আদালতে বসার জন্য টুল চেয়েও পেলেন না নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আবু বকর রিফাত নামে এক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শুনানিকালে অসুস্থতার কথা জানিয়ে বসার জন্য টুল চেয়ে পাননি তিনি।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের আদালত পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইউম হোসেন নয়ন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গত ২৬ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক জুয়েল রানা তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আদালত তার উপস্থিতিতে শুনানির জন্য এদিন বুধবার ধার্য করেন।
আজ সকাল ১০টার দিকে কারাগারে থেকে এনে নজরুলকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সকাল ১১টার দিকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট, দুই হাতে হাতকড়া পড়িয়ে সিএমএম আদালতের দ্বিতীয় তলার কোর্টে ওঠানো হয়। কাঠগড়ায় ওঠানোর সময় তার মাথা থেকে হেলমেট ও শরীর থেকে জ্যাকেট খোলা হয়। কাঠগড়ার মাঝামাঝি অংশে দাঁড়িয়ে কোমড়ে বাম হাত দেন তিনি। এসময় তার আইনজীবী টুল লাগবে কি-না জানতে চান। জবাবে তিনি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়েন। তার আইনজীবী পুলিশের কাছে টুল চান।
তখন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য বলেন, 'আদালতের কাছে চাইবেন।' এর এক মিনিট পর বিচারক আসেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী টুল চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন করেন। তখন বিচারক শুনানির দিকে মনোনিবেশ করেন। তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, 'তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এই মামলাগুলোর সঙ্গে ওনার সংশ্লিষ্টতা নেই। তদন্ত কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্টতার কোনো ডকুমেন্টসও জমা দিতে পারেনি। গ্রেপ্তার দেখানো হলে ন্যায় বিচার বঞ্চিত হবেন।'
তবে, শুনানি শেষে আদালত তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখান।
শুনানিকালে পুরোটা সময় নজরুল ইসলামের চেহারায় হতাশা ও বিষণ্নতার ছাপ দেখা যায়। এরপর আবারও তাকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ুম হোসেন নয়ন বলেন, 'গ্রেপ্তার শুনানি খুবই স্বল্প সময় হয়। এই অল্প সময়ের জন্য আদালত হয়তো টুল দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেননি।'
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনে চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনে অংশ নেন ভিকটিম আবু বকর রিফাত। ওই দিন দুপুরে গুলিবিদ্ধ হলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। এই ঘটনায় এ বছরের ২৮ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা আওলাদ হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে নাসা গ্রুপের নজরুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছে।
