‘খাল-বিল দখল করে যারা ঘুমাচ্ছেন তাদের ঘুমানোর সময় শেষ’: ডিএনসিসি প্রশাসক

সরকারি খাল-বিল দখলকারীদের হুশিয়ার করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, 'যারা খাল-বিল দখল করে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ।'
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে মোহাম্মদপুরের হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।
অভিযানটি পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-০৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম।
অভিযানে হাইক্কার খালের সীমানায় অবৈধভাবে নির্মিত একটি দোতলা ভবন সম্পূর্ণ ও একটি তিনতলা ভবনের আংশিক অংশ ভেঙে ফেলা হয়। এছাড়াও পাঁচটি টিনশেড ঘর উচ্ছেদ করা হয়। সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে এ অভিযান।
অভিযান শুরুর আগে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, 'ধর্মীয় ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এমনকি একসময় বঙ্গবন্ধুর নামেও ক্লাব করে ঢাকা শহরের খাল, জলাধার ও পাবলিক প্লেস দখল করা হয়েছিল। যারা এখনও সরকারি খাল-বিল দখল করে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন, তাদের বলছি—ঘুম থেকে জেগে নিজেরা দখল ছাড়ুন, নাহলে আমরা এসে কোন নোটিশ না দিয়েই উচ্ছেদ করবো।'

তিনি আরও বলেন, 'অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। মাঠ, দোকান, হকার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা—সব কিছুতেই অভিযান চলছে। বাড়ি তিনতলা হোক বা দশতলা, একে একে সব ভেঙে দেওয়া হবে। আজকের অভিযানে সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তা বাহিনী ও ভারী যন্ত্রপাতি মোতায়েন রয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।'
ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, 'এই খালে (হাইক্কার) খনন করে লাউতলা খালের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হবে এবং কবরস্থানের দেয়াল ভেঙে পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা হবে, যাতে বৃষ্টির ও বন্যার পানি সরাসরি তুরাগে যেতে পারে।'
তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর হাইক্কার খাল পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পান সেখানে বালু ফেলে ভরাট করে স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। ডিএনসিসির ও দখলকারীদের সার্ভেয়ারের যৌথ জরিপে দেখা যায়, একটি দোতলা ও একটি তিনতলা ভবনসহ মসজিদের একাংশ এবং কয়েকটি টিনের ঘর খালের সীমানার মধ্যে পড়েছে। তবে ভবন মালিকরা তা নিজে থেকে না ভাঙায় আজ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
ট্রাক পার্কিং বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে প্রশাসক বলেন, 'তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে নিজে গিয়েছি। রাস্তা থেকে ট্রাক সরাতে স্থায়ী সমাধানের কাজ চলছে। আশা করি, কোরবানির ঈদের আগেই এর সমাধান হবে।'
ফুটপাত ও সড়ক দখল বিষয়ে তিনি বলেন, 'মিরপুর-১০ এবং ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড এলাকা সম্পূর্ণ হকার ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশামুক্ত করা হবে। এরই মধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। রাতেও অভিযান চালানো হবে।'
আসন্ন বর্ষায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এজাজ বলেন, 'আমাদের টিম সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সভা হয়েছে। মশা নিধনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেয়ার পরিকল্পনা আছে এবং হাসপাতালগুলোর সঙ্গে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাজ করছি।'