জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের জন্য বাংলাদেশে রোবটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টার স্থাপন করবে চীন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য বাংলাদেশে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার উইথ রোবটিক ফিজিওথেরাপি সাপোর্ট ফ্যাসিলিটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে চীন।
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ) এ সেন্টার স্থাপন করা হতে পারে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এ সেন্টারে সেবা নিতে পারবেন জুলাই অভ্যুত্থানে আহতরা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. সায়েদুর রহমান টিবিএসকে বলেন, "জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সেবার জন্য চীন বাংলাদেশকে রোবটিক ফিজিওথেরাপি সাপোর্ট দিতে চেয়েছে। সেটা সেটআপ করার জন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিএসএমএমইউতে জায়গা দিতে বলেছি। বিএসএমএমইউ এ জায়গা দেবে। আহতদের পুনর্বাসনের জন্য এটি চীন সরকারের একটি সহায়তা।"
"এটি মূলত এখন জুলাইয়ে আহতদের জন্য এবং পরবর্তীতে এটি যাদের প্রয়োজন হবে, তাদের জন্য ব্যবহার করা যাবে। এর মাধ্যমে ফিজিওথেরাপির একটি আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন হবে বাংলাদেশে," যোগ করেন তিনি।
ড. সায়েদুর রহমান আরও জানান, "এই সেন্টার পরিচালনার জন্য চীনের বিশেষজ্ঞ টিম আমাদের দেশের ফিজিওথেরাপিস্টদের ট্রেনিং দেবেন।"
"রোবটিক ফিজিওথেরাপি সাপোর্টের এই রিহাবিলিটেশন সেন্টার ফাংশনাল হতে আড়াই থেকে তিন মাস সময় লাগবে। যন্ত্রপাতি আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, লোকজনকে ট্রেনিং দেওয়া হবে। চীনের বিশেষজ্ঞ টিম আমাদের এখানকার লোকজনকে ১০ দিন ট্রেনিং দেবে," যোগ করেন তিনি।
বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. শাহিদুল হাসান বলেন, "রোবটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টার স্থাপনের জন্য চীনের বিশেষজ্ঞ টিম দুই সপ্তাহ আগে বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের বেজমেন্ট, বিএসএমএমএমইউ এর এ ব্লকের ৪তলা এবং বেতার ভবন দেখে গেছেন। জায়গা সিলেক্ট হলে যন্ত্রপাতি বসাবেন তারা।"
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল যেহেতু কোরিয়ার সহায়তায় করা, তাই সেখানে এই সেন্টার স্থাপন করা যাবে কিনা সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এই সেন্টার বিএসএমএমইউতেই হবে, বিএসএমএমইউ জায়গা নির্বাচন করে মন্ত্রণালয়কে জানাবে।
জুলাই আহতদের অবস্থা
গণ অভ্যুত্থানসংক্রান্ত বিশেষ সেলের তথ্য বলছে, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১১ হাজার ৩০৬ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে গুলিতে আহত হওয়ায় ৮০ শতাংশের অবস্থাই জটিল।
উন্নত চিকিৎসার জন্য ৩৮ জনকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জনকে রোবটিক ফিজিওথেরাপি যন্ত্রের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, যা অনেক ব্যয়বহুল।
এছাড়া, সঙ্গে যাওয়া অ্যাটেনডেন্টদের খাবার, বাসস্থান, অভ্যন্তরীণ যাতায়াত ও চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে। তাই পক্ষাঘাতগ্রস্ত জুলাই আহতদের উন্নত মানের চিকিৎসা দিতে সরকার চীনের সহায়তায় রোবটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে এদিকে যেমন চিকিৎসা খরচ কমাবে, অন্যদিকে সময় বাঁচবে।
জুলাই আন্দোলনে আহত প্রায় ৩০০ জন বর্তমানে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অরথোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন (নিটোর), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অফথালমোলজি অ্যান্ড হসপিটাল এবং বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।