সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সচিব শহীদ খান কারাগারে

রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার উপ পরিদর্শক তৌফিক হাসান আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, 'আসামি আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান মামলার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ঘটনার সাথে জড়িত আছে মর্মে জানা যায়। মামলাটি তদন্তাধীন। এমতাবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই না হওয়ায় পর্যন্ত তাকে জেল আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
এর আগে, শাহবাগ থানার মামলায় আবু আলম শহীদ ও ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী পাঁচজনসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
এদিন বেলা ২ টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামিকে হাজির করা হয়। এরপর তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ আগস্ট "মঞ্চ ৭১" নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগনকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ২৮ আগস্ট সকাল ১০ টায় একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেগুনবাগিচাস্থ সকাল ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর মধ্যেই এক দল ব্যক্তি হট্টগোল করে স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পড়েন।
একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানস্থলের দরজা বন্ধ করে দেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে লাঞ্ছিতও করেন। হট্টগোলকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হলেও আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২৯ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন উপপরিদর্শক আমিরুল ইসলাম।
এদিকে, রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খানকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছেন পুলিশ।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, আসামি আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান মামলার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ঘটনার সাথে জড়িত আছে মর্মে জানা যায়। মামলাটি তদন্তাধীন। এমতাবস্থায় মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই না হওয়ায় পর্যন্ত তাকে জেলে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। মামলার তদন্তের স্বার্থে পরবর্তীতে ব্যাপক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিকে পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে।
আবু আলম শহীদ খান ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।