লুট হওয়া অস্ত্র বিক্রির অভিযোগে চট্টগ্রামে পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৬

পুলিশ স্টেশন থেকে লুট হওয়া অস্ত্র বিক্রির অভিযোগে মো. রিয়াদ নামে একজন পুলিশ কনস্টেবলসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) পতেঙ্গার কাঠগড় এলাকায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল এবং সাতটি গুলি উদ্ধার করা হয়।
চাঁদপুর জেলা পুলিশের সদস্য পুলিশ কনস্টেবল রিয়াদকে গত সপ্তাহে আটক করা হয়। তিনি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি একটি অপরাধস্থল থেকে উদ্ধার করা পিস্তল বিক্রি করার সাথে জড়িত ছিলেন।
কোতোয়ালি থানা পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, রিয়াদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত অন্য ব্যক্তিরা হলেন– আব্দুল গনি, আবু বক্কর, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান এবং মো. ইসহাক। তারা রিয়াদের সহযোগী বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তারকৃত ছয়জনকে গতকাল (২১ মার্চ) দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে কনস্টেবল রিয়াদ, আবু বক্কর এবং মোস্তাফিজুর রহমান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের সামনে অবৈধ অস্ত্র বাণিজ্যের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
তদন্তের জন্য আদালত আব্দুল গনি এবং ফরহাদ হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। ইসহাক কোনো স্টেটমেন্ট দেননি এবং তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (অভিযোগ) মফিজ উদ্দিন।
পতেঙ্গা থানার অফিসার-ইন-চার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, 'তাদের গ্রেপ্তারের সময় অস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার হওয়ার পর কোতোয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক আফতাব হোসেন পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।'
মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, কনস্টেবল রিয়াদকে উচ্চতর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র বাণিজ্যে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
অন্যান্য পাঁচ সহযোগীকে তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়। পতেঙ্গার কাঠগড় এলাকায় আব্দুল গনির কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
৩ মার্চ সাতকানিয়ায় মবের হাতে গণপিটুনিতে দুজন নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া একটি পিস্তল কোতোয়ালি থানা থেকে লুট করা অস্ত্র হিসেবে শনাক্ত হয়।
নিহতদের মধ্যে একজন নিজাম উদ্দিন পিস্তলটি ব্যবহার করেছিলেন। এ কথা চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট সাইফুল ইসলাম ৬ মার্চ একটি সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেন।
সাইফুল বলেন, 'নিজাম তার মৃত্যুর আগে লুট হওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি চালিয়েছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র সিএমপি-এর কোতোয়ালি থানার ছিল।'
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন এবং আউটপোস্টে হামলা হয় এবং ৮১৩টি অস্ত্র ও ৪৪ হাজার ৩২৪টি গুলি লুট করা হয়।
লুট হওয়া অধিকাংশ অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি।