জনগণের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমেই মানুষের আস্থা ফিরে পাবে পুলিশ: মত বিশেষজ্ঞদের

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুলিশ বেশ কিছু জায়গায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাধার শিকার হলেও, জনগণের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমেই মানুষের আস্থা ফিরে পাবে পুলিশ।
গতকাল (১৮ মার্চ) টিবিএস-এর সাথে আলাপ করার সময় তারা পুলিশ বাহিনীর রাজনৈতিক অপব্যবহার রোধে একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন।
ভেঙ্গে পড়া পুলিশি ব্যবস্থাকে সারিয়ে তুলতে পুলিশকে 'কর্মবীর' হিসেবে ফিরে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির।
গত অন্তত দুই দশক ধরে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, "পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিতে গিয়ে যে 'মব' ও রাজনৈতিক বাধার শিকার হচ্ছে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছে, তার উত্তরণ পুলিশকেই করতে হবে।"
ফয়জুল কবির বলেন, "আইন ও বিধি অনুযায়ী জনতার পুলিশ হওয়ার জন্য পুলিশকে জনতার পাশেই থাকতে হবে, সেজন্য দরকার পড়লে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের মাধ্যমে পুলিশকে রাজনৈতিক ব্যবহার থেকে দূরে রাখতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "তবে মনে রাখতে হবে পুলিশের সেবার কেন্দ্র সারা বাংলাদেশের থানাগুলো। সেখানে সাধারণ মানুষ যেন নির্বিঘ্ন আইনি সেবা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।"
বিগত বছরগুলোতেও পুলিশ দৃশ্যত মবের শিকার হয়নি উল্লেখ করে ফয়জুল কবির বলেন, "তবে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি, জনগণ তার কাঙ্ক্ষিত সেবা পায়নি।"
তিনি বলেছেন, পুলিশের প্রতি মানুষের আকাঙ্ক্ষা বেশি। সে জায়গা থেকে সাধারণ মানুষের আইনি প্রতিকারের নির্বিঘ্ন ব্যবস্থা করার মধ্য দিয়েই পুলিশকে আবার জনতার কাতারে আসতে হবে।
পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক নাজমুল হক পরিস্থিতি উত্তরনে সামজিক সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, "অন্যথায় পুলিশের মাধ্যমে মব লিঞ্চিং বা রাজনৈতিক চাপ সামলানো সম্ভব হবে না।"
ছোটখাটো ঝগড়া সমাধানে মেট্টোপলিটন শহরের মহল্লাগুলোতে রাজনৈতিক ব্যক্তি, সুশীল সমাজ ও তরুণ যুবকদের নিয়ে কমিটি করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
নাজমুল বলেন, "এই কমিটিগুলোর মাধ্যমে ছোট ঝগড়া সমাধান করা উচিত। এছাড়া, প্রত্যেক এলাকায় মবের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "স্থানীয় পর্যায়ে কোনো ধরনের মব লিঞ্চিংয়ের ঘটনা ঘটলে স্থানীয় ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি, প্রতিমাসে সাধারণ মানুষের পাবলিকলি সভা করতে হবে। সর্বোপরি পুলিশকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আরও যোগাযোগ বাড়াতে হবে।"