শিল্পে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে মূল্য পরিশোধ করতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

শিল্পকারখানায় ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে মূল্য পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, জলাধার ও নদী দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং শিল্পকারখানার ব্যবহৃত পানি পুনর্ব্যবহার (রিইউজ) নিশ্চিত করতে সরকার এ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগরীর পিটিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত 'নদী ও জলাভূমি সিম্পোজিয়াম-২০২৫'–এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, "আমরা ঢাকার চারটি নদী দখল ও দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে চুক্তি করে কর্মপরিকল্পনা দেব। এগুলোর সব কাজ আমাদের মেয়াদে শেষ না হলেও তুরাগ নদী পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হবে।"
তিনি আরও বলেন, "গাছা খাল, লবণদহ, পুকুর এবং ৮ আগস্টের পর দখলে যাওয়া ও অপেক্ষাকৃত ঝামেলাবিহীন বনভূমি উদ্ধারের কাজও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শেষ করা হবে।"
বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল এবং নদীপক্ষের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক এবং বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মো. রাশেদুল করিম মুন্না।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নদী বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন।
সিম্পোজিয়ামে অংশ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বক্তারা পরিবেশ দূষণ রোধ ও অবৈধ দখল উচ্ছেদে ১৬টি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
তারা বলেন, গাজীপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, বানার, চিলাই, লবণদহ, শালদহ, গোয়ালী, তুরাগ, বংশী, বালু, গোয়াল্লার ও পারুলীসহ কয়েকটি ছোট নদ-নদী এবং বোলাই, মকশ বিলসহ স্বাদু পানির কয়েকটি জলাধার বর্তমানে দখল ও দূষণে বিপর্যস্ত।
তবুও এসব নদী ও জলাধার গাজীপুরসহ আশপাশের অঞ্চলের সমাজ ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখছে এবং ভূগর্ভস্থ পানির উৎস হিসেবেও ভূমিকা রাখছে।
বক্তারা বলেন, একসময় এই অঞ্চলের পানির স্বাদ ও গুণগত মান ছিল অনন্য। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এখন পানির গুণগত মান কমে যাচ্ছে এবং কোথাও কোথাও দ্রবণীয় অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্যের কোটায় পৌঁছে যাচ্ছে। নদী দূষণই এর মূল কারণ।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নদী ও জলাভূমি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।