Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
July 05, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, JULY 05, 2025
রাহবারের ছবি, ক্ষেপণাস্ত্র আর ডাক্তারসহ ইরানের দিনগুলো

ইজেল

সৈয়দ মূসা রেজা
30 June, 2025, 02:00 pm
Last modified: 30 June, 2025, 02:02 pm

Related News

  • আইএইএ’র সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক স্থগিতের আইন অনুমোদন ইরানের প্রেসিডেন্টের
  • হরমুজ প্রণালীতে মাইন বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল ইরান: মার্কিন সূত্রের দাবি
  • জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে: ইরানের প্রেসিডেন্ট
  • মার্কিন হামলায় ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দেখাচ্ছে ইরান, দাবি ওয়াশিংটন পোস্টের
  • তেহরান শহরের কাল্পনিক বৃষ্টির গল্প 

রাহবারের ছবি, ক্ষেপণাস্ত্র আর ডাক্তারসহ ইরানের দিনগুলো

সাদেকিয়াতে পৌঁছালাম তখনো কুয়াশাঢাকা ভোর। ঘড়ি তখনো ৭টার ঘরে যায়নি। আমি একা নই। মুজাহিদ এবং সোহেল ছিল, যদি স্মৃতি ভুল না করে। সেখান থেকে বাসে মোসাল্লায় গেলাম। সাদেকিয়া থেকে মোসাল্লায় নারী-পুরুষদের নেওয়ার জন্য অনেক বাস ছিল। তেহরানের বিভিন্ন প্রান্তে এভাবে বাস দেওয়া হয় ঈদের নামাজে যাতায়াতের জন্য। এ বাসে টিকিট লাগে না।
সৈয়দ মূসা রেজা
30 June, 2025, 02:00 pm
Last modified: 30 June, 2025, 02:02 pm
ইরানি নোট, ২০১৯

(রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগে যোগ দেই ১৯৯৭ সালের জুনে। চাকরি থেকে অবসরে যাই ২০২০ সালের প্রথম দিকে। দীর্ঘ চাকরিজীবনের কিছু কথা, কিছু স্মৃতি তুলে ধরলাম। এড়িয়ে গেলাম ভণ্ডামি আর তিতা স্মৃতির কষ্টের ইট-পাথরগুলো।)  

ক্যামেরা? ব্যাগ হাতিয়ে বের করল নিরাপত্তা বিভাগের বাঘা বাঘা সদস্যগুলো। ব্যবহারে বিনীত। কিন্তু তাদের গায়ে যে অমিত তাগদ, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। 'বস্ত্রের কারা টুটিয়া অঙ্গের হেম আভা পড়ে লুটিয়া।' এখানে 'হেম আভার' বদলে 'পেশিশক্তির ইঙ্গিত' আর 'বস্ত্রের' বদলে 'উর্দি' প্রতিস্থাপন করলেই সংক্ষেপে বিস্তারিত বিবরণের প্রকাশ ঘটবে। তারপর মাথা নাড়ল তারা। না, এ দ্বার দিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ফার্সিতে বলছে। এক বাক্যও বুঝছি না। ভঙ্গিতে এবং ইশরায় বুঝতে পারলাম। দেখিয়ে দিল কোন দিকে যেতে হবে। চললাম বিরস বদনে। যদি আগে বলা হতো, তাহলে ক্যামেরা নিয়েই আসতাম না। হয়তো ভেবেছিলাম।

১৯৯৮ সাল। আমরা যাকে বলি ঈদুল ফিতর; ইরানিরা বলে ঈদ-ই-ফিতরের দিন। স্থান তেহরানের মোসাল্লায় ইমাম খোমেনি (রহ.)। দিনটি ছিল শুক্রবার। ফেব্রুয়ারি মাস। হাওয়ায় তখনো শীতের কামড় বহাল তবিয়তেই রয়েছে তেহরানে। রেডিও তেহরানে যোগ দিয়েছি জুলাই মাসে। ইরানে আসার এক বছরও পুরা হয়নি।

মোসাল্লায় ইমাম খোমেনিতে (রহ.) ঈদের নামাজ পড়তে যাব। এটা কীভাবে ঠিক করেছিলাম, মনে নেই। সাজমানে বারনামে জুনুবির সেদা ও সিমার 'কলোনি', বেহসাত থেকে বের হয়ে দুই পা বাড়ালেই ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। সেখান থেকে খেয়া-ট্যাক্সি করে সাদেকিয়াতে যাই ভোরে। তেহরানে তখন দুই ধরনের ট্যাক্সি মিলত। একটা নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাতায়াত করত খেয়া-ট্যাক্সি। দেশের নদীপারের খেয়ানৌকার মতো। আর ছিল তুলনামূলক দামি টেলিফোন ট্যাক্সি। 

সাদেকিয়াতে পৌঁছালাম তখনো কুয়াশাঢাকা ভোর। ঘড়ি তখনো ৭টার ঘরে যায়নি। আমি একা নই। মুজাহিদ এবং সোহেল ছিল, যদি স্মৃতি ভুল না করে। সেখান থেকে বাসে মোসাল্লায় গেলাম। সাদেকিয়া থেকে মোসাল্লায় নারী-পুরুষদের নেওয়ার জন্য অনেক বাস ছিল। তেহরানের বিভিন্ন প্রান্তে এভাবে বাস দেওয়া হয় ঈদের নামাজে যাতায়াতের জন্য। এ বাসে টিকিট লাগে না।

১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে সেখানেই গেছি, সাথি হয়েছে ক্যামেরা। নাকইন এফএম ২। লেন্স ৫৫ ম্যাক্রো নিক্কর ২.৮। ক্যামেরাটা এখনো আছে। আছে লেন্সটা। কাজ করে ডিজিটাল ক্যামেরায়ও। একটু ঝামেলা হয়। তবে ছবি খারাপ আসে না। ক্যামেরাটাও আছে। কিন্তু ফিল্ম আজকের দিনে অচল হয়েই গেছে। ব্যবহার করার ইচ্ছা থাকলেও সম্ভব নয়। সেদিন ঈদের জামায়াতে যাওয়ার সময়ও ক্যামেরার ব্যাগ কাঁধেই ছিল।

তেহরানের শহরতলীর এক সিনেমাহলের সামনে টিকেটের জন্য লাইন

আমাকে কেউ আগে বলে দেয়নি যে ক্যামেরা নিয়ে ঢোকা যাবে না বা ঢুকতে ঝামেলা হবে। নতুন দেশে কাজ করতে গেলে ওরিয়েন্টশনের একটা ব্যবস্থা থাকে। কী করা যাবে বা করা যাবে না–তা বিশদভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। রেডিও তেহরানে তখনো এমন কিছুর বালাই ছিল না। তবে তাতে সেই ঈদের দিনে, শাপে বর হয়েছে। তথ্য না জানায় বা জানানোয় কখনো কখনো 'বরে' শাপ হয়েছে; সর্পিল সেসব কথা ভবিষ্যতের খাতায় জমা থাক। 'যে ছাগল মরে গেছে, তাকে মরে যেতে দাও, কেন তার চামড়া তুলে নাও'–সাবেক সহকর্মীর ইচ্ছাকৃত বেসুরা ঢংয়ের গানের সুর ভাজতে ভাজতে বরং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সেই ঈদের দিনের ঘটনায় ফিরি।

মোসাল্লায় ঢোকার মুখে তল্লাশি হচ্ছে। ক্যামেরা দেখেই নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব নিযুক্তরা জানিয়ে দিল, না এখান দিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। দেখিয়ে দিল কোন প্রবেশদ্বারে যেতে হবে।

ঈদের জামায়াতে ইমামতি করবেন রাহবার হিসেবে পরিচিত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনি, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। সেখানে ক্যামেরা নিয়ে ঢোকা সহজ হবে না। ঢাকায় প্রেসিডেন্ট আবদুর রহমান বিশ্বাস এসেছিলেন বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির (বিপিএস) অনুষ্ঠানে। বিপিএস সদস্য হিসেবে সেখানে টুকটাক ছবি তুলেছিলাম। আলোকচিত্রীদের সংগঠন হওয়ায় অনুষ্ঠান ছিল 'ক্যামেরাময়'। একেকজনের কাছে একাধিক ক্যামেরা এবং সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত। নিজের ছবি উঠল কী উঠল না, তা নিয়ে গরজ নেই কারও! হাড়ের ভেতরে যাদের আলোকচিত্র স্থান করে নিয়েছে, হৃদয়ে শিল্প শিকড় মেলে দিয়েছে একমাত্র তাদের মধ্যেই নিজ ছবি তোলার অন্তহীন অনীহা পাখনা মেলে। না হলে ফাঁকতালে নিজ শাখামৃগ চেহারাকে লেন্সের সামনে মেলে ধরতে সর্ব শরীর চালাতে বা কনুই মেরে এগিয়ে যেতে দ্বিধাহীন থাকে অনেক বিকারবিহীন বিকৃত আত্মপ্রেমে দেওয়ানা চিত্ত। এমন বঙ্গীয় দ্বিপদীর দেখা মিলত না রেডিও তেহরানের না গেলে।

এ রকম গুঁতোর মুখে প্রথম পড়ি তৎকালীন ফার্স্টলেডি রওশন এরশাদের এক অনুষ্ঠানের ছবি তোলার সময়। আধা সরকারি সংস্থা আয়োজিত হোটেল সোনারগাঁওয়ের সে গোটা অনুষ্ঠানের ছবি তুলতে হয়েছিল আমাকে।

প্রেসিডেন্ট আবদুর রহমান বিশ্বাস এবং রওশন এরশাদের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিত্বদের ছবি তোলার হাতে খড়ি হয় ভালোভাবে।

এমন অনুষ্ঠানে ছবি তুলতে যাওয়ার আগে অনেক হাঙ্গামা পোহাতে হয়। নিরাপত্তার বেড়া বাইতে হয়। কিন্তু সেদিনের ঈদুল ফিতরের ময়দানে ওসব ছাড়াই গিয়েছিলাম। দুরু দুরু বুকে প্রবেশদ্বারের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। দেখালাম রেডিওর কার্ড। কাজ হলো না। হওয়ার কথাও না। ও কার্ডে পেশা হিসেবে লেখা, মুতারজেম ও গুয়েন্দে, অনুবাদক এবং উপস্থাপক। আমার চাকরির শেষ প্রান্তে এসে দেখেছি, লেখা বদলিয়ছে। মুতারজেম বাদ। টিকে ছিল গুয়েন্দে। যদিও আমরা সাংবাদিক পরিচয় দেই বাইরে বা দেশে। কিন্তু রেডিও তেহরান আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের সাংবাদিক হিসেবে মেনে নেয়নি। পরবর্তী সময়ে বেশির ভাগ সময় নিজের আগ্রহই, ইরানের অনেক অনুষ্ঠানে ছবি তুলতে ও খবর সংগ্রহ করতে যাওয়ার আগে ওজারতে ইত্তেলাত, গোয়েন্দা দপ্তরের দেওয়া এক দিনের ছাড়পত্র ব্যবহার করতে হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষ। কার্ডের আয়ুও শেষ। ১৯৯৮ সালের সেদিনে ওসব কিছুর বালাই ছিল না আমার কাছে। প্রায় পত্রপাঠ বিদায়!

তেহরানের এক মেট্রো স্টেশন

অনুনয় করলাম। তা-ও কাজ হলো না। এর মধ্যে ইংরেজি জানা এক কর্তাব্যক্তিকে পেলাম। তিনিও প্রথমেই না বললেন। এখানেই ভাগ্য হেসে উঠল।

আরবি টিভির এক সহকর্মীর সাথে বিশ্ব কার্যক্রমের দপ্তরে মাঝে মাঝে দেখা হয়। দেখা হয় খাওয়ার ঘরেও। পেটা শরীর। মুখে উদার হাসি। কখনোই তার মুখে দেখিনি বিষণ্নতার ম্লান কুয়াশা। তিনি পদে ভারী কোনো কর্তা নন। খেটে খাওয়া কর্মী। আরবি এবং ফারসি ছাড়া আর কোনো ভাষা তিনি জানেন না। আর আমার ফার্সি তখন পুরো বাক্য নয়, বরং কিছু শব্দে সীমিত।

একটু সময় লাগল তার ব্যাপারটা বুঝতে। তারপর তিনি বুলন্দ গলায় সুপারিশে নামলেন। 'হামকারে মা' (আমাদের সহকর্মী) আঙুল দিয়ে ঈশারা করতে করতে এ কথা বারবার বলছেন। আর সাথে সাথে নিজের বুকে হাত ঢুকছেন। সে সময় 'মাসুলিয়াত'জাতীয় (দায়িত্ব) শব্দ শুনেছি বলে মনে হলো। ভদ্রলোক চড়া স্বরে কথা বলে চলেছেন। ইরানিরা সাধারণভাবে মৃদুভাষী। সে তুলনায় আমরা বা আরবি লোকজন স্বর চড়িয়ে কথা বলি। এ দলে আমি নিজেকে বরাবর 'রাসভ কণ্ঠের' গুচ্ছেই হিসাব করি। যাকগে, ওখানে সেদিন অবশ্য আমি অতিশয় মিন মিন করছিলাম। তীব্র শীত। আর মন খারাপ। দুইয়ের যোগফলে স্বর ভেজা মুড়ির মতো হয়তো উদিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আরবি ভদ্রলোকের গলা অনেক দূর যাচ্ছিল। কী সব বলছেন, বুঝতে পারলাম না। আমার ধারণা, ভদ্রলোক নিজেকে আমার গ্যারান্টার হিসেবে পেশ করছেন।

তাতেই হয়তো 'চিড়া ভিজল'। কর্তাব্যক্তি আরবি টিভির ভদ্রলোককে থামালেন। নিজে একটু দূরে গেলেন। মনে হলো, ওয়াকিটকিতে কোথাও কথা বললেন। ফিরে এসে হাসি মুখে আমার ব্যাগকে স্ক্যানারে দিতে বললেন। আমার কার্ডটা নিলেন। আর আমাকে দিলেন 'আক্কাস' (আলোকচিত্রী) লেখা একটা কার্ড। সেটা গলায় ঝোলাতে হলো। সাথে ধাতব কিছু আছে কি না, জানতে চাইলেন। আর ক্যামেরার শাটার একবার টিপতে বললেন। নিরাপত্তার এই পর্বের ছক আমার অপরিচিত নয়।

দশটা ঈদের ফুর্তিতে মনটা মাতোয়ারা হয়ে উঠল। রাহবারের ছবি তোলার সুযোগ পাওয়াকে জীবনের বিশেষ ঘটনা না বললে কোন ঘটনাকে বিশেষ অভিধায় চিহ্নিত করব! খানিকটা হেঁটে ঢুকলাম। দেখলাম একটা কনটেইনারের ওপর দাঁড়িয়ে অনেক আলোকচিত্রী। অবিরাম শাটারের ছন্দ বেজে চলেছে। সবাই ছবি তোলায় ব্যস্ত। উঠলাম ওপরে। ঈদগা প্রায় পুরোটাই দেখা যাচ্ছে এখান থেকে। দলে দলে নারী-পুরুষ তখনো আসছে। নারীদের নামাজের স্থান আলাদা। মাঝে পর্দা দেওয়া আছে। আমার কাছে কোনো জুম বা টেলিফটো লেন্স না থাকায় সেসব ছবি জুতসই হয়নি। এর মধ্যে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিযুক্ত ব্যক্তিরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন, রাহবারের হেলিকপ্টার নামা ও ওঠার সময় কোনোভাবেই ছবি তোলা যাবে না। কনটেইনারের চারধারে দশাসই চেহারার চার নিরাপত্তা কর্তা দাঁড়িয়ে রইলেন।

ইরানের ট্যাক্সি

রাহবারের হেলিকপ্টার নামল। দেখলাম। তারপরই পুরো ঈদের জামায়াত ফেটে পড়ল স্লোগানে। সে সময় কনটেইনার থেকে নিচে নামলাম। অন্য আলোকচিত্রীদের নামতে দেখে তাদের অনুসরণ করলাম অনভিজ্ঞ আমি।

এবারে মুসল্লিদের অনেক কাছাকাছি চলে এলাম। এখান দিয়ে জামায়াতে শামিল হওয়ার একটা দ্বার আছে। পদস্থ কর্তাব্যক্তিরা এখান দিয়ে ঢুকছেন। এ জায়গায় জটলা পাকাচ্ছেন আলোকচিত্রীরা। রাতিমত ভিড়। শীর্ষ বা শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা নিজ নিজ গাড়ি থেকে নেমে অতি বিনয়ের সাথে ঢোকার আরজি জানাচ্ছেন। কেউ উঁচু স্বরে কথা বলেননি একবারও। বারবার বলছিলেন, বেবাকশিত বেবাকশিত–মাফ করবেন মাফ করবেন।

রাহবার এসে দাঁড়ালেন উঁচু মঞ্চে। স্লোগান তখনো চলছে। রাহবার হাত নেড়ে 'মামনুনাম' (ধন্যবাদ) বার কয়েক বলার পর থামল স্লোগান।

জুম বা টেলিফটো লেন্সের অভাবে এখান থেকেও রাহবারের ছবি তুলতে সুবিধা হলো না। সাধারণভাবে ১০০ আইএসওর ফিল্ম ব্যবহার চল থাকলেও বহুদিন ওই ফিল্ম ব্যবহার করিনি। ক্যামেরায় ৪০০ আইএসও ফুজি ফিল্ম ব্যবহার করেছি। সেদিন এ ফিল্ম ব্যবহারের ফজিলত হাতে হাতেই পেলাম। মেঘাচ্ছন্ন দিন থাকায় শাটারের গতি আর এফ স্টপ সুবিধার জায়গায় রাখতে পারলাম এ কারণেই।

ইমামতির জন্য রাহবার নিচে নেমে এলেন। আমরা যে জায়গায় ছিলাম, তার চেয়ে আট-দশ ফুট নিচে ইমামতির স্থান। সেখানে যেতে হয় চিকন পথ ধরে। ঢোকার মুখে নিরাপত্তা বেশ জোরালো। সে সময় আলোকচিত্রীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি লেগে গেল। সবাই একযোগে ঢুকে ছবি তোলার জন্য উদ্গ্রীব। মুখের কথায় কাজ হচ্ছে না দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বের এক দশাসই কর্তা হালকাভাবে আলোকচিত্রীদের ধাক্কা দিলেন। আমাদের কাছে হালকা মনে হলেও দেখলাম টপাটপ কয়েকজন আলোকচিত্রী পড়ে গেলেন। ভাগ্যিস, আমি ছিলাম দূরে। বাঁচলাম 'পপাত ধরণী তল' হওয়ার হাত থেকে। এরপর আর ধাক্কাধাক্কি নেই। একবারে কয়েকজন করে আলোকচিত্রীকে ভেতরে যেতে দেওয়া হলো। ছবি তুলে চলে আসছে তারা। আমার পালা আসার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বরং বলা ভালো অধীর হয়েই উঠলাম। তর সইছিল না।

রাহবার নামাজ শুরু করার পর আমি বেশ কাছ থেকে ছবি তোলার সুযোগ পেলাম। তুলতে হলো দ্রুত। ওখানে বেশি সময় থাকতে দেওয়া হয়নি কোনো আলোকচিত্রীকে।

ছবি তোলা শেষ। নামাজও শেষ। সবাই চলে যাচ্ছে। আমি ধন্যবাদ দিয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে কোলাকুলি করে বিদায় নিচ্ছিলাম। যার সাথেই কোলাকুলি করি, পিঠে কাপড়ের নিচে ধাতব বস্তুর উপস্থিতি হাতে ঠেকছে। অস্ত্র। গুঁজে রাখা আছে।

পরদিন অফিসে এ কথা জানালাম। মুদির। মানে ব্যবস্থপক। কিন্তু এর বাংলা করা হয়েছে পরিচালক। ইরানের প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনেকটা মার্কিন ধাঁচের। কয়েক বিভাগের মুদিরের ওপরে রয়েছেন মুদিরে কুল বা মহাব্যবস্থাপক। এর বাংলা করা হয়েছে মহাপরিচালক হিসেবে। বাংলাদেশের প্রশাসনের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্যেই এসব করা। যাকগে, মুদির গম্ভীর হয়ে গেলেন। আমাকে জ্ঞান দিলেন। খবরদার। ওদের সাথে মিশতে যাবেন না। ভয়ানক। এদিক-সেদিক কিছু করলে টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলবে! বুঝলাম, ছবি তোলার সুযোগ পাওয়াটা তার মনমতো হয়নি।  

আইআরআইবির বুরনমার্জি বা বিশ্ব কার্যক্রমের একমাত্র আমিই রাহবারের ছবি তোলার এমন সুযোগ পেয়েছিলাম। আমার জানামতে, বাংলা বিভাগ তো নয়ই, এমনকি বাকি ২৯টি ভাষার অনুষ্ঠানের কেউ এমন সুযোগ আজ অবধি পাননি।

মেলায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের সারি, দূরে মোসালার মিনার

অস্ত্র মেলার কথা

ইসরায়েল এবং ইরান যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার কথা দারুণভাবে উঠে এসেছে। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তেহরানের মোসাল্লায়ে ইমাম খোমেনিতে (রহ.) ইরানের প্রতিরক্ষাশিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। ইসলামি বিপ্লবের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিরক্ষা খাতে ইরানের চোখধাঁধানো সফলতা তুলে ধরার অংশ হিসেবে এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলা দেখতে ও ছবি তুলতে গেলাম বাংলা বিভাগের ইরানি মুদির মুরতজা ইব্রাহিমি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও উপমহাদেশের মুদিরে কুল মোহাম্মদ নওরোজি। আমি নিজের মতো ছবি তুলছি। বিশাল প্রাঙ্গণের বাইরে শোভা পাচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার, দুজন বসার উপযোগী ছোট ডুবোজাহাজ, বিমান ও ক্ষেপণান্ত্রবিধ্বংসী রকেট ও মেশিনগান ইত্যাদি। 

একটা মেশিনগানের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী বা আইআরজিসির এক সেনা। ওদের পদবি বুঝতে পারেনি। তাকে বললাম, এ রকম একটা মেশিনগান আমাকে দিতে পারো? গুলি-গোলার দরকার নেই। মেশিনগান এমনকি গাড়িও লাগবে না, কেবল মেশিনগানটা হলেই হবে। সেনাটি জন্মেও এমন আবদার শোনেনি। মুখ হাঁ হয়ে গেল। তারপর সামলে নিয়ে প্রশ্ন করল, কী করবে এ অস্ত্র নিয়ে?–না, মানে এ রকম একটা অস্ত্র থাকলে ঘরে বউ একটু ভয় পাবে। সমীহ করে কথা বলবে। এর মধ্যে সেখানে এসে হাজির বয়সী এক পদস্থ আইআরজিসির কর্মকর্তা। কর্নেল হবে বলে মনে হলো। সেনাটি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেখে জিজ্ঞাসা করল কী ব্যাপার? সেনাটি বলল। পদস্থ কর্মকর্তাটি মাথা নাড়াল। তারপর আমার দিকে ফিরে বলল, হাজিআগা (স্যারের বিকল্পে বহুল ব্যবহৃত। শাব্দিক অনুবাদ হবে হাজি সাহেব আর ভাবার্থে ধরে নেওয়া হচ্ছে বয়সী ব্যক্তি নিশ্চয়ই আল্লাহর ঘর ঘুরে এসেছেন। কম বয়সীর ক্ষেত্রে আগা বা জনাব ব্যবহার করা হয়।) গ্যাঞ্জাম তো বাধিয়ে দিলে, এখন আমাদের ছেলেরাও একটা করে মেশিনগান নিতে চাইবে। আর সত্যি কথা হলো, আমার নিজেরও ইচ্ছা হচ্ছে একটা ঘরে নিয়ে যাই। বলে মুখটা আগের থেকেও গম্ভীর করে রাখল।

মোসল্লার ভেতরে বিশাল হলঘরে ছিল ড্রোনসহ আর বেশ কিছু যুদ্ধপণ্য। সেখানে ছবি তোলার সময় ঝামেলা হলো। পরিচয় জানতে চাইল ইত্তেলাত, গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা। আইআরআইবির কার্ড দেওয়া হলো। সাথে মুদিরও আছে, তা-ও দেখালাম। ভদ্রলোক মুদিরকে ডেকে নিয়ে গেল। সাথে আমিও গেলাম। বলল, না, এ কার্ডে হবে না। সাংবাদিকতার কার্ড লাগবে। পাই কোথায়? ইত্তেলাত থেকে আনতে হবে। তাহলে? দ্রুত দুয়েকটা ছবি তুলে ক্যামেরা ব্যাগে ঢুকিয়ে চলে যাও।

মুদির বলতে চাইলেন, মুদিরে কুলও আছেন। কিন্তু ভদ্রলোকের এক কথা। অল্প কিছু ছবি তুলে সেখান থেকে বের হয়ে এলাম আমরা। ইরানের তৈরি দাঙ্গাবিরোধী পোশাক এবং মুখোশ আঁটা এক সেনা দাঁড়িয়ে আছে। ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কর্তব্যরত অবস্থায় ছবি তোলা ঠিক নয়। কিন্তু এ সেনা তার ব্যতিক্রম। মুখোশের নিচে চেহারা আঁটা। ছবি তোলার জন্য নানাভাবে পোজ দিচ্ছে!

বুরনমার্জির নিজস্ব ক্যামেরা নেই। নিজের ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলাম। ওটা নিয়ে ঢোকা যাবে। কিন্তু বের হওয়া একরাশ ঝামেলা। সে হিসাব করে আমাকে ওয়ালি আসরের বাস টার্মিনালের কাছে নামিয়ে কর্তার অফিসে চলে গেলেন। 

নামাজ খুনেতে (নামাজঘর) নামাজ পড়ে একটু বসেছি, সে সময় খুবই সাধারণ চেহারাসুরত এবং কাপড়চোপড় পড়া একজন বলল, সালাম। কেমন আছ? কেমন ছবি তুললে?–এখানে তো কোনো ছবি তোলেনি।–আরে না না। মোসল্লায় ঘুরে ঘুরে ছবি তুললে মজা করলে, সে কথা বলছি।–ইয়া আল্লাহ কয়কি! আমার আকাশ থেকে পড়ার দশা। একে মোসল্লায় দেখেছি বলে তো মনে করতে পারছি না। মোসল্লা এখান থেকে বেশ দূরে। আমাকে গাড়িতে করে নামিয়ে দিয়ে গেছে। এ এল কীভাবে? 

লোকটা প্রশ্নের জবাবের জন্য তাকিয়ে আছে। আমি এক কথায় বললাম, ভালো। কোথায় থাকি, দেশ কোথায় ইত্যাদি টুকটাক প্রশ্নও করল।

নামাজ খুনে থেকে বের হয়ে মুদিরকে ফোন করলাম। সব শুনে বলল, তোমার পিছে থাকবে কয়েক দিন। আমি নওরোজিকে জানাচ্ছি। নওরোজি ইরাক-ইরান যুদ্ধে সম্মুখ লড়াই করতে গিয়ে আহতও হয়েছে। পরে দপ্তর থেকে অভয় দেওয়া হলো। কদিন নজর থাকবে। তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই।

তারপরও ভয়ের মুখে একবার পড়েছিলাম।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর ছাত্র-জনতা তেহরানে মেরিন সেনাদের নিরাপত্তায় ঘেরা মার্কিন দূতাবাস দখল করে নিয়েছিল। এই দূতাবাস কূটনৈতিক নামাবলি গায়ে চড়িয়ে বিপ্লববিরোধী তৎপরতা ইরানে উস্কে দিচ্ছিল। এই অভিযোগ তোলা হয়। সেদিকে দূতাবাস ইরানিদের দখলে রয়েছে। আইআরজিসি পরিচালিত আধা সামরিক স্বেচ্ছাসেবী দল বাসিজের দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দূতাবাস ভবন। প্রতিবছর দূতাবাস দখলের সেপ্টেম্বর মাসের দিনটি সাবেক দূতাবাসের সামনের রাস্তায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ দিবস হিসেবে পালিত হয়। আইআরজিসির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাসহ অনেকেই আসেন। আর আসে ছাত্র-জনতার ঢল। এমন এক অনুষ্ঠানে ছবি তোলা শেষ করে ভাবলাম দূতাবাসের ভেতরে ছবি তোলা যায় কি না। 

তেহরানের বাজার

এক প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকতে গেলাম, মানা করল। দ্বিতীয় আরেক দ্বার দিয়ে ছবি তুলতে তুলতেই ঢুকলাম। ভেতরে সবচেয়ে নজর কাড়ল স্ট্যাচু অব লিবার্টির একটি কার্টুন মূর্তি। মশালের জায়গায় হাতে বোমা। চেহারাও বিকৃত ভৌতিক। আপনমনে টুকটাক ছবি তুলছি। এ সময় একজন বলল, না না, এখানে ছবি তোলা যায় না। কিন্তু ভেতরে কোথায় লেখা নেই, ছবি তোলা নিষেধ। আমি আমার কাছে মেতে রইলাম। এর একটু পরেই একজন মোটা তরুণ মোটরসাইকেল করে এসে হাজির। বলল, হাজিআগা, পেছনে ওঠেন। আমার সাথে চলেন। উঠতে উঠতে বললাম, কী ব্যাপার আটক করলে নাকি? খানিক রসিকতা ছিল স্বরে। মোটকু মিয়া বলল, জি। সময়টা শীতের হলেও আমার ঘাম দেওয়ার মতো অবস্থা।

বিশাল এলাকা। একটা ভবনের সামনে নিয়ে থামল। ক্যামেরার মেমোরি কার্ড দিতে বলল। দিলাম। কী করে ঢুকলাম, কেন ছবি তুলছি–এসব প্রশ্ন। আইআরআইবির কার্ডটাকে গুরুত্ব দিল না। প্রশ্ন করছিল দুজন। একজনকে দেখে মনে হলো, তাকে আইআরবির হেরাসাত বা নিরাপত্তা বাহিনীতে দেখেছি। অন্য লোকটি একটু অসহিষ্ণু। বলল, পুলিশ ডেকে দিয়ে দাও। একজন পুলিশ ডাকার তোড়জোর শুরু করল। অন্যজন থামাল। বলল, তুমি জানো না, এ কথা বলে পার পাবে না। তার চেয়ে বলো ভুল করেছি। তা-ই বললাম। বলল, বড় বিপদে পড়ে গেছ। এখন তোমার কার্ড কেটে দেওয়া হবে। তারপর গোয়েন্দাগিরির অভিযোগ এনে পুলিশে দেওয়া হবে। এ অভিযোগ পুলিশে দেওয়া হলে অন্তত ছয় মাস জেলে পচবেন। এ ক্ষেত্রে ছয় মাসের আগে মামলা আদালতে যায় না।

ঘাবড়ালাম। তবে আতঙ্কিত হই না। এর মধ্যে আমার মোবাইলটা নিয়ে নিল। মেমোরি কার্ড ফিরিয়ে দেওয়া হলো। বলা হলো, ভেতরের ছবিগুলো মুছে দিয়েছি। অন্য লোকটি বারবার বলছিল। সময় নষ্ট করে লাভ কী। পুলিশে দিয়ে দাও। তারাই সামলাবে। এ লোকটি তাকে থামাল। আবার প্রশ্ন। জেরা আর কি! তারপর বলল, যাও। এ কাজ আর কোরো না। ওদের গাড়িতে করে প্রবেশদ্বার পর্যন্ত নিয়ে এল। সেখানে কয়েকজন মিলে প্রশ্ন করল, এখান দিয়ে ঢুকেছি কি না। আইফোন দিয়ে ভিডিও করা হচ্ছিল। আমি বললাম, না। অন্য দরজার কথা বললাম। কীভাবে ঢুকেছি? বললাম, ছবি তুলতে তুলতে ঢুকেছি। কেউ বাধা দেয়নি? না। কেউই বাধা দেয়নি? না। দুই শ ভাগ সত্য যে কেউ বাধা দেয়নি। 

ভিডিও যে করছিল, সে একটু হাসল। বলল, খোদা হাফেজ। বের হয়ে এলাম। দুই পা ফেললেই মেট্রো। স্টেশনে এসে মুদিরকে ফোন করলাম। মুদির মনে হয় চমকে উঠল। বলল, খোদার শোকর যে অল্পতেই মুক্তি পেয়েছ। না হলে দুর্ভোগ ছিল।

ইরানে ইস্ফাহানিদের নিয়ে নানা কৌতুক শোনা যায়। এসব কৌতুকের মূল সুর হলো, ইস্ফাহানিরা বড়ই খাসিস। কৃপণ। ইস্ফাহান সফরে গিয়ে আতাশ গা জরথ্রুষ্টদের প্রাচীন উপাসনা কেন্দ্র দেখে ফিরছি। বেলা দুপুর পার হয়ে গেছে। প্রচণ্ড ভুগ। রাস্তায় তেমন মানুষজন নেই। হাতে যন্ত্রপাতির বাক্স নিয়ে আসছে এক ইরানি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে শ্রমজীবী। তার কাছে জানতে চাইলাম, ভালো খাবার জায়গা কোথায়? পাল্টা প্রশ্ন করল, ভালো খাবার জায়গা? জি। মাথা নাড়লাম।–ও, তাহলে আমার সাথে বাসায় চলো। আমার বউ খুব ভালো পাকায়। এ সময় চার মেহমান নিয়ে গেলে একটু মেজাজ করবে। ও কিছু না। খুশিও হবে। বিদেশি মেহমান। চলো। চলো। চলো। জোরাজুরি করতে লাগল। আমরাও যেতে রাজি না। 

শেষ পর্যন্ত বলল, আমি সাধারণ মানুষ, তাই হয়তো গেলে না। এখানে ওই দিকে খাবার দোকান আছে। ও ব্যাটা ডাকাত। খাবারও ভালো না। আর এই নেও। একটা তসবিহ উপহার দিয়ে লোকটা চলে গেল মনমরাভাবে।

ইস্ফাহানেই এক জয়গায় যাব। বাসের জন্য দেরি করছে। এ সময় একটা বাস এসে থামল। কোথায় যাব জানতে চাইল। বলল, ওঠো। সাঁই সাঁই করে চালিয়ে নিয়ে আসল। ভাড়া দিতে গেলাম। নিল না। এ কেমন আজব কথা! জোরাজুরি করলাম। জবাব দিল, তোমাদের বিদেশি দেখে নিয়ে এসেছি। দেখো আমার ডিউটির সময় এখন শুরু হয়নি। ভাড়া নেব কীভাবে! এমন কথা জন্মেও শুনিনি। ডিউটির সময় শুরু হয়নি কিন্তু গাড়িতে চড়িয়ে আনা যাবে। কিন্তু ভাড়া নেওয়া যাবে না! ইস্ফাহানে আইআরআইবির খওবগা ডরমিটরিটি ছিল বিশাল। কয়েক কক্ষওলা দোতালা বাসার পুরোটাই আমরা চারজন ভোগ করেছি। এক সপ্তাহ। সাথে আরও দু-চারজন নিয়ে গেলে অসুবিধা হতো। কিন্তু থাকার জন্য কোনো ভাড়া দিতে হয়নি। মাগনা। খাওয়া? অফিসের খাবার ঘর থেকে পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল স্থানীয় হেরাসাতদের সদস্যরা। তেহরানে ফেরার টিকিট কাটতে টার্মিনালে যাব শুনে আকাশ থেকে পড়েন হেরাসাতের সদস্যরা। টিকিট এখানে ওরা দিয়ে যাবে। ফোন করে কর্তৃত্বের সুরে। ওপাশ থেকে প্রথমে বোধ হয় আমতা আমতা করছিল। পরে রাজি হয়ে যায়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে টিকিট দিয়ে টাকা নিয়ে যায়।

জীবনে প্রথম মেট্রোতে চড়ার অভিজ্ঞতা হয় তেহরানে। তা-ও বিনা ভাড়ায়। মেট্রো তখন সব চালু হয়েছে। ছোট ছেলেটার বয়স পাঁচের নিচে। বাসে টিকিট লাগে না। তিনটা টিকিট কাটলাম। ওরটা কাটব কি না, জিজ্ঞাসা করতে গেলাম গেটের লোকদের কাছে। ওরা গেট খুলে দিয়ে বলল যাও, তোমাদের টিকিট কাটতে হবে না। আমাদের মেহমান তোমরা। টিকেট পাঞ্চ করার উপায়ই রইল না। উঠলাম বিনা টিকেটে। ফেরার পথে সেই টিকিট ব্যবহার করেছি।

বাসে ছেলেকে নিয়ে দুই আসন নিয়ে বসেছি। ভাড়া দিতে হবে কি না জিজ্ঞাসা করায় জবাব পেলাম, ওর আবার ভাড়া কিসের।–ও তো সিটে বসে আছে। বললাম। বাচ্চা বলে কি ওর হক নাই? লোকটি এরপর অনেক আস্তে আস্তে বলল, ইশ! ইরানিরা কেন যে এদের কাছ থেকে শেখে না। তেহরানে অনেকবারই বিদেশি বলে খাতির করে বাসের ভাড়া নেয়নি। 'মেহমানে মা বাসিত'–আমাদের অতিথি বলে বিদায় করে দিয়েছে। 

২০২২ সালে তেহরান থেকে চূড়ান্তভাবে ঢাকায় ফিরি। সে সময় রাহান মানে রেলস্টেশন এলাকায় যাই। আমাদের এক সাবেক সহকর্মীর বাসায়। রাস্তা হারানোতে বিশেষজ্ঞ আমি। সাধারণভাবে দেখেছি, এক-দেড় শ বার যাতায়াত করলে আর সে রাস্তা হারানোর আশঙ্কা ৬০-৭০ ভাগ কমে যায়। ওই সহকর্মীর বাসা থেকে বের হয়ে যথারীতি রাস্তা গুবলেট করে ফেললাম। বিআরটি বাসের অনেকগুলো স্টেশন আশপাশে। আন্দাজে আন্দাজে একটাতে গেলাম। 

কার্ড মারার আগে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটাকে জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কি আজাদির দিকে যাবে? আমার জবান শুনে মধ্যবয়সী ইরানি হাসিমুখে জানতে চাইল, কোন দেশের বাসিন্দা?–বাংলাদেশ।–ও তাই নাকি। 'মেহমানে মা বস' কয়েকবার বলতে বলতে আমাকে কার্ড মারতে দিল না। তার দিক দিয়ে একরকম ঠেলে বিআরটি টার্মিনালে ঢুকিয়ে দিল। বলল, এটাই আজাদি যাবে।

আমাদের দেশে ডাক্তারদের নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। ইরানে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সুনাম শুনেছি মুক্তকণ্ঠে। ৯/১১-এর আগে। আমার জন্য একটা ২৮ মিমি লেন্স এবং দুই ভাগনের জন্য খেলনা কানাডা থেকে পাঠিয়েছে তাদের ছোট মামা। কেন্দ্রীয় পোস্ট অফিস থেকে আনতে গিয়ে বসে আছি। আমার পরের মানুষগুলো চলে যাচ্ছে আর আমি বসেই আছি। শেষ পর্যন্ত না থাকতে পেরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে গেলাম। ইরানিরা সাধারণত খুবই মৃদুভাষী। সে চড়া গলায় বলল, হবে না। তুমি বাংলাদেশি, তোমারটা এত সহজে হবে না।–কেন। ভয় পেলাম। ঘাবড়ে গেলাম।–ওই সব কেনোফেনো ছাড়ো। আমি শিরাজের (ঠিক মনে নেই) মানুষ। তোমাগো দেশি মানে বাংলাদেশি এক ডাক্তার ছিল। বাপরে কী ভালো মানুষ। আর কি দায়িত্ববোধ। বাপস। আর সেই দেশের মানুষ তোমারে চা না খাইয়ে তোমার কাজ করে দেব। এতই সোজা। বসো। চা আসতে দেরি হচ্ছে তাই আটকে গেছ। চা এল। লাল চা। কান্দ মুখে পুরে চায়ে চুমুক দেয় ইরানিরা। কান্দ হলো কিউব সুগার। তার বদলে খেজুর হতে পারে। হতে পারে শুকনা ডুমুর বা মিষ্টি অন্য কিছু। লাল চা আমি চিনি ছাড়াই খাই। সাথে অন্য কিছুও ছিল। মনে নেই। চায়ে শেষ চুমুক দেওয়ার সাথে সাথে লোকটা বলল, তোমার কাজ শেষ। এই যে ওখানে জমা দাও, তোমার জিনিস বুঝে নাও। খোদা হাফেজ। এক খণ্ড কাগজ এগিয়ে দিল। 

ওয়ালিআসর তেহরানের সবচেয়ে সুন্দর সড়ক। বিপ্লবের আগে এর নাম ছিল পাহলভি অ্যাভিনিউ। ইরানি নওরোজের আগেভাগে একবার ওদিকে গেছি। ছোট ছেলে তখনো মাঝে মাঝে কোলে ওঠে। রাত হয়ে গেছে। গাড়ি পাচ্ছি না। কী করি! হঠাৎ করে পেলাম একটা। চাররাহে ওয়ালিআসর মানে চার রাস্তার মোড় থেকে ওয়ালি আসর চত্বরে যাবে। অনেকটা রাস্তা। ওখান থেকে সাজমানে বারনামে জুনুবি এলাকায় আমাদের বাসার যাওয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যাবে। ট্যাক্সিওলা প্রথমে চড়া ভাড়া হাঁকল। রাজি হলাম। কথায় কথায় জানতে চাইল কোন দেশের?–বাংলাদেশ। লোকটা বলে উঠল, ও আল্লাহ। তারপর বাংলাদেশি এক ডাক্তার ছিল, তার গল্প জুড়ে দিল। ওর মতো মানুষ হয় না। সাংঘাতিক। রাত-বিরাতে রোগী নিয়ে গেলেও এতটুকু বিরক্ত হতো না। ইত্যাদি ইত্যাদি।

নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে ভাড়া দিতে গেলাম। নেবে না। ইরানিরা ভদ্রতা করে দাম বা ভাড়া নিতে না করে। দিলে শোমা না দারে বলে। কিন্তু এটা ভদ্রতা নয়। গাড়িচালককে অনুরোধ-উপরোধ করেও ফয়দা হলো না। ভাড়া নিলই না।

ইরানে জিনিস কিনতে গিয়ে ঠকেছি। বিদেশি দেখেই দর বাড়িয়ে দিয়েছে। মুলামুলির চল আছে। কিন্তু ১০ টাকার জিনিস ১০০ টাকা চাইলে দরদাম করে আর কতই বা কমাব? এ ক্ষেত্রে স্মরণযোগ্য হলো দাস্তকেস বা দাস্তানা কেনার অভিজ্ঞান। আমি এবং আমার আরেক বন্ধু দুজনে মিলে দরদাম করে কিনলাম এক দাস্তানা। বাসন-পেয়ালা ধোয়ার জন্য। ৫০ টাকার দাস্তানা আমরা না বুঝেই ৫০০ টাকায় কিনে এনেছিলাম। এ রকম মহাঠকা আর হয়নি। বিক্রেতা ছিল এক তরুণী। এর কিছু পরই দেখেছি দোকানটি উঠে গেছে। তাতে অনুমান করি, অন্যদেরও হয়তো ঠকিয়েছে। না হলে ও জায়গা থেকে দোকান উঠে যাওয়ার কোনো কারণ নেই।

তেহরানের বেশির ভাগ সময় কেটেছে সাজমানে বারনামে জুনুবিতে। এখান থেকে সাদেকিয়া বা তেহরান মেট্রো স্টেশন বেশি দূরে নয়। সাদেকিয়া থেকে বাস এবং খেয়া-ট্যাক্সি যাতায়াত করে। ইরানিদের অর্ধেক জীবন লাইনে লাইনে কেটে যায়। রুটি কেনা থেকে হাসপাতাল–সবখানেই কিউ। এ নিয়ে ঠেলাঠেলি নেই। আমার বড় ছেলেটার বয়স তখন পাঁচেরও কম। তাকে নিয়ে কিছু একটা কিনতে গিয়েছি সাদেকিয়ায়। ফেরার পথে বিশাল লাইন। এর মধ্যে এক লাস্যময়ী ইরানি নারী এসে আমার প্রায় গা ঘেঁষে দাঁড়াল। যেন আমার সঙ্গী। 

কচি শিশু রাইয়ানের নজরও এড়াল না ব্যাপারটি। বলল, বাবা দেখো।–হ্যাঁ বাবা, দেখেছি। বললাম। কিছুই বললাম না। ঠিক ট্যাক্সিতে চড়ার আগে–ঘাড় ফিরিয়ে ও নারীকে প্রশ্ন করলাম, খানম শোমা? ভদ্র তুমি? পিছ থেকে প্রশ্নের বাণ তেড়ে এল। এ নারী তোমার সাথে নয়?–না। বাকিটুকু ইরানিরাই করল। নারীটি আমার দিকে আগুনঝরা চোখে তাকাল। পারলে পুড়িয়ে ফেলে। কি যায় আসে তাতে। বাকিটুকু করল ইরানিরা। হালকা হইচই করে তাকে লাইনের শেষ চলে যেতে বাধ্য করল। এবার ছেলেকে বললাম, বাবা দেখলে। সে-ও পণ্ডিতের মতো মাথা নাড়ল।

প্রতিবছর দেশে ফেরার বিমানের যাতায়াতের ভাড়া আইআরআইবি দেয়। কেউ না গেলে ভাড়ার অর্ধেক টাকা দেওয়া হয়। তা-ও বছর শেষে দেওয়া হবে। ঠিক সময় দরখাস্ত না করলে টাকা পাবে না। আমি একবার আসিনি। যথারীতি দরখাস্ত-মরখাস্ত দিয়ে গেলাম টাকা তুলতে। দিন কয়েক ঘোরাঘুরি চলল। একই কথা। আগামী সপ্তাহে আসো। প্রতিবার ঘটনা শুরু থেকে বলতে হয়। কী যন্ত্রণা। পরের সপ্তাহে গেলাম। ভিন্ন তরিকা ধরলাম। বললাম, আমার বিমান বিক্রির টাকাটার কি হলো? পুরো ঘরে বজ্রপাত হলো। কয় কি খারেজি (বিদেশি)! বিমান বিক্রি! কর্মীদের বেশির ভাগ নারী। এক-দুইজন পুরুষ। আমি নির্বিকার। হ। হ। বিমান বিক্রিই।–একটু ব্যাখ্যা দেবে? দিলাম। ও বিমানের টিকিটের টাকা! পুরো ঘর হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। তবে অনেকেরই ঠোঁটের কোনায় হালকা হাসি ঝুলছে। ঝটপট কাগজপত্র ঘাঁটল। কম্পিউটারের বোতাম টিপল। তারপর বলল, আগামীকাল পেয়ে যাবে।

পরদিন গেলাম একই দপ্তরে। আমি কিছু বলার আগেই আমাকে দেখে এক নারী তড়িঘড়ি বলে দিল, পাশে হিসাবদারি, হিসাব বিভাগের মুদিরের কাছে যাও। চেকটা পাবে। গেলাম। আমি কিছু বলার আগেই মুদিরের মুনশি, পিএ, নারীটি জানাল, চেক ভেতরে গেছে সই হওয়ার জন্য। দেরি করলে হাতে হাতে নিতে পারো। না হলে শেষ বেলায় ব্যাংকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বুঝলাম বিমান বিক্রির ঘটনা অনেক দূর গড়িয়েছি। দেরি করলাম না। বিকেল নয়। দুপুরের পরই টাকাটা জমা হওয়ার এসএমএস এসে গেল।

প্রতি রেডিওতে একজন বা দুজন তাহিয়েকুন্দান্দে থাকেন। তারা সাধারণভাবে ইরানি হয়ে থাকেন। অনুষ্ঠান জাবদ, রেকর্ড করা, অুনষ্ঠানমালা সাজানো ইত্যাকার কাজ তারা করেন। বাংলায় তাহিয়েকুন্দান্দেকে প্রযোজক বলা হয়। তবে সত্যিকারভাবে রেডিওর প্রযোজকদের তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। যাকগে, আমাদের রেডিওতে আমি থাকা অবধি তিন নারী প্রযোজককে পেয়েছি। দ্বিতীয় প্রযোজক ছিলেন খানমে আতিয়া হাজিআগা। নওরোজের আগেভাগে প্রযোজকদের কাজ আসমান পরিমাণ বেড়ে যায়। তার ওপর সেদিন তুষারে নাস্তানাবুদ হয়েছে খানমে আতিয়া। কাজ করতে করতে বলল, মরেই যাব।

আমার টেবিলের কাছেই বসে কাজ করছিল। বললাম, সত্যি মরে যাবে?

–অবশ্যই, কাজের যা চাপ। সত্যি সত্যিই মরে যাব। –তাহলে এক কাজ করো, তোমার বরের মোবাইল নম্বরটি দাও। –কী করবে? বিস্ময় স্বরে। বললাম, আহা! তুমি মরে গেলে তোমার এই ভালো বর বেচারার জন্য পাত্রী দেখতে হবে না। –কী বললা? আমার বরের জন্য পাত্রী দেখবে আমি মরে গেলে? –অব্যশ্যই। ভালো পাত্রী দেখব। তোমার কাপড়চোপড়গুলো যেন পরে। নতুন নতুন কাপড় কিনে তোমার বরের খরচ যেন না বাড়ায়। এ কথা বলল আমাদের আরেক সহকর্মী মুহাজিদুল ইসলাম। –এ কেমন কথা? তোমরা আমার সহকর্মী না? তোমাদের একটু দুঃখ হবে না? –আরে সে দুঃখ থেকেই তো চাই না তোমার ভালো বরটা কষ্ট পাক। আহা বেচারা। এমন জবাব শুনে খানমে আতিয়া হাজিআগা কয়েক সেকেন্ড থ হয়ে বসে রইল। তারপর চড়া সুরে বলল, তাহলে মরবই না। আতিয়া তার কথা রেখেছিল। এরপর কাজের যতই চাপ পড়ুক না কেন, আর 'মরেনি'।

শোয়ায়ে দিলে কিলাতে অসুবিধা নেই–প্রবচনের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছি একবার। সাদেকিয়া থেকে মির দামাদ ব্যাংকে যাব বৈদেশিক মুদ্রা তুলতে। ট্যাক্সির লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এর মধ্যে ট্যাক্সি এল উল্টা দিক থেকে। কাজেই লাইল ভেঙে ছুটলাম। চারজন বসতেই গাড়ি ছাড়ল। পেছনের আসনের মধ্যে বসেছি। ডান পাশের ইরানি আমাকে বলল, শোনো এটা মুম্বাই বা দেহলি নয়। বুঝলাম আমাকে 'হিন্দের' ভেবেছে। আমি কথাটার মানে ধরতে পারলাম না। –কী ব্যাপার?

–এখানে ট্যাক্সিতে লাইন ধরে উঠতে হয়। তুমি লাইন ভেঙে উঠেছ।

–না। আমি তিন নম্বরে ছিলাম। বিনীতভাবেই বললাম। লোকটা ঝাঁজ নিয়ে বলল, না। তুমি লাইনে ছিলে না। চুপ রইলাম আমি। আমার বামের ইরানি এবার ওই লোককে প্রশ্ন করল, তা তুমি লাইনের কোথায় ছিলে? এক নম্বরে ছিল ওই লোক। ড্রাইভারের পাশে বসেছে। (ইরানে চালকের পাশেই ভিআইপিরা বা গুরুজনেরা বসেন। পেছনের আসনে বাদবাকিরা। ট্যাক্সিতে লাইনের আগের ব্যক্তি ওই আসনের দাবিদার।) 

লোকটা বলল, আমি লাইনে ছিলাম। এবারে দ্বিতীয় লোকটা একটু রেগে গেল। বলল, এক নম্বরে ওই লোক ছিল, দুই নম্বরে আমি, তিন নম্বরে ছিল এই আগায় খারেজি (জনাব বিদেশি), চার নম্বরের মানুষটিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে তুমি উঠেছ। লোকটি কিছু একটা বলতে গেল। সামনের যাত্রী বলল, তোমার লজ্জা পাওয়া উচিত। কথা বলা থামাও। আমি দেখলাম এই তো সুযোগ, বললাম, আগাজুন (প্রিয় মহোদয়) তেহরানে শৃঙ্খলা বলে কিছু আছে। এটা ইরান। গোটা ইরানেও তা-ই। মনে রেখো। এমন কাজ আর কোরো না। সবাই হেসে উঠল। 

চালকও একফাঁকে ঘাড় ঘুরিয়ে লোকটাকে দেখে নিল। 

দেখল আমাকেও। চোখে চোখে সম্মতি দিল।

 

Related Topics

টপ নিউজ

ইজেল / ইরান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ভারতে আটকে থাকা ব্রিটিশ এফ-৩৫ ফাইটার জেটের রহস্য কী?
  • রীনা আর আমার বিয়ে বরবাদ করে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদ: আমির খান
  • স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল থাকায় সবজি রপ্তানি তিনগুণ বেড়েছে
  • ২০ বছর ধরে কালু মিয়ার কালাভুনায় মজে আছে সিনেপাড়া
  • মুরাদনগরে দুই ভাইয়ের বিরোধের জেরে মব সৃষ্টি ও নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ানো হয়: র‍্যাব
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদোন্নতি বোর্ড স্থগিত, অবরুদ্ধ ভিসি

Related News

  • আইএইএ’র সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক স্থগিতের আইন অনুমোদন ইরানের প্রেসিডেন্টের
  • হরমুজ প্রণালীতে মাইন বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল ইরান: মার্কিন সূত্রের দাবি
  • জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে: ইরানের প্রেসিডেন্ট
  • মার্কিন হামলায় ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দেখাচ্ছে ইরান, দাবি ওয়াশিংটন পোস্টের
  • তেহরান শহরের কাল্পনিক বৃষ্টির গল্প 

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ভারতে আটকে থাকা ব্রিটিশ এফ-৩৫ ফাইটার জেটের রহস্য কী?

2
বিনোদন

রীনা আর আমার বিয়ে বরবাদ করে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদ: আমির খান

3
বাংলাদেশ

স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল থাকায় সবজি রপ্তানি তিনগুণ বেড়েছে

4
ফিচার

২০ বছর ধরে কালু মিয়ার কালাভুনায় মজে আছে সিনেপাড়া

5
বাংলাদেশ

মুরাদনগরে দুই ভাইয়ের বিরোধের জেরে মব সৃষ্টি ও নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ানো হয়: র‍্যাব

6
বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদোন্নতি বোর্ড স্থগিত, অবরুদ্ধ ভিসি

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net