কর সংস্কারে সরকারের পদক্ষেপে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সন্তুষ্ট: ফিকি

দেশে কর সংস্কারসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিভিন্ন উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধি দল।
আজ (২৯ এপ্রিল) এক সেমিনারে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি)-এর নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির এই তথ্য জানান।
'ম্যাক্রোইকোনমিক পার্সপেকটিভ অ্যান্ড ফিসকাল মেজার্স' শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, 'গত দশ মাসে ব্যাপক সংস্কার দেখা গেছে। এতে আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত বোধ করছি।'
তবে কর ব্যবস্থার জটিলতা, একাধিক ভ্যাট হার, কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত বিবেচনাধিকার, আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা এবং কর আদায়ে স্বয়ংক্রিয়তার ঘাটতির মতো কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, 'এই সময়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা প্রয়োজন… আমরা আশাবাদী, আগামী বাজেটে একটি পরিষ্কার দিকনির্দেশনা দেখা যাবে।'
তিনি আরও জানান, 'আমাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারকে মোট রাজস্বের প্রায় ৩০ শতাংশ প্রদান করে।'
সেমিনারে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, 'আগামী বাজেটে আমরা ব্যবসায় সহজতর করার লক্ষ্যে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেব। একই সঙ্গে অসাধু করদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
তিনি স্বীকার করেন, 'সৎ করদাতারা অনেক সময় নীতিগত পরিবর্তনের খেসারত দেন। আমরা ইতোমধ্যে কর কর্মকর্তাদের বিবেচনাধিকার কমিয়ে এনেছি।'
তিনি জানান, আগামী বাজেটে কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে আনা হবে।
তিনি বলেন, 'আমরা এমন একটি নীতিমালা করতে যাচ্ছি, যেখানে কর অব্যাহতি প্রদানের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে থাকবে।'
'এই নীতিমালা ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা প্রভাব খাটিয়ে কর অব্যাহতি পাওয়ার পথ বন্ধ করবে,' বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
মূল প্রবন্ধে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রেজা বলেন, 'কর কর্মকর্তাদের বিবেচনাধিকার এবং উচ্চপর্যায়ের অবাস্তব রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাই এনবিআরের সমস্যার মূল কারণ।'
তবে তিনি এনবিআরের প্রশংসা করে বলেন, 'সংস্থাটি ইতোমধ্যে প্রচলিত অডিট পদ্ধতি বন্ধ করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে, যা কর্মকর্তাদের বিবেচনাধিকার কমাতে সহায়ক।'
সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ফিকি।
অনুষ্ঠানে ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বক্তব্য রাখেন।