ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার ব্যাংক ও কাস্টমসের সামষ্টিক ব্যর্থতা: এনবিআর চেয়ারম্যান

ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে দেশ থেকে অর্থ পাচার হওয়ার ঘটনাকে ব্যাংক ও কাস্টমসের সামষ্টিক ব্যর্থতা (কালেক্টিভ ফেইলিউর) বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এর (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
শনিবার (২৬ জুলাই) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত 'কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কারের মাধ্যমেই প্রত্যাশিত রাজস্ব আহরণ সম্ভব' শীর্ষক এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'অনেক সফটওয়্যার এবং ডাটা কালেক্টিভ এজেন্সি আছে, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে কোন পণ্যের কত দাম, তা খুব সহজেই জানা সম্ভব। ব্যাংকগুলো এলসি (ঋণপত্র) খোলার সময় কত দামে এলসি খুলছে আর আন্তর্জাতিক বাজারে ওই পণ্যের দাম কত, একটু দেখে নিলেই তা জানতে পারে।
'ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও কাস্টমস বিভাগের রেগুলেশনের ফেইলিউর আছে। আন্ডার ইনভয়েসিং প্রতিরোধে এনবিআর মিনিমাম ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ করে থাকে। কিন্তু এতে সৎ করদাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হন।'
রাজস্ব বোর্ড সংস্কার প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'শুধু রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে আলাদা বিভাগ করলেই রাজস্ব আহরণ বাড়বে না। এজন্য কর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। আর শুধু সংস্কার কমিটি করলেই হবে না। সংস্কারের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা না হলে রাজস্ব আহরণে সুফল আসবে না।' পলিসি বাস্তবায়নে এনবিআরের ঘাটতি রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আবদুর রহমান খান আরও বলেন, 'এনবিআরে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা পাওয়ার কারণেই বিভিন্ন বোল্ড (সাহসী) সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।'
রাজস্ব আহরণে নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মেশিনের ব্যবহার বাড়ানোর উপর জোর দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'সম্প্রতি আমরা ডিজিটালি র্যানডম পদ্ধতিতে ১৫ হাজার ৪০০ ফাইল অডিটের জন্য বাছাই করেছি। এনবিআর এখন অটোমেশনের উপর জোর দিচ্ছে।'
'বাংলাদেশ ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো-তে অনলাইনে আবেদন করে এক ঘণ্টারও কম সময়ে প্রায় ৫ লাখের বেশি আবেদনকারী সেবা পেয়েছেন। গত বছর ১৭.১২ লাখ টিআইএনধারী অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করেছেন, এ বছর সবার জন্য অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট বাধ্যতামুলক করা হচ্ছে,' বলেন তিনি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহামেদ চৌধুরী কিরণের সঞ্চালনায় বিতর্ক অনুষ্ঠানে সংস্কারের পক্ষে সরকারি দল হিসেবে অংশ নেয় গ্রিন ইউনিভার্সিটি অভ বাংলাদেশ এবং বিপক্ষে বিরোধী দল হিসেবে অংশ নেয় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ। বিচারকদের রায়ে সরকারি দল জয়লাভ করে।