খুলনায় বাটার শো-রুমে ক্ষতি কোটি টাকার বেশি

ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ থেকে খুলনার শিববাড়ি মোড়ে বাটার শো-রুমে লুটপাটাকের ঘটনায় এক কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
ওই শো-রুমের ম্যানেজার এমডি তহিদুল ইসলাম বলেন, লুটপাটের সময়ে আমাদের প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ লাখ টাকার জুতা নিয়ে গেছে। এছাড়া ক্যাশে থাকা নগদ এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুট হয়েছে। পাশাপাশি ভাংচুরের কারণে ক্ষতি হয়েছে আরও ১০ লাখ টাকার।
সেনা কল্যাণ সংস্থা পরিচালিত খুলনার টাইগার গার্ডেন নামের আবাসিক হোটেলের নীচ তলা অবস্থিত এই বাটার শো-রুমটি। সোমবার সন্ধ্যায় একযোগে তিন শতাধিক জনতা প্রবেশ করে সেখানে লুটপাট করেন।
এমডি তহিদুল ইসলাম বলেন, কিছু জুতায় তারা আগুন দিয়েছিল। আর বেশিরভাগই লুটপাট করেছে। পাশাপাশি আমাদের অনেকজন কর্মীকে আহত করেছে।
একই ভাবে খুলনায় লুটপাট ও ভাঙচুর হয়েছে কেএফসি ও ডোমিনোস পিৎজাতেও। তবে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত প্রতিনিধিরা স্থানীয় ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে চাননি। তারা জানিয়েছে, তাদের মূল কার্যালয় থেকে প্রতিনিধি এসে এগুলো পরিদর্শন করবেন। সেখান থেকেই পরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত এই প্রতিষ্ঠানগুলো খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সাউথ জোনের মধ্যে পড়েছে। সাউথ জোনের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মো. আবু তারেক বলেন, "পুলিশ এখানে ব্যর্থ হয়েছে, হামলা ঠেকাতে পারিনি। হামলাকারীরা হঠাৎ করেই হামলা চালিয়েছে। তখন সেখানে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল না।"
বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানার সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে খুলনার শিববাড়ি মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন শুরু হয়। পরে সেখান থেকে একটি দল নগরীর ময়লাপোতার দিকে রওনা হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তারা কেএফসি ও ডোমিনোস পিৎজাতে হামলা করেন। প্রায় একই সময়ে শিববাড়ি মোড়ের বাটার শো-রুমেও লুটপাট হয়।
এর আগে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও পাড়া-মহল্লা থেকে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে এসে জমায়েত হয়। এতে হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গাজায় নিরীহ শিশু, নারী এবং সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংসতা চালানো হচ্ছে। বর্বর এই হামলায় পাথির মতো মরছে মানুষ। কিন্তু জাতিসংঘসহ বিশ্ব মোড়লরা এ নিয়ে কোনো প্রতিবাদ করছে না। আমরা এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইসরায়েলের বর্বর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এখনই সময় বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে এক হয়ে ফিলিস্তিন স্বাধীন করার।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা, 'নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার, ফিলিস্তিনে হামলা কেন, জাতিসংঘ বিচার চাই, জিহাদ জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই, ইউ হু আই হু, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন, ইসরায়েলি পণ্য বয়কট চাই, বয়কট চাই, জেগেছেরে জেগেছে, মুসলিম বিশ্ব জেগেছে, ইজরায়েলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও' ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এদিকে খুলনায় হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মো. আহসান হাবিব বলেন, ভিডিও ফুটেজ এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে বলে জানান তিনি।