নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই আমরা প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করতে পারি: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, 'কেবল একটি নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই আমরা একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করতে পারি।'
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিদেশি মিশনগুলোর কূটনীতিকদের নিয়ে এনসিপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, এনসিপি তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করছে। তা হচ্ছে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, রাষ্ট্রের সংস্কার ও সংবিধান সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন।
তিনি দাবি করেন, 'বিদ্যমান সংবিধান মৌলিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ'। তাই এটি সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন।
নাহিদ জোর দিয়ে বলেন, এনসিপি একটি দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের স্বপ্ন দেখে। আমাদের সংস্কার এজেন্ডা উচ্চাকাঙ্ক্ষী, তবে প্রয়োজনীয়। আমাদের লক্ষ্য বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভেঙে ফেলা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে মৌলিকভাবে পুনর্গঠন করা।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আমরা জানি এই যাত্রা কঠিন হবে, তবে আমরা এটাও জানি যে বাংলাদেশ প্রস্তুত। আমাদের জনগণ কেবল পরিবর্তনই নয়, বরং একটি মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ চায়।'
সবশেষে নাহিদ ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের এনসিপির সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করার আহ্বান জানান।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমরা আশা করি, এই সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশ বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করবে।
আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে: নাহিদ
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা এনসিপির উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নাহিদ বলেছেন, 'যেকোনো উপায়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে আমরা তা প্রতিহত করব। গত ১৬ বছর জুলুম নির্যাতন ও জুলাই গণহত্যার পর দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বৈধতা থাকতে পারে না। এদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।'
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের দৃশ্যমান বিচার নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম দাবি।
তিনি আরও বলেন, এ দেশের মানুষ চায় না জুলাই অভ্যুত্থানের পর পুরনো রূপেই দেশের রাজনীতি চলুক। আমরা দেশের সংস্কার ও সংবিধান পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে যাব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া আর কোনো নির্বাচনের ম্যান্ডেট নেই। বর্তমান সংবিধান একটি প্রশ্নবিদ্ধ সংবিধান। এখানে বেশিরভাগ মানুষের মতামতের জায়গা রাখা হয়নি।
তিনি বলেন, এই সংবিধানে তরুণ প্রজন্মের লড়াই-সংগ্রামের কোনো ছিটেফোঁটা নেই। এই পার্লামেন্ট এক ব্যক্তিকেন্দ্রীক পার্লামেন্ট ছিল। আমরা যদি তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে আগ্রহী করতে চাই, তাহলে এখানে যে মাসল পাওয়ার পলিটিক্স রয়েছে, তা পরিবর্তন করে দায়িত্বের রাজনীতি করতে হবে। এই দায়িত্ব শুধু এনসিপির না। কারণ অভ্যুত্থান ছিল সব দলের অংশগ্রহণে। তাই এই দায়িত্ব সব দলকেই নিতে হবে।