পুরাতন কোচ সংস্কার করে মেট্রোর আদলে কমিউটার ট্রেন, চালু হচ্ছে ২৬ মার্চ

রেলওয়ের স্বল্প দূরত্বের কমিউটার সার্ভিসে অধিক যাত্রী পরিবহনের জন্য পুরাতন কোচ সংস্কার ও মেরামতের মাধ্যমে মেট্রোরেলের আদলে ২০টি কোচ তৈরি করা হয়েছে। এসব কোচ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে দুটি ট্রেন, যা স্ট্যান্ডিং (দাঁড়িয়ে থাকা) যাত্রী পরিবহন করবে।
চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর রেলওয়ে কারখানায় তৈরি কোচ সম্বলিত ট্রেন দুটি আগামী ২৬ মার্চ উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে প্রায় ১১০ থেকে ১২০ জন যাত্রী পরিবহন করা যাবে।
ট্রেন দুটির একটি 'নারায়ণগঞ্জ কমিউটার' নামে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এবং অন্যটি 'নরসিংদী কমিউটার' নামে ঢাকা-ভৈরব রুটে চলবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, স্বল্প দূরত্বের রুটে চলাচলের উপযোগী মেট্রোস্টাইল কোচ তৈরি শুরু হয় গত বছর থেকে। ওই সময় রমজানের ঈদের আগে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে মিটারগেজের দুটি এবং পশ্চিমাঞ্চলের সৈয়দপুর ওয়ার্কশপে ব্রডগেজের দুটি পুরাতন কোচ সংস্কার করে মেট্রোর আদলে রূপান্তর করা হয়।
চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, "পুরাতন কোচগুলো মেরামত করে মেট্রোরেলের আদলে রূপান্তর করা হয়েছে। আগের আসনগুলো সরিয়ে দুপাশে নতুন আসন বসানো হয়েছে। কোচের ফ্লোরে ম্যাট বসানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় লাইট ও ফ্যান সংযুক্ত করা হয়েছে। দাঁড়িয়ে যাত্রার সুবিধায় স্ট্যান্ড ও পিলার স্থাপন করা হয়েছে।"
তিনি জানান, প্রতিটি কোচ সংস্কার ও রূপান্তরে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে।
বেশি সংখ্যক মানুষ বহন করতে পারবে কোচগুলো। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চাহিদামতো কোচ প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমানে নতুন করে কোচ প্রস্তুতের নির্দেশনা নেই বলেও জানান তিনি।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, "কমিউটার ট্রেনে যুক্ত করা হবে কোচগুলো। প্রতিটি কোচে ৬০ জনের মতো বসতে পারবেন। আরও ৫০-৬০ জন দাঁড়াতে পারবেন।"
"স্বল্প দূরত্বের ট্রেনে যুক্ত করা হয়েছে। এসব কোচ থেকে রেলের আয় হবে না তেমন। আরো কোচ মেরামতের পরিকল্পনা আপতত নেই," যোগ করেন তিনি।
এর আগে, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের 'টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস' ও 'ঢালারচর এক্সপ্রেস' ট্রেনে একটি করে মেট্রোস্টাইল কোচ যুক্ত করা হয়। পূর্বাঞ্চলে জামালপুরগামী দুটি ট্রেনেও এ ধরনের কোচ সংযুক্ত করা হয়। এরপর সৈয়দপুর ওয়ার্কশপে আরও পাঁচটি কোচ প্রস্তুত করা হয়—যা গত ডিসেম্বরে চালু হওয়া জয়দেবপুর কমিউটার ট্রেনে যুক্ত করা হয়েছে।
আর সবশেষে এবার চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় মেট্রোরেলের আদলে আরও ২০টি কোচ তৈরি করা হয়েছে—যা সংযুক্ত করা হবে নারায়ণগঞ্জ ও ভৈরবগামী কমিউটার ট্রেনে।