শাবিপ্রবি ছাত্রী ধর্ষণ: গ্রেপ্তার দুইজনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগে দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুইজনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে ভুক্তভোগী ছাত্রী সিলেটের কতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলায় শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাস পার্থ নামের দুই শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর হক।
আদনান ও পার্থকে বৃহস্পতিবার রাতেই আটক করে পুলিশ। পরে মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা দুজনেই শাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শান্ত তারা আদনান নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমানের অনুসারী ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড দল 'নোঙর'-এর সদস্যও ছিলেন।
অন্যদিকে, স্বাগত দাস পার্থ গত বছরের জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন বলে দাবি করেছেন একাধিক শিক্ষার্থী। তার ফেসবুক প্রোফাইলে আন্দোলনের সমর্থনে ছবি রয়েছে। তবে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, পার্থ ছাত্রলীগের কর্মী হলেও খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যসংগঠন 'দৃক থিয়েটার'-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা-বডি এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২ মে সন্ধ্যায় সহপাঠী আদনান ও পার্থর সঙ্গে কনসার্টে যাওয়ার কথা ছিল ওই ছাত্রীর। তবে কনসার্টে যাওয়ার আগে তারা তাকে সুরমা এলাকার একটি মেসে নিয়ে যান। সেখানে ওই ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণ করা হয়। এ সময় তার নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়, যা পরে দেখিয়ে তাকে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করা হতো। ঘটনাটি জানাজানি হলে ভিডিও ও ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ আদনান ও পার্থকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। আলোচনা শেষে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলে আমরা ঘটনার সত্যতা পাই। অভিযুক্তরা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছে এবং মামলার আইনি প্রক্রিয়া চলমান।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, 'প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।'