ছয় দিনে ডলারের দর বেড়েছে ১৬ পয়সার বেশি
গত ছয় দিনে ডলারের দর ১৬ পয়সার বেশি বেড়ে বেড়ে ১২২ টাকার ওপর ঠেকেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বুধবার (২০ অক্টোবর) আন্তঃব্যাংকে ডলারের গড় দর দাঁড়িয়েছে ১২২ টাকা ৭ পয়সায়।
মঙ্গলবার আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম ছিল ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা, সোমবারে ছিল ১২১ টাকা ৯০ পয়সা, রোববার ছিল ১২১ টাকা ৮৭ পয়সায়। আর ১৬ অক্টোবর ছিল ১২১ টাকা ৮৪ পয়সা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, 'ডলার দরে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাই এখনই কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি নই।'
কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধান টিবিএসকে বলেন, ১৪ অক্টোবর ১২১ টাকা ৮০ পয়সা দরে ব্যাংকগুলো ডলার কিনেছে। টানা বেশ কয়েকটি নিলামে একই দরে কেনার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্কেটে ইঙ্গিত দেয় যে ডলারের দাম হবে ১২১ টাকা ৮০ পয়সার চেয়ে বেশি। এ কারণে আন্তঃব্যাংক ডলারদর বেশি দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক তিন মাসের ব্যবধানে ডলার ২ বিলিয়নের ওপর ডলার কিনেছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ার কারণে ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ যথেষ্ট রয়েছে বলে উল্লেখ করেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী।
তিনি বলেন, ডলারের দাম এখন স্বাভাবিক পর্যায় রয়েছে। আন্তঃব্যাংকের কারণেও দর কিছুটা বেড়েছে। ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ এখন বেশি রয়েছে, তাই দর বেড়ে যাওয়া কোনো উদ্বেগের বিষয় নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনে রিজার্ভ বাড়াচ্ছে। তাই একে স্বাভাবিক ওঠানামা বলা যায় বলে উল্লেখ করেন মোহাম্মদ আলী।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইঙ্গিত দিয়েছে যে ডলারের দাম বেশি রাখতে চায়। পাশাপাশি সরকারি পেমেন্ট বেড়ে যাওয়ার কারণেও ডলার দর বেড়েছে।
একটি রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে ডলার কিনেছে। আর এলসি পেমেন্ট করতে হচ্ছে। তাই ব্যাংকগুলোর ডলার দরকার হয়েছে। তাতে কিছুটা দাম বেড়েছে। শুধু আমদানির জন্য ডলার দর বেড়েছে, বিষয়টি তেমনও নয়।'
ডলার সরবরাহ বাড়ার পর জুলাই থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো হতে ডলার কেনা শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় ডলার সরবরাহ বেশি থাকার কারণে মুদ্রাটির দর কমছিল। ডলারের দাম ১২১ টাকা ৫০ পয়সার ওপর ধরে রাখার জন্য অতিরিক্ত ডলার নিলামের মাধ্যমে কিনে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দেশে ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬.৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগস্টের ৫.৩৮ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ১৭.২৯ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক অর্থনৈতিক সূচক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সেপ্টেম্বরে এলসি খোলার এই বৃদ্ধি আট মাস পর আমদানি কার্যক্রমে উত্থান ঘটালেও, তা এখনও ২০২৫ সালের জানুয়ারির ৬.৮৪ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় কম।
