Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
December 12, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, DECEMBER 12, 2025
ভূমিকম্পের পূর্ব-প্রস্তুতি: রক্ষা করে লাখো জীবন 

ইজেল

সৈয়দ মূসা রেজা
21 November, 2025, 05:30 pm
Last modified: 21 November, 2025, 05:43 pm

Related News

  • সিলেটে মধ্যরাতে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুই দফা ভূমিকম্প
  • জাপানে ভূমিকম্পের পর ‘মেগাকুয়েক’ আতঙ্ক: আবারও আলোচনায় ‘দ্য বিগ ওয়ান’
  • জাপানে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা জারি
  • ৫.৭ মাত্রার কম্পনটিই ছিল মূল ভূমিকম্প, বাকিগুলো আফটারশক: অধ্যাপক জিল্লুর রহমান
  • রাজধানীতে আবারও ভূমিকম্প

ভূমিকম্পের পূর্ব-প্রস্তুতি: রক্ষা করে লাখো জীবন 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষকে উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা সময় পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে ওঠা কোনও ঘনবসতির শহর বা জনপদে ভূমিকম্পের ধকলে যদি ১০ শতাংশও ভেঙ্গে পড়ে উদ্ধার তৎপরতা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।’
সৈয়দ মূসা রেজা
21 November, 2025, 05:30 pm
Last modified: 21 November, 2025, 05:43 pm
গ্রাফিক্স: ইজেল

ভূমিকম্প সহনশীল ভবন তৈরি করা মোটেও ব্যয়বহুল নয়। অল্প খরচেই এ কাজ সম্ভব। আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞের এ কথা শুনে গভীর ভাবে প্রভাবিত হলেন তুর্কি কর্মকর্তা। পাকিস্তান, ইরান, তুরস্কসহ মধ্য এশিয় দেশগুলোর অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা ইকনোমিক কোয়াপরেশন অর্গানাইজেশন বা ইকো'র প্রধান হিসাবে সংস্থাটির সদর দপ্তর তেহরানে দায়িত্ব পালন করছিলেন তখন তিনি। কিছুদিন পরে তিনি বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞকে জানালেন, ইস্তাম্বুলের নিজ বাড়ি বদলেছেন।  ভূমিকম্প সহনশীল বাড়িতে গেছেন তিনি। এটাই হলো পূর্ব প্রস্তুতির শিক্ষার সুফল। আলাপচারিতার ফাঁকে এ কথা বললেন এ বিশেষজ্ঞ।

মাহমুদুল ইসলাম ২০০৭-২০১১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ সরকারের সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচিতে ।

২০১১ থেকে নরয়েজিয়ান ক্যাপাসিটি এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পূর্ব আফ্রিকা এবং  মধ্যে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দুর্যোগ, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও সামাজিক প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছেন।  ইথিওপিয়ায় কাজ করার মধ্য দিয়ে বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। তিনি এরপর দক্ষিণ সুদান, ইকোর মাধ্যমে ইরানে দায়িত্ব পালন করেন। ইকোতে এ পর্যন্ত একমাত্র বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ইকোভুক্ত ১০ দেশের বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস বা ডিআরআর অবকাঠামো তৈরিতে জাতিসংঘ সমর্থিত উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। 

ইরানের সূত্রে পরবর্তীতে তুরস্ক, আফগানিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে প্রসারিত হয় তার কাজ। ইরিত্রিয়ায়ও কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে, প্রায় ১০ বছর ধরে দক্ষিণ সুদানের হিউম্যানিটারিং অ্যাফেয়ার্স ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। 

হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তেহরানে বসে দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবা থেকে তার  এ সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। নানামুখী ব্যস্ততা সত্ত্বেও সাক্ষাৎকার দেন তিনি। টিবিএসের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আওতায় সব দুর্যোগ বিষয়ই থাকে। এর মধ্যে ভূমিকম্পের বিষয়টিও রয়েছে। তিনি জানান, যে সব দেশে কাজ করেছেন তার সবগুলোই ভূমিকম্প-প্রবণ। এ সব এলাকায় ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রস্তুতি, গবেষণা, দিক নির্দেশনা তৈরিসহ নানা বিষয় কাজ করতেই হয়েছে। 

এরপরই স্বাভাবিক ভাবেই বাংলাদেশের তার কর্ম-অভিজ্ঞতার সাথে বাইরের দেশগুলোতে দীর্ঘদিন এ সংক্রান্ত তৎপরতার মধ্যে কোনও পার্থক্য দেখতে পেয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হলো। তিনি বলেন, চিলি, জাপান, তুরস্ক, ইরানে  ঘন ঘন ভূমিকম্প হয়। কিন্তু বাংলাদেশ এতোটা ভূমিকম্প-প্রবণ ছিল না। গত কয়েকবছর থেকে বাংলাদেশে ছোটখাটো বেশ কয়েকটা ভূকম্পন হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ভূমিকম্প নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০০৭ -২০০৮ থেকে। সে সময় প্রস্তুতি বিষয়ক কাজ করা হয়, ইমারত নির্মাণের নীতিমালাকে আধুনিকায়ন করা হয়। এটি নিয়মিত আধুনিকায়ন করা হচ্ছে এখন। বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন আছে, নীতিমালা আছে, প্রতিষ্ঠান আছে। এ সব কথা বলার পর তিনি বলেন, ভূমিকম্প বিষয়ক গবেষণার বেলায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। উদাহরণ হিসেবে সিসমোলজি গবেষণার কথাই তুলে ধরেন তিনি। তিনি জানান, জাপান, তুরস্ক, ইরান, চিলিসহ এ সব দেশের তুলনায় এ খাতে বাংলাদেশের গবেষণা একেবারেরই কম।

আজও ভূমিকম্পের পূর্বাভাষ দেওয়ার কোনও পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া বের হয়নি। কিন্তু তারপরও পূর্ব প্রস্তুতির উপকার ব্যাপক জনগোষ্ঠীর ওপর যে বর্তায় তার উদাহরণ তুলে ধরেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ মাহমুদল ইসলাম। তিনি বলেন, চিলিতে ২০১০-এ ৮.৮ মাত্রা ভূমিকম্পে প্রাণ হারায় ৫০০ মানুষ। অন্যদিকে হাইতিতে একই সময় ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষ মর্মান্তিক ভাবে প্রাণ হারায়। পূর্ব প্রস্তুতির হেরফেরের কারণেই মৃত্যুহারে এমন ব্যাপক পার্থক্য হয়েছে। প্রস্তুতি ভালো থাকলে এবং ইমারত তৈরির নীতিমালা ঠিক ভাবে মেনে চলা হলে বা বাস্তবায়ন করা হলে  ক্ষয়ক্ষতি কম হবে। 

সাধারণত প্রস্তুতির কথা বললেই পূর্ব প্রস্তুতির কথা আগে বলা দরকার। তিনি আরও জানান, ১১টি ঝুঁকিপূর্ণ নগরীর পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সে সময়(অর্থাৎ বাংলাদেশে কাজ করার সময়) একমাত্র ঢাকাতেই ৭২ হাজার ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এ ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছে দেশে না থাকায় তা তার জানা নেই বলেও স্বীকার করেন তিনি। 

বাংলাদেশ কাজ করার সময় দেশে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, ও শিক্ষায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্তি নিয়েও কাজ করেন । দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন  (২০১২) তৈরির মাধ্যমে দেশে নতুন ভাবে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ তৈরি  করা হয়। পূর্বে এই বিষয় নিয়ে কাজ করা সরকারি সকল সংস্থাকে একত্রিত করা হয়। 

পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে প্রথম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে পাঠ্যভুক্তি করা হয়। বর্তমানে দেশের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়টি পড়ানো হচ্ছে। এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ শহরটির জন্য প্রায় ৩০ হাজার নগর স্বেচ্ছাসেবক তৈরিও হয়েছিল।

এ ছাড়াও দুর্যোগ বিষয়ক আদেশাবলী আপডেট করা হয় ২০১০-এতে এবং পরবর্তীতে ২০১৯-এ। উল্লেখিত সরকারি সকল নীতি, আইন, আদেশ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কি ধরণের প্রতিষ্ঠান কাজ করবে, লোকবল কী হবে, কার দায়িত্ব কী হবে তার সব কিছুই উল্লেখ করা আছে।

দেশে বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনের উপযুক্ত দক্ষ মানব শক্তি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে  ইরানের তৎপরতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইরানই একমাত্র রাষ্ট্র যে ছয়  বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করে দেশটির ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোকে ভূমিকম্প সহনশীল করে তুলেছে। ইরানের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ভূমিকম্প সহনশীল করে তোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইরান লম্বা সময়ের প্রকল্প নিয়েছে। 

ঝুঁকি নির্ণয় করাকে চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশে অনেক প্রকৌশলী সংস্থা আছে। আছে বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি সংস্থা সেখানে এ সব বিষয় নিয়ে গবেষণা করা দরকার। প্রস্তুতি বিষয়ক তৎপরতার তাতে লাভ হবে।  এ ধরণের গবেষণা প্রস্তুতির কাজে সহায়তা করবে।     

সত্যিকার অর্থে কঠিন কাজ হিসেবে উল্লেখ করেন ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতাকে। তিনি বলেন, ভূমিকম্প হয়ে গেলে কী ভাবে উদ্ধার করতে হবে, কী যন্ত্রপাতি লাগবে বা যোগাড় করে রাখতে হবে সেগুলো হলো সরকারি কাজ। তিনি বলেন, বড় ধরণের ভূমিকম্প বাংলাদেশে আঘাত হানলে, পাঁচ বা ছয় হাজার ঘরবাড়িও যদি ভেঙ্গে পড়ে তা থেকে উদ্ধার করার জন্য যে সব যন্ত্রপাতি লাগবে তা বোধহয় এখনো বাংলাদেশ ক্রয় করতে বা সংগ্রহ করতে পারেনি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তুলনায় বর্তমানে যে পরিমাণ উদ্ধার সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি আছে তা খুবই কম বলেও জানান তিনি। 

একই সাথে প্রস্তুতির সাথে মহড়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও টিবিএসের প্রশ্নের প্রেক্ষাপটে তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, প্রতিটি বাড়ির মানুষের ভূমিকম্প এবং অগ্নি-নির্বাপণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ থাকা উচিত। বছরে অন্তত দু'বার মহড়া করতে পারলে ভালো। তা হলে বিষয়টা সব মানুষের মনে থাকবে। ভূমিকম্প হয়ে গেলে কী করতে হবে। গ্যাস লাইন থাকায় ভূমিকম্পের সাথে অগ্নিকাণ্ড ঘটার একটা সম্পর্ক থাকে। অগ্নি-নির্বাপক বিষয় প্রস্তুতি কী হওয়া উচিত তা জানা থাকা দরকার।

তিনি বলেন, সরকারি ভাবে আমরা বলি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই বছরে একবার করে মহড়া দেওয়া উচিত। এ মহড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যেমন হাসপাতাল, পুলিশ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যালয়গুলোতেই প্রতি বছর করা উচিত। প্রতি ছয় মাস পর পর এমনটি করা গেলে খুবই ভালো হয়। এ জন্য সরকারি দিনপঞ্জিতে প্রথম ছয় মাস এবং দ্বিতীয় ছয় মাসে তারিখ ঠিক করা উচিত। তাহলে এ কাজে মানুষের মধ্যে অনুশীলনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে তা তাদের মনে থাকবে। অন্যদিকে মহড়া করেই টের পাওয়া যাবে উদ্ধার কাজ বা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব কোথায় কোথায় রয়েছে, কী ধরণের যন্ত্রপাতি কিনতে হবে এবং কে কোন যন্ত্র  ব্যবহার করবে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক তৈরির প্রয়োজনীয়তাও বোঝা যাবে। তবে বাংলাদেশে স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা থাকলেও মহড়ার মাধ্যমে তাদের জ্ঞানকে আরও বাড়ানো যেতে পারে। তাদের দক্ষতা ধরে রাখা এবং উন্নত করা সম্ভব কেবল মাত্র মহড়ার মাধ্যমেই। 

প্রতিটি অ্যাপার্টম্যান্টে সেখানকার বাসিন্দাদের উদ্যোগে মহড়া করা দরকার। তিনি জানান, রংপুরে যে ভবনে আমি থাকতাম সেখানে একবার অগ্নি এবং ভূমিকম্প সংক্রান্ত মহড়া করেছি। প্রতিবছর এমন মহড়া করব বলেও সে সময় জানান হয়েছিল। ভবনে এমন মহড়া করতে খুব অল্প বাজেট লাগে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো ঠিক আছে কী না নির্দিষ্ট সময় পর পর পরীক্ষা করাও দরকার বলে জানান তিনি। এক অ্যাপার্টমেন্টে যদি ৩০ জন সদস্য থাকে তাদের নিয়ে মহড়া করতে ব্যাপক কোনও খরচের প্রয়োজন হয় না। এ জন্য কেবল ইচ্ছা থাকতে হবে। মহড়ার গুরুত্ব বুঝতে হবে। 

ভূমিকম্প হয়ে গেলে পরিবারের সদস্যরা বা লোকজন কোথায় যেয়ে দাঁড়াবে বা অপেক্ষা করবে তাও আগেভাগে ঠিক করে রাখা উচিত। তিনি বলেন, সাধারণ ভাবে ভূমিকম্পের প্রথম আঘাতের চেয়ে শক্তিশালী হয় দ্বিতীয় আঘাতটি। এ সময়ে কোথায় যেয়ে আশ্রয় নিতে হবে মহড়ার মাধ্যমে তা ঠিক করে নিতে হয় এবং শেখাতে হয়। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে চাকরিজীবী পর্যন্ত সবাই যত প্রশিক্ষণ নিবে এবং মহড়া চালাবে ততই তাদের এ সংক্রান্ত জ্ঞান বাড়বে। 

মহড়া খুবই ব্যয় বহুল কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, না। এ জন্য ইচ্ছাটাই সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মিডিয়াতে এ বিষয়ে নিয়মিত লেখালেখি হওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে তিনি তিনি দুঃখ করে বলেন, সাহিত্য বিভাগ, বিনোদন বিভাগ প্রভৃতি মিডিয়াতে থাকলেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনও বিভাগ নেই বা থাকে না। একই সাথে  ফেইসবুকের ডিজাস্টার ম্যানেজম্যান্ট এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা ডিমার্ট নিজ গ্রুপের কথা তুলে ধরেন। প্রায় ৪০টি দেশের পাঁচ হাজার সদস্যের এ গ্রুপে দুর্যোগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিদিনই পোস্ট থাকে। মাঝে মাঝে  প্রস্তুতির বিষয় নিয়েও সেখানে লেখা উল্লেখ করা হয়।

বিশ্বের যে কোনও ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে তার পরিণাম কী দাঁড়াবে তা নিয়েও কথা বলেন এ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষকে উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা সময় পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে ওঠা কোনও ঘনবসতির শহর বা জনপদে ভূমিকম্পের ধকলে যদি ১০ শতাংশও ভেঙ্গে পড়ে উদ্ধার তৎপরতা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, এখনই দেখবেন এতো চাপা গলি যে দমকলের গাড়ি পর্যন্ত ঢুকতে পারে না।  তল্লাসি ও উদ্ধারের দায়িত্বে নিয়োজিত দল সেখানে ঢুকতেই পারবে না। কিংবা দুর্যোগে সাড়ার দেওয়ার দায়িত্ব নিযুক্ত ডিজাস্টার রেসপন্স টিম বা ফোর্স সেখানে কাজ চালাতে পারবে না। এতো বন্যা নয় না যে নৌকা নিয়ে কোনও গতিকে গেলাম। রাস্তায় ভবন ধসে পড়লে তা সরানোর মতো ক্রেন বা ব্যবস্থা থাকতে হবে। বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা নেই।

তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা এ জন্যেই ভূমিকম্প সহনশীল ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন। মনে করেন, পরিকল্পনা মোতাবেক নগর গড়ে তুলতে হবে।  মনে রাখতে হবে, পৃথিবীতে দুর্যোগ থাকবেই তার মোকাবেলা করতে হবে। না হলে ঘিঞ্জি শহরে উদ্ধার তৎপরতা চালানো সত্যিই যারপরনাই কঠিন। এ অবস্থায় পরিস্থিতি কতোটা খারাপ হতে পারে তার উদাহরণ হয়ে আছে হাইতি।

তিনি তার এক কালের সহযোগী বাংলাদেশের খ্যাতনামা ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ  অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারীর বরাত দিয়ে জানান, বাংলাদেশে ইমারত নির্মাণের নীতিমালাসহ সব আইন-কানুন সবই আছে। কিন্তু বাস্তবায়নের কোনও উদ্যোগ নেই। বা নেই তৎপরতা।   

শীতল লড়াইয়ের দিনগুলোতে নিকিতা ক্রশ্চেভের বরাত দিয়ে শোনা যেত,  পরমাণু যুদ্ধ হলে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো মৃত ব্যক্তিদের সৌভাগ্যকে হিংসা করবে। এ কথার সূত্র ধরিয়ে দেয়া হলে বিশেষজ্ঞ ইসলাম বলেন, ভারত মহাসাগর এলাকায় ভয়াবহ সুনামি বা কিংবা তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্প কিংবা হাইতির ভূমিকম্পের প্রেক্ষাপটে বলা যায় যদি একটা ভূমিকম্পে আড়াই তিন লাখ মানুষ কয়েক দিনে মারা যায় তখন এমনটা মনে হতেই পারে। এ ছাড়া, বেঁচে যাওয়া অনেকেরই অঙ্গহানি ঘটাও স্বাভাবিক। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কল্পনাতীত ভয়াবহ হবে।

আলোচনার শেষে প্রস্তুতির বিষয়টি আবারও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দাবানল, বন্যা, বিশ্বমারি, ভূমিকম্পসহ নানা দুর্যোগ হতে পারে। প্রথমেই এটা মেনে নিতে হবে।  এ অবস্থায় সব কিছুর মূল কথা মানুষকে সচেতন করতে হবে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জনগণকে সচেতন করাকে বিশেষজ্ঞরা তিন ভাগে ভাগ করেন। প্রথমটি হলো ব্যক্তি সচেতনতা। দুর্যোগ বা বিরূপ পরিবেশে কী কী করতে হবে তা প্রত্যেক ব্যক্তিকে জানতে হবে। এটি জানানো যেতে পারে শিক্ষার মাধ্যমে। পরিবারের মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। সংবাদ মাধ্যমের মারফত এবং রাষ্ট্রের মাধ্যমে। তা হলে দেখা যাচ্ছে, ব্যক্তিগত প্রস্তুতি থাকবে, পারিবারিক প্রস্তুতি থাকবে, সামাজিক প্রস্তুতি থাকবে এবং রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রস্তুতি থাকবে।

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, ব্যক্তি হিসেবে এ সংক্রান্ত জ্ঞান আমি বিলাবো। পরিবারও একই কাজ করবে। এমন কাজটি হতে পারে মহড়ার মাধ্যমে। অন্যদিকে সামাজিক প্রস্তুতি ক্ষেত্রে নিজ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় কিংবা পাড়া বা মহল্লার মাধ্যমে কিছু মানুষকে দায়িত্ব দিতে হবে। তারা দুর্যোগ প্রস্তুতি নিয়ে মাঝেমাঝেই আলোচনা করবে বা মানুষকে সচেতন করে তুলবে। আর রাষ্ট্র এ কাজ সহায়তা করবে। জনগণকে বাঁচাতে হলে এ সব প্রস্তুতি নিতে হবে।

সর্বশেষে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের হিসাবে একটি ভবন বা স্থাপনা  নির্মাণে প্রতিবর্গ ফুটে ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা খরচ দাঁড়ায়।  মাত্র পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ বাড়তি খরচ যোগ করলেই ভূমিকম্প সহনশীল ভবন বানানো সম্ভব। অনেকেই ৫০ লাখ বা কোটি টাকা ব্যয়ে ফ্ল্যাট কেনেন। কিন্তু সে টাকা থেকে ৫ বা ৬ শতাংশ বেশি খরচ করলেই নিজের এবং পরিবারের জন্য নিরাপদ বাসস্থান পেতে পারেন। অনেকেই তা করেন না। বা করার প্রয়োজনকে অপ্রয়োজনীয় বিলাস মনে করেন। এখানে মুখ্য নয় অর্থাভাব। বরং হচ্ছে না কেবল জ্ঞানের অভাবে। বাস্তবে জ্ঞান প্রয়োগের অভাবে। ড. ইসলাম বলেন, আমাদের প্রযুক্তি আছে কিন্তু তার প্রয়োগ নেই।
 

Related Topics

টপ নিউজ

ভূমিকম্প / ঢাকায় ভূমিকম্প / দুর্যোগ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ছবি: রয়টার্স
    ‘অপচয়মূলক’ ক্যালিব্রি বাদ দিয়ে কূটনীতিকদের টাইমস নিউ রোমান ফন্টে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন রুবিও
  • রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
    ‘অপমানবোধ’ করছেন, ভোটের পরে সরে যেতে চান রাষ্ট্রপতি: রয়টার্স 
  • ছবি: সংগৃহীত
    মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে বাবা বানিয়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়া কামাল ও তার পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
  • ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
    ডাকসু নেতার ধাওয়া: দৌড়ে পালালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আ ক ম জামাল
  • ছবি: আনস্প্ল্যাশ
    বিশ্বের দীর্ঘতম ফ্লাইট চালু, আকাশে উড়বে টানা ২৯ ঘণ্টা
  • ছবি: টিবিএস
    মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গলার পোড়া দাগের সূত্র ধরে যেভাবে ধরা পড়লেন আয়েশা

Related News

  • সিলেটে মধ্যরাতে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুই দফা ভূমিকম্প
  • জাপানে ভূমিকম্পের পর ‘মেগাকুয়েক’ আতঙ্ক: আবারও আলোচনায় ‘দ্য বিগ ওয়ান’
  • জাপানে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা জারি
  • ৫.৭ মাত্রার কম্পনটিই ছিল মূল ভূমিকম্প, বাকিগুলো আফটারশক: অধ্যাপক জিল্লুর রহমান
  • রাজধানীতে আবারও ভূমিকম্প

Most Read

1
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

‘অপচয়মূলক’ ক্যালিব্রি বাদ দিয়ে কূটনীতিকদের টাইমস নিউ রোমান ফন্টে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন রুবিও

2
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

‘অপমানবোধ’ করছেন, ভোটের পরে সরে যেতে চান রাষ্ট্রপতি: রয়টার্স 

3
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে বাবা বানিয়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়া কামাল ও তার পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

4
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
বাংলাদেশ

ডাকসু নেতার ধাওয়া: দৌড়ে পালালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আ ক ম জামাল

5
ছবি: আনস্প্ল্যাশ
আন্তর্জাতিক

বিশ্বের দীর্ঘতম ফ্লাইট চালু, আকাশে উড়বে টানা ২৯ ঘণ্টা

6
ছবি: টিবিএস
বাংলাদেশ

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গলার পোড়া দাগের সূত্র ধরে যেভাবে ধরা পড়লেন আয়েশা

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net