১১৬তম জব্বারের বলীখেলা শুক্রবার, প্রধান সড়কে বসবে না বৈশাখী মেলা

ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসর লালদীঘি মাঠে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে তিন দিনের মেলা শুরু হবে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল)। তবে এবার আন্দরকিল্লা থেকে কোর্ট বিল্ডিং পর্যন্ত প্রধান সড়কে বৈশাখী মেলার স্টল না বসানোর পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।
বলীখেলার মূল পর্বের উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ। বিজয়ী বলীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়া, বিশেষ অতিথি থাকবেন বলীখেলার পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে চসিক পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বলীখেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব, আবদুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বলীখেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও প্রধান বিচারক হাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্যসচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ, গ্রামীণফোনের চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল রিজিয়নের রিজিওনাল হেড মোহাম্মদ মোরশেদ আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল বালী প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আবদুল জব্বার সওদাগরকে নিয়ে গবেষণা, লালদীঘি চত্বরকে আবদুল জব্বার সওদাগরের নামে নামকরণ, বলী খেলা চর্চার একাডেমি প্রতিষ্ঠা, আবদুল জব্বার সওদাগরকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান ও ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধি নিয়ে শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গ্রামীণফোনের চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল রিজিয়নের রিজিওনাল হেড মোহাম্মদ মোরশেদ আহমেদ বলেন, জব্বারের বলী খেলার মতো একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় আয়োজনে অংশ হতে পেরে গ্রামীণফোন গর্বিত। এর আগেও আমরা এই আয়োজনের পৃষ্ঠপোষক ছিলাম। আমরা স্থানীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সমাজ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এমন আয়োজনের পাশে থাকতে সংকল্পবদ্ধ গ্রামীণফোন।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুবকদের শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে ১৯০৯ সালের ১২ বৈশাখ আবদুল জব্বার সওদাগর এ বলীখেলার সূচনা করেন। সেই ঐতিহ্য আজও বহন করছে চট্টগ্রামবাসী। চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের জেলা-উপজেলার মানুষের সারা বছরের গৃহস্থালীর পণ্যসামগ্রী কেনেন এই ঐতিহ্যবাহী মেলা থেকে। শুরু থেকেই বলী খেলাকে কেন্দ্র করে তিন দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়। তবে এই মেলা ৬-৭ দিনও স্থায়ী হয়। লালদীঘি মাঠকে কেন্দ্র করে চারদিকের কয়কে কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হয় মেলা। আড়াই হাজারেরও বেশি দোকান নিয়ে আসর বসে দেশের বৃহৎ এই লোকজ মেলা। গৃহস্থালী ছাড়াও বাঁশি, খেলনা, জুয়েলারি, দেশীয় খাবারের দোকানও বসে।
প্রায় ১১৫ বছর আগে শুরু হওয়া এই বলী খেলায় এই অঞ্চলের তরুণদের শারীরিকভাবে প্রস্তুত করা। সেই সূচনার পথ ধরে আজও ১২ বৈশাখ লালদীঘি মাঠে বাজে বলীদের রণহুঙ্কার, আর উৎসবে মাতে চট্টগ্রাম।