জুলাই অভ্যুত্থানের শুরু বেকার সমস্যা থেকে, কিন্তু বাজেটে এর সমাধানে উদ্যোগ নেই: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল বেকার সমস্যা থেকে। ফলে তরুণদের ব্যাপকভাবে প্রত্যাশা ছিল যে বাজেটে বেকার সমস্যা সমাধান এবং কর্মসংস্থানের জন্য উদ্যোগ থাকবে। কিন্তু বাজেটে আমরা সেটা দেখতে পাইনি।'
আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, 'গত এক বছরে ২৬ লাখ বেকার বেড়েছে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য যে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল, সেই ধরনের নীতি গ্রহণ করা হয়নি। বরং ব্যাংকের ওপর যে নির্ভরশীলতা সেটা আগের আমলের মতো সেই ধারাবাহিকতা রয়েছে। ফলে এই বাজেট থেকে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে বা বেকার সমস্যা নিরসন হবে, তা আমরা মনে করছি না।'
তিনি বলেন, 'শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান প্রযু্ক্তি খাতেও বাজেট বরাদ্দে নতুনত্ব নেই।'
এনসিপির এই নেতা বলেন, 'বর্তমান সময়ের যেসব অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে, সেগুলো তারা অ্যাড্রেস করতে পেরেছে। তবে আমরা যে বৈষম্যহীন সমাজের ভিশনের কথা বলছি, এ বাজেটে সেটা আসেনি।'
বাজেট বাস্তবভিত্তিক হলেও নতুন বন্দোবস্তের যে আকাঙ্ক্ষা, অর্থনৈতিক রূপান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটার পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি বলেও উল্লেখ করেন নাহিদ।
তিনি বলেন, 'যেহেতু আগের যে অর্থনৈতিক কাঠামো, যে লুটপাটের অর্থনীতি ও ঋণগ্রস্ত অবস্থা ছিল, সেই অর্থনৈতিক বাস্তবতায় সরকারকে পরিচালিত হতে হচ্ছে এবং বাজেট প্রণয়ন করতে হয়েছে, তাই সেই আগের অর্থনৈতিক কাঠামোর অনেক ছাপ বাজেটের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।'
প্রবাসী শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, 'আমরা চেয়েছিলাম প্রবাসী শ্রমিকদের ব্যাপারে সরকারের নজর থাকবে এই বাজেটে। তাদের থেকে আমরা যে রেমিট্যান্স পাই, তা দেশের ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু আমরা দেখেছি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়টির বাজেট অর্ধেক করা হয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি এখানের বাজেট কমানো উচিত না।
তিনি আরও বলেন, 'ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য প্রণোদনা থাকবে, এটা আমাদের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু তারা লাভবান হবে সেটা আমরা দেখছি না এই বাজেটে। ই-কমার্স বা ডিজিটাল ট্রানজেকশনের ক্ষেত্রে ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা ডিজিটাল ইকোনমির ক্ষেত্রে একটা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে।'
'প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত হয়নি। সরকার পরিবর্তনের পর এই প্রণোদনা দিয়েও কালো টাকা সাদা করার যে খুব সম্ভব হবে, সেটাও না। তাই কালো টাকাকে সাদা করার সুযোগটা বন্ধ করা উচিত', যোগ করেন নাহিদ।