চীনের বিনিয়োগ আকর্ষণে ৪,০৬৫ কোটি টাকার প্রকল্প

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের বিনিয়োগ আকর্ষণে চীনা অর্থনৈতিক ও শিল্প অঞ্চলের (সিইআইজেড) অবকাঠামো দ্রুত উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এ লক্ষ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রায় ৮০০ একর জমিতে জি-টু-জি ভিত্তিতে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে ৪,০৬৫ কোটি টাকার পুনর্গঠিত বিনিয়োগ প্রকল্প গতকাল (৬ এপ্রিল) পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
সূত্র জানায়, 'চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের সহায়ক অবকাঠামো প্রকল্প' শীর্ষক এ প্রকল্পে ২ হাজার ৪৩৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং ২ হাজার ১৪৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা চীনের দেওয়া ঋণের মাধ্যমে ব্যয় করা হবে।
বেজা ও পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে জুনের মধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে চায় বেজা। ২০২৯ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১৪ সালে। তবে বিভিন্ন জটিলতায় প্রকল্পের অগ্রগতি থমকে যায়।
গত মাসের শেষ দিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের পর এ প্রকল্পে আবার গতি আসে। তার সফরের আগেই, গত ২৫ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পুনর্গঠিত প্রকল্প পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
২০১৪ সালের জুনে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বেজার মধ্যে সিইআইজেড গঠনের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। এরপর ২০২২ সালের আগস্টে দ্বিতীয় এমওইউ অনুযায়ী জি-টু-জি ভিত্তিতে যৌথভাবে অঞ্চলটি উন্নয়নের পথ খোলে।
এই অঞ্চলে চীনের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ ও শিল্প উন্নয়নের কাজ করবে এবং বেজা ড্রেনেজ, পানি, বিদ্যুৎ, প্রাকৃতিক গ্যাস, জেটি ও সড়কসহ পৌর অবকাঠামো ও অন্যান্য সহায়ক অবকাঠামোর দায়িত্বে থাকবে।
২০১৬ সালে বেজা আনোয়ারার ৮০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে। কর্ণফুলী টানেল, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরের কাছাকাছি হওয়ায় অঞ্চলটির অবস্থান কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশাসনিক ভবন ও পানি শোধনাগার বাদ দিয়ে প্রকল্পের ব্যয় ৪,০৬৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিকল্পনায় রয়েছে ১,২৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের জেটি লিংক রোড, ২৫ মিলিয়ন লিটার ধারণক্ষমতার সেন্ট্রাল এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি), ২১২ মিটার বহুমুখী জেটি এবং ১২ কিলোমিটার বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন।