৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাইড গ্রুপের দুই কারখানায় লে-অফ ঘোষণা

ঢাকার সাভারের উলাইলে অবস্থিত প্রাইড গ্রুপের দুটি কারখানায় (আংশিক) আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লে-অফ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
কারখানা দু'টি হলো– এইচ.আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং ফ্যাশন নীট গার্মেন্টস লিমিটেড।
এর মধ্যে এইচ. আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের টেক্সটাইল বিভাগ, প্রশাসন (আংশিক) এবং নিরাপত্তা বিভাগ এবং ফ্যাশন নীট গার্মেন্টস লিমিটেডের প্রশাসন (আংশিক) এবং নিরাপত্তা বিভাগ এই লে-অফের আওতামুক্ত থাকবে।
গতকাল শনিবার (৫ এপ্রিল) কারখানা দু'টির সামনে টানিয়ে দেওয়া কারখানা দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কম্পলায়েন্স) মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি নোটিশে এই লে-অফ ঘোষণা করা হয়।
লে-অফের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠান দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কম্পলায়েন্স) মনিরুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড'কে বলেন, মূলত জ্বালানি সংকট, কিছু আর্থিক জটিলতা এবং কার্যাদেশ সংকটের কারণে কর্তৃপক্ষ কারখানা দুটিতে আংশিক এই লে-অফ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়াও সমস্যাগুলো সমাধানে কর্তৃপক্ষ কাজ করছে এবং খুব শীঘ্রই সংকট কাটিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটি পুরোদমে আবারও উৎপাদন কাজে ফিরবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ঈদের আগে প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মীদের সকল বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধ করে যথারীতি ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
নোটিশে জানানো হয়েছে, আগামী ৭ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে এইচ.আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের টেক্সটাইল বিভাগ, প্রশাসন (আংশিক) ও নিরাপত্তা শাখা এবং ফ্যাশন নীট গার্মেন্টস লিমিটেডের প্রশাসন (আংশিক) ও নিরাপত্তা শাখা ব্যাতিত গার্মেন্টস বিভাগের সকল শাখার কাজ বন্ধ থাকবে।
নোটিশে বলা হয়েছে, আকস্মিক অর্থনৈতিক বিপত্তি, তীব্র কাঁচামাল এবং জ্বালানি সংকট এবং কার্যাদেশের অভাবসহ মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বহুবিধ কারণে এই লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, আগামী ৩ মে থেকে যথারীতি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম চালু হবে—- তবে সংকট অব্যাহত থাকলে এবং কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করলে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর শর্ত সাপেক্ষে কারখানা বন্ধ ও লে-অফের সময়সীমা বৃদ্ধি হতে পারে। কর্মীদের মার্চ-২০২৫ মাসের অবশিষ্ট সমুদয় বেতন-ভাতা নির্ধারিত সময়েই পরিশোধ করা হবে এবং যার যার ব্যাংক একাউন্টে যথারীতি তা প্রদান করা হবে।
তবে লে-অফ থাকাকালীন সময়ে কর্মীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৬ ধারা অনুযায়ী সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ব্যাতিত অন্যান্য দিনের জন্য মূল মজুরির ৫০ শতাংশ এবং ১০০ শতাংশ আবাসন ভাতা প্রাপ্ত হবেন বলেও নোটিশে জানানো হয়।
কারখানা সুত্র জানায়, মূলত কোভিড এবং পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে কারখানাটি কার্যাদেশ সংকটসহ আর্থিক চাপের মুখে পড়ে। পরবর্তীতে সমস্যাগুলো কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারলেও আর্থিক কিছু জটিলতা এবং কার্যাদেশ সংকটের কারনে বর্তমানে কিছুটা কঠিন সময় পার করছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও জ্বালানী সংকট, বিশেষ করে গ্যাস ক্রাইসিস প্রতিষ্ঠানটির এই সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে।