, এগুলো রক্ষণাবেক্ষণেও অনেক খরচ। কিন্তু এত দূরবর্তী স্থানে অবসর কাটাতে কে আসবে?'
তিনি আরও জানান, এসব রিসোর্ট বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।
'এখন কেউ আগ্রহ না দেখালেও, এগুলো হস্তান্তর করতে হবে। লাভ না হলেও অন্তত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এগুলো সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে,' বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজিত এ সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বক্তব্য দেন। সভায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।