চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আজও সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ, ২ উপদেষ্টার কাছে দেয়া হবে স্মারকলিপি

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে টানা দশম দিনের মতো সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছেন সরকারি কর্মচারীরা। আজ সোমবার (২ জুন) সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
সচিবালয়ের চত্বর ঘিরে বিক্ষোভকারীরা 'আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই', 'লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে', 'জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে', 'মানি না মানবো না, ফ্যাসিবাদী কালো আইন', 'ফ্যাসিবাদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান'—এমন স্লোগান দিতে থাকেন।
জানা গেছে, আজ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছে স্মারকলিপি জমা দেবেন বিক্ষোভকারীরা। এর আগে গতকাল খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।
গত ২৫ মে 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' জারি করা হয়। চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে এমন বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে।
২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদনের পর গত ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরপর সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।
২৭ মে দুপুরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদসহ কয়েকজন সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে আন্দোলনরত কর্মচারীদের দাবির বিষয়টি ২৮ মে মন্ত্রিপরিষদের সচিবকে জানাবেন সচিবরা। এরপর সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
গত বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, কর্মচারীদের 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' প্রত্যাহারের দাবি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশে ফিরলে তাকে জানাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।
ওইদিন কর্মচারী নেতারা ঘোষণা দেন, বৃহস্পতিবার থেকে সচিবালয়সহ সারাদেশে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করা হবে। তবে বৃহস্পতিবার কর্মসূচি পালনের পর বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম এ কর্মসূচি বাতিলের ঘোষণা দেন। তিনি জানান, কর্মবিরতির পরিবর্তে উপদেষ্টাদের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে।