Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Monday
June 02, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
MONDAY, JUNE 02, 2025
‘আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে’

ইজেল

সৈয়দ মূসা রেজা
19 May, 2025, 02:55 pm
Last modified: 19 May, 2025, 03:11 pm

Related News

  • তরুণদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান ডা. জুবাইদার
  • চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির অভিযোগ
  • যে কারণে ভ্যান গখ এক পোস্টম্যান ও তার পরিবারের ২৬টি প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন
  • প্রথম বাংলা ক্যালকুলেটর ‘ধারাপাত’!
  • বিক্রির জন্য পান্না: তালেবানরা অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে মাটির নিচে নজর দিচ্ছে

‘আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে’

বিজ্ঞানের চোখে রং আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য। ইতিহাসের চোখে এক বিপ্লব। আর সংস্কৃতির চোখে পরিচয়ের প্রতীক। রং একদিকে পদার্থ, অন্যদিকে অনুভব। সে ইতিহাসের সাথি। বিজ্ঞানের আবিষ্কার। আর সংস্কৃতির রূপ। একটা রঙে আমরা যা দেখি, তা আসলে একটা গল্প। যেখানে মিশে আছে আদিম গুহার আঁচড়। রসায়নবিদের ভুল। এক ফলের নাম বিভ্রান্তি। এমনকি রাজনীতি এবং বিদ্রোহও। ভাবা যায়! রং শুধু চোখের দেখা নয়, এটা একটা অভিজ্ঞতা। একটা ভাষা, একটা ইতিহাস।
সৈয়দ মূসা রেজা
19 May, 2025, 02:55 pm
Last modified: 19 May, 2025, 03:11 pm

রঙের রাজ্যে: ইতিহাস, বৈজ্ঞানিক কল্পনা আর সাংস্কৃতিক অনুভূতির অভিযাত্রা

একটা সময় রং ছিল শুধুই আলোর খেলা, প্রকৃতির ক্যানভাসে ছড়িয়ে থাকা অজানা ছায়া। কিন্তু মানুষের চোখ আর মন যখন রঙের পেছনের গল্প খুঁজতে শুরু করল, তখন জন্ম নিল সংস্কৃতি, বিজ্ঞান আর কল্পনার মিশেলে তৈরি এক রঙিন ইতিহাস। আমরা প্রতিদিন রং দেখি। তবুও তার গভীরতা নিয়ে ভাবি না। এক টুকরো নীল আকাশ বা সবুজ পাতায় চোখ বোলানোর মুহূর্তে আমরা বুঝতে পারি না, এই রং শুধু চোখের ধাঁধা নয়–এ এক ঐতিহাসিক, বৈজ্ঞানিক আর সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গের জটিল জাল। প্রাচীন মানুষ যখন দেয়ালে এবং গুহায় ছবি আঁকত, তখনো রং ছিল একধরনের ভাষা। বিজ্ঞানের চোখে রং আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য। ইতিহাসের চোখে এক বিপ্লব। আর সংস্কৃতির চোখে পরিচয়ের প্রতীক। রং একদিকে পদার্থ, অন্যদিকে অনুভব। সে ইতিহাসের সাথি। বিজ্ঞানের আবিষ্কার। আর সংস্কৃতির রূপ। একটা রঙে আমরা যা দেখি, তা আসলে একটা গল্প। যেখানে মিশে আছে আদিম গুহার আঁচড়। রসায়নবিদের ভুল। এক ফলের নাম বিভ্রান্তি। এমনকি রাজনীতি এবং বিদ্রোহও। ভাবা যায়! রং শুধু চোখের দেখা নয়, এটা একটা অভিজ্ঞতা। একটা ভাষা, একটা ইতিহাস।

রংধনুতে নিউটনের গল্প না শোনালে পুরো মজা মিলবে না। প্রথম কথা, রংধনু আসলে সাত রঙের নয়। এটা একটা অবিচ্ছিন্ন বর্ণালি। যেখানে রঙের সীমা টানা যায় না। কিন্তু ১৭০৪ সালে স্যার আইজ্যাক নিউটন ঠিক করলেন, রংধনুতে সাতটি রং থাকবে। কারণ, তিনি 'সাত' সংখ্যাটিকে রহস্যময় এবং পরিপূর্ণ বলে ভাবতেন। তাই লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, ইনডিগো আর বেগুনি–এই সাত রঙে থেমে গেল রংধনুর ব্যাখ্যা। আমেরিকান শিশুরা শেখে 'রয় জি বিভ' (Roy G. Biv), ব্রিটিশ শিশুরা মুখস্থ করে 'রিচার্ড ইয়র্ক গেভ ব্যাটেল ইন ভেইন'। আমরাও শিখি  বর্ণালিতে আলো সাতটি রঙে ভাগ হয়ে যায়। এই সাতটি রং হচ্ছে বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। বেনিআসহকলা। অথচ 'আই ক্যান সিং আ রেইনবো' গান শুনলে শিশুদের মাথা গুলিয়ে যায়–সেখানে আছে গোলাপি, পার্পল, আবারও কমলা।

এই দোটানাই বোঝায়–রং প্রকৃতির নয়, বরং সংস্কৃতি এবং মননের ফসল। এই রং আমাদের বলে দেয় আমরা কারা, কীভাবে ভাবি, অনুভব করি, আর কোথায় যাচ্ছি। তাই রং নিয়ে ভাবা মানে, জীবন, ইতিহাস, বিজ্ঞান আর সংস্কৃতি নিয়ে গভীরভাবে ভাবা। আর সে ভাবনার কোনো শেষ নেই।

মিসর, হিমালয়ান উপমহাদেশ এবং চীনে রং হয়ে উঠেছিল ধর্মীয় আর রাজনৈতিক প্রতীক। মিসরের রাজারা 'ল্যাপিস লাজুলি' পিষে তৈরি করতেন মূল্যবান নীল রং, যা দেবী ইসিসের গায়ে চিত্রিত হতো। এই রং এতটাই দামি ছিল যে তা শুধু ফেরাউনের জন্য বরাদ্দ ছিল।

ভারতের আয়ুর্বেদ ও ধর্মীয় চর্চায় রঙের ব্যবহার ছিল সর্বব্যাপী। কুমকুম, হলুদ, নীল–সবই শুধু প্রসাধন নয়, ধর্মের প্রতীক। আবার চীন দেশে লাল রং ছিল সমৃদ্ধি, সৌভাগ্য আর রাজতন্ত্রের প্রতীক। সম্রাটের পোশাকেও নির্দিষ্ট রঙের প্রথা ছিল।
প্রাচীন রোমেও রঙে ছিল শ্রেণি বিভাজনের ছাপ। 'Tyrian purple' নামের একধরনের গাঢ় বেগুনি রং ছিল এতই দুষ্প্রাপ্য যে শুধু রোমান সম্রাটই তা পরতে পারতেন। এক কিলোগ্রাম রং তৈরির জন্য হাজার হাজার সামুদ্রিক ঝিনুকের নির্যাস লাগত। এই রং হয়ে উঠেছিল আধিপত্যের প্রতীক।

লালের রয়েছে উষ্ণতা আর প্রাচীনতার ঘ্রাণ। রঙের ইতিহাস শুরু হয়েছিল লাল দিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লমবোস গুহায় পাওয়া গেছে এক টুকরা ওকার, তাতে খোদাই করা ত্রিভুজ আর রেখা, ৭৫ হাজার বছরের পুরোনো। সেখানেই খুঁজে পাওয়া গেছে একটি রং মেশানোর 'কারখানা'। আদিম কালের ওই কারখানায় লাল রং তৈরি হতো গেরিমাটি ও হাড়ের চর্বি মিশিয়ে।

প্রতিটি সমাজেই কালো আর সাদা বাদে লাল রঙের নাম প্রথম এসেছে। এর প্রতীকী মানে–রক্ত, শক্তি, উর্বরতা, যৌবন। মানুষ রঙের মধ্যে প্রথম ভালোবেসেছিল লালকেই।

নীল বলতে বোঝায় আকাশের মতো নির্ভরতা, অথচ ভাষাহীন। আজকে আমরা যাকে 'ব্লু' বা 'নীল' বলি, সেটা একসময় কোনো রংই ছিল না। প্রাচীন গ্রিক, হিব্রু, চীনা ভাষায় নীলের আলাদা নামই ছিল না। নীলকে সবুজেরই একটা শেড বা ছায়া ধরা হতো। বাংলাদেশে এখন অনেকে কথ্য ভাষায় বিশেষ করে গ্রামে নীল বোঝাতে সবুজ শব্দটি ব্যবহার করেন!

তারপর আজও নারী-পুরুষনির্বিশেষে নীল পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় রং। কারণ, এটা মনকে শান্ত করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নীল মলাটে আই কিউ পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা লাল মলাটের তুলনায় ভালো করেছে। কারণ, নীল মানেই আকাশ, পানি, হ্রদ, নৈঃশব্দ আর ভারসাম্যের ছবি। নীল যেন মনকে ঠান্ডা করে, চিন্তাকে প্রসারিত করে।

আলতামিরার রঙিন গুহাচিত্র, ১১,০০০ খৃষ্টপূর্ব।

হলুদ রঙের রয়েছে দুমুখো চরিত্র–বিদ্বেষ ও বিদ্রোহ। এ রঙের ইতিহাস বিষণ্ন। মধ্যপ্রাচ্যে এক সময় ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের হলুদ ব্যাজ পরতে বাধ্য করা হতো। হলুদকে অবিশ্বাসীদের রং মনে করা হতো। এই ধারণা পৌঁছায় ইউরোপে, ব্রিটেনে এবং অবশেষে নাৎসি জার্মানির 'হলুদ তারা' বা 'ইয়েলো স্টার' পর্যন্ত। অন্যদিকে হলুদ সাংবাদিকতা? তার গুন্ডামি দেখেছি প্রায় ১৭ বছরের স্বৈরডাকিনীর রাজত্বে।

তবুও এই রং আবার বেছে নেওয়া হয় বিদ্রোহের প্রতীক হিসেবে। ১৮৬৭ সালে কানসাসের নারীরা ভোটাধিকার আন্দোলনে হলুদ ফিতা বাঁধে। কারণ, তাদের সূর্যমুখী অঙ্গরাজ্যের ফুল। ১৯৭৩-এর গান 'টাই আ ইয়েলো রিবন রাউন্ড দি ওল ওক ট্রি' এই প্রতীককে আবার জনপ্রিয় করে তোলে। এই হলুদ ফিতা বা রিবন ফিলিপাইন, হংকং আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিক্ষোভে নতুন অর্থ পায়।

সবুজ একাধারে প্রাকৃতিক, আবার বিষাক্ত। সবুজ মানেই প্রকৃতি, বন, পাতা। কিন্তু এ রঙের গল্পেও আছে অন্ধকারের ছোঁয়া। এটাও ঈর্ষা, হিংসা আর রোগের প্রতীক। কমিক বইয়ে বিষ বোতলে সবুজ রংই আঁকা থাকে!

কিন্তু সেটা শুধু গল্প নয়, বাস্তবও। ১৭৭৫ সালে শিলের সবুজ (Scheele's green) নামে এক ধরনের রঞ্জক তৈরি হতো। এতে ছিল আর্সেনিক, যা ব্যবহার করা হতো ওয়ালপেপার, জামা, এমনকি মিষ্টির রং হিসেবেও।

সবুজাভ বিষ, পান কড়া নিষেধ।

নেপোলিয়নের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এক তত্ত্বের দাবি, ঘরের সবুজ ওয়ালপেপারের কারণেই বিষক্রিয়ায় মারা গিয়েছিলেন বীর নেপোলিয়ন। যদিও পরে জানা যায়, তাঁর আসল মৃত্যু হয়েছিল অন্ত্রের ক্যানসারে। তবুও শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ এই আর্সেনিক-ভরা সবুজ রং ব্যবহার করে গেছে।

কমলা নিয়ে আক্ষরিক বিভ্রান্তি। ফলের নামে রং। কমলা (অরেঞ্জ)–এটাই একমাত্র রং, যার নাম এসেছে এক ফল থেকে। চীনে শুরু, রেশম সড়ক ধরে ভারতে, তারপর ফার্সি 'নারাং', আরবি 'নারাঞ্জ', স্প্যানিশ 'নারাঞ্জা'। ইংরেজিতে এসেছিল 'আ নারাঙ্গা'। পরে ভুলে হয়ে গেল 'আন অরেঞ্জ'।

তার আগে ইংরেজিতে এই রংকে বলা হতো 'জিওলুরিড'–মানে হলুদ-লাল। কিন্তু কমলা এসে সব বদলে দিল। আজও কিছু কিছু ভাষায় ফল আর রঙের জন্য আলাদা শব্দ ব্যবহার হয়। আফ্রিকানসে রং হলো 'ওরাঞ্জে', ফল হলো 'লেমোয়েন'। মজার ব্যাপার হলো কিছু ভাষায়, যেমন হিম্বা বা পিরাহা, এই রঙের কোনো নামই নেই!

কমলা একসময় রঙ হিসেবে পরিচিত ছিল না, রঙ থাকলেও।

বেগুনির রাসায়নিক কল্পনা, রাজকীয় থেকে সাধারণের রং হয়ে ওঠা। বেগুনি ছিল রাজাদের রং; কারণ, এটা তৈরি করা ছিল বড় ব্যয়বহুল। প্রাচীনকালে এক গ্রাম টাইরিয়ান বেগুনি তৈরি করতে লাগত ১২,০০০ সামুদ্রিক শামুক! বেগুনি রং ইতিহাসের প্রথম কৃত্রিম রং। ১৮৫৬ সালে উইলিয়াম হেনরি পারকিন নামের এক কিশোর রসায়নবিদ ম্যালেরিয়ার ওষুধ বানাতে গিয়ে ব্যর্থ হন। কিন্তু ভুল করে বানিয়ে ফেলেন এক চমৎকার বেগুনি রঞ্জক। এই আবিষ্কার তাকে ধনী করে, আর বেগুনি হয়ে যায় সাধারণ মানুষের রং। এই আবিষ্কার ছিল 'মভ' (mauve) নামে পরিচিত, যা ফ্যাশনজগতে বিপ্লব ঘটায়।

গোলাপি রং শুধুই মেয়েলি না সবার? গোলাপিকে আমরা মেয়েলি রং ভাবি, কিন্তু শুরুতে এমন ছিল না। ১৯১৮ সালে ব্রিটিশ ম্যাগাজিন লেডিস হোম জার্নাল বলেছিল, গোলাপি ছেলেদের জন্য আর নীল মেয়েদের জন্য। কারণ, গোলাপি ছিল 'শক্তিশালী' রং। কিন্তু ১৯৫০-এর দশকে আমেরিকান বিজ্ঞাপন এই ধারণা বদলে দেয়। গোলাপি হয়ে যায় মেয়েলি রং। নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, নীল সবার পছন্দ। কিন্তু গোলাপি মেয়েদের বেশি টানে। তবে এটা কি সত্যিই জন্মগত, নাকি সংস্কৃতির প্রভাব? প্রশ্নটা এখনো খোলা।

রঙের বিজ্ঞান হলো যোগ-বিয়োগের খেলা। জে সি লে ব্লন নামে একজন আবিষ্কারক রঙের আরেকটা দিক তুলে ধরেন। তিনি দেখান, লাল, হলুদ, নীল মিশিয়ে সব রং তৈরি করা যায়। এই ত্রিবর্ণ মুদ্রণ পদ্ধতি আজকের রঙিন ছাপার ভিত্তি। লে ব্লন বলেন, রং দুই ধরনের–অ্যাডিটিভ আর সাবট্রাক্টিভ। অ্যাডিটিভ রং আলো থেকে আসে, যেমন রংধনু বা টিভি স্ক্রিনে লাল, সবুজ, নীল মিশে সাদা আলো হয়। আর সাবট্রাক্টিভ রং আসে বস্তু থেকে, যেমন ছবি বা কাপড়ে নীল, লাল, হলুদ মিশে কালো হয়।

বর্ণালি বিশ্লেষণে পরিচয় চিহ্ন যেন রঙের আঙুলের ছাপ। ১৮৬৯ সালে হেনরি ই রস্কোর 'স্পেকট্রাম অ্যানালাইসিস' বই দেখায়, ধাতু পোড়ালে স্পেকট্রোস্কোপে তাদের রঙিন বর্ণালি দেখা যায়। প্রতিটি ধাতুর বর্ণালি আলাদা; যেন রঙের আঙুলের ছাপ। এই পদ্ধতি নতুন মৌল আবিষ্কারে সাহায্য করে আর কোয়ান্টাম তত্ত্বের দিকে এগিয়ে যায়।

ছদ্মবেশ মানে রঙের লুকোচুরি। অ্যাবট হ্যান্ডারসন থায়ার নামে এক শিল্পী প্রকৃতির রং নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি দেখান, প্রাণীরা রং দিয়ে শিকারিদের থেকে লুকায়। তার বই 'কনসিলিং কালারেশন' বলে, রং বিবর্তনের অংশ। যদিও তিনি সব রংকে ছদ্মবেশের জন্য ভাবতেন, তার ধারণা সামরিক ক্যামোফ্লেজের জন্ম দেয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান বিমানে 'লোজেঞ্জ ক্যামোফ্লেজ' তার তত্ত্বের ফল।

শেষ কথা হতে পারে, রং মানেই মানুষ। প্রতিটি রং একেকটি গল্প বলে। তার পেছনে আছে আবিষ্কারের ইতিহাস, ভাষার বিবর্তন, সংস্কৃতির চিহ্ন, এমনকি রাজনীতিও।

রং শুধু চোখে দেখা যায় না, এটা অনুভবে ধরা পড়ে। লাল মানে শুধু রক্ত নয়–স্মৃতি, যুদ্ধ, প্রেম। নীল মানে শুধু আকাশ নয়–শান্তি, স্বপ্ন। আর সবুজ মানে শুধু বন নয়–আশা ও বিপদের সীমানা।

রংগুলো আমাদের চোখের বাইরে গিয়ে ঢুকে পড়ে হৃদয়ে। ঠিক যেমন শিল্প, ঠিক যেমন জীবন।

বিজ্ঞানের চোখে রংকে দেখার তৎপরতা। যদিও প্রাচীন মানুষ রংকে জাদুময় ও প্রতীকী বিষয় হিসেবে দেখত, বিজ্ঞানের হাত ধরে রং পেল নতুন ব্যাখ্যা। আইজ্যাক নিউটনের হাত ধরেই প্রথম স্পষ্টভাবে বোঝা গেল যে সাদা আলো আসলে একাধিক রঙের সমাহার। ১৬৬৬ সালে একটি প্রিজমের সাহায্যে তিনি প্রমাণ করলেন–সাদা আলো সাতটি মৌলিক রঙে বিভক্ত হতে পারে: বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। এই পর্যবেক্ষণই রংকে আলো ও পদার্থবিদ্যার জগতে নিয়ে আসে।

পরবর্তী সময়ে জার্মান বিজ্ঞানী হার্মান ফন হেল্মহোল্টজ এবং টমাস ইয়াংয়ের মতো গবেষকেরা প্রমাণ করেন, আমাদের চোখের রেটিনায় তিন ধরনের কৌণিক কোষ থাকে, যেগুলো তিনটি মৌলিক রং–লাল, সবুজ ও নীল নিয়ে কাজ করে। এই তিনটির সংমিশ্রণেই আমরা পৃথিবীর সব রং দেখতে পারি। এই তত্ত্ব থেকে জন্ম নেয় আরজিবি আদল বা মডেল। একে আজকের ডিজিটাল স্ক্রিনের প্রাণ বলা যায়।

এ ছাড়া আরও এক ধাপ এগিয়ে বলা যায়, রং আসলে কোনো বস্তু নয়, রং হলো তরঙ্গদৈর্ঘ্য। আলো যখন কোনো বস্তুর ওপর পড়ে, বস্তুটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্য শোষণ করে এবং বাকি আলো প্রতিফলিত হয়। আমরা যে রং দেখি, তা আসলে ওই প্রতিফলিত আলোর তরঙ্গ। উদাহরণস্বরূপ, বিপ্লবের প্রতীক লাল পতাকা আসলে সব রং শোষণ করে শুধু লাল তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলিত করে। কিশোর বয়সে রং নিয়ে এক বেতার কথিকা শুনেছিলাম। সেখানে বলা হয়েছিল, স্বার্থপরের মতো যে সব রংকে গ্রাস বা শোষণ করল, সে হয়ে উঠল কালো। অন্যদিকে সব রংকে যে ফিরিয়ে দিল, দানের আনন্দে সে হয়ে উঠল শ্বেতশুভ্র। সে বেতার কথিকার লেখক কে ছিলেন, জানি না। পুরো কথিকাও শুনিনি। কিন্তু শেষ দিকে ওই পঙ্ক্তি এখনো স্মৃতিতে ঝলমল করছে। 

যা-ই হোক, এভাবেই বিজ্ঞান আমাদের চোখ খুলে দেয়। রং হলো আলো আর প্রতিফলনের খেলা, যার দর্শক আমরা।

বর্ণান্ধদের জন্য রঙের তিনটি প্লেট, ১৯৩৬, টোকিও।

রঙের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মানে রয়েছে। রং আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতিতে কতটা গভীরভাবে প্রোথিত, তা আমরা প্রাত্যহিক জীবনেই দেখতে পাই। ভারতীয় উপমহাদেশে লাল রং বিয়ের রং, উৎসবের রং। আবার একই লাল পাশ্চাত্যে হতে পারে বিপদের সংকেত। সাদা রং পশ্চিমা সংস্কৃতিতে নির্দোষতা ও শান্তির প্রতীক, কিন্তু পূর্ব এশিয়ায় সেটি শোকের চিহ্ন। উপমহাদেশে বিধবার পোষাক সাধারণভাবে সাদা। পশ্চিমে কনের বিয়ের পোশাক সাদা।

বাংলাদেশে পাঞ্জাবি বা শাড়িতে সাদা ধরা হয় শুদ্ধতা ও নিঃস্বার্থতার প্রতীক। আবার হিন্দুদের কাছে কালীপূজায় কালো রং হয় শক্তি ও রহস্যের প্রতীক। 'মোহররমের চাঁদ এল ঐ কাঁদাতে ফের দুনিয়ায়।/ ওয়া হোসেনা ওয়া হোসেনা তারি মাতম শোনা যায়।' তখন শোকের প্রতীক হয়ে আসে কালো। যদিও কালো রংও বিতর্কিত। ফ্যাশনে কালো মানে 'এলিগ্যান্স' বা গাম্ভীর্য। আবার কিছু সংস্কৃতিতে তা অশুভ। সবুজ ইসলামি বিশ্বে পবিত্র। অন্যদিকে পশ্চিমে পরিবেশবান্ধবতার প্রতীক। ইরানে রসুলের বংশধর বা সাইয়্যেদ বংশীয় আলেম বা ধর্মনেতারাই শুধু কালো পাগড়ি পরার এখতিয়ার রাখেন। অন্যদিকে একই বংশীয় সাধারণ মানুষ নিজ বংশের পরিচয় প্রকাশে সবুজ উড়নী ব্যবহার করেন।

কালচারাল স্টাডিজের ভাষায় বলা হয়, রঙের মানে নির্ধারিত হয় সাংস্কৃতিক চর্চা ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে। ফরাসি সাহিত্যিক মার্সেল প্রুস্ত একবার বলেছিলেন, The real voyage of discovery consists not in seeking new landscapes, but in having new eyes. এই 'new eyes' মানে নতুন রং দেখার চোখ; আর সেই চোখ প্রতিটি সংস্কৃতির কাছে আলাদা।

শিল্পকলায় রঙের ব্যবহার কখনো হয়ে ওঠে প্রতিবাদের ভাষা। যেমন ভ্যান গঘের 'তারাভরা রাত' বা 'Starry night'-এ নীল রং হয়ে ওঠে বিষণ্নতার প্রতীক। ২০ শতকের পপ আর্টে অ্যাঞ্জি ওয়ারহোল রংকে ব্যবহার করেন পণ্যের উন্মাদনায় আচ্ছন্ন এক সমাজের ভাষা হিসেবে। আবার আধুনিক পোশাকশিল্পে রং হয়ে ওঠে রাজনৈতিক বার্তার বাহক–উদাহরণস্বরূপ, পরিবেশবাদীদের সবুজ বা নারীবাদের বেগুনি।

রেনেসাঁ এনেছে রঙের শিল্পবিপ্লব। রেনেসাঁ যুগে শিল্পীরা রংকে নতুন চোখে দেখলেন। মাইকেলেঞ্জেলো, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মতো চিত্রকরেরা শুধু প্রকৃতি নয়, মনুষ্যচেতনার জটিলতা বোঝাতে ব্যবহার করতে লাগলেন রং। দ্য ভিঞ্চির 'দ্য লাস্ট সাপার' ছবিতে যেমন আলো-আঁধারির খেলা রঙের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে ঈশ্বর ও বিশ্বাসের টানাপোড়েন।
এই সময়ে রঙের উৎসে বৈজ্ঞানিক পরিবর্তন আসে। অয়েল পেইন্টের আবিষ্কার, নতুন রঞ্জক পদার্থের ব্যবহার এবং রঙের রাসায়নিক বিশ্লেষণ শুরু হয়। শিল্পীরা শুধু প্রকৃতি থেকে সংগৃহীত রঙের ওপর নির্ভর না করে রাসায়নিকভাবে রং তৈরি করতে শুরু করেন। এর ফলে রঙের দুনিয়া আরও উন্মুক্ত হয়।

রং কখনো জাতীয়তাবাদের রূপ নেয়–একটি পতাকার তিনটি রং আমাদের বলে দেয় এক দেশের ইতিহাস, সংগ্রাম ও মূল্যবোধ। এমনকি খেলাধুলার জগতেও 'নীল-ঘাম' বা 'সবুজ-মরু' শুধু দলের পরিচায়ক নয়, আবেগ ও স্বাতন্ত্র্যেরও পরিচয়। লাল-সবুজ বললেই বোঝা যায় বাংলাদেশ।

এই সব রঙের পেছনে যে বিজ্ঞান লুকিয়ে আছে, তার শুরু হয় স্যার আইজ্যাক নিউটনের হাতে। ১৬৬০-এর দশকে তিনি একটা প্রিজম দিয়ে দেখান যে সাদা আলো সাতটা রঙের মিশ্রণ–লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, ইনডিগো আর বেগুনি। নিউটনের এই আবিষ্কার আলোকবিজ্ঞানের দরজা খুলে দেয়। তিনি বলেছিলেন, যদি সূর্যের আলো শুধু এক রঙের হতো, তাহলে পৃথিবীতে শুধু একটা রংই থাকত।

কিন্তু নিউটনের আগে অ্যারিস্টটল ভেবেছিলেন, সব রং আসে সাদা আর কালো থেকে, আর এটা চার উপাদান–পানি, বায়ু, পৃথিবী, আগুনের সঙ্গে জড়িত। নিউটন এই ধারণা ভেঙে দেন। পরে গ্যেটে নিউটনের সঙ্গে তর্ক করেন; বলেন, রং শুধু বিজ্ঞান নয়, এটা মনের অভিজ্ঞতা। গ্যেটের 'থিওরি অব কালারস' শিল্পীদের মনে ধরে; কারণ, তিনি রঙের আবেগের কথা বলেন।

ডিজিটাল যুগে রঙের নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করছি আমরা। আজকের দিনে আমরা রংকে শুধু প্রাকৃতিক নয়, ডিজিটাল এক বাস্তবতায় অনুভব করি। সোশ্যাল মিডিয়া, ফটোশপ, ডিজিটাল আর্ট–সবখানে রং তৈরি হয় কোড দিয়ে। একটি ওয়েবসাইটের ব্যাকগ্রাউন্ড কালার হতে পারে #FF5733, যা আসলে একধরনের কমলা। এভাবে রং একদিকে হারাচ্ছে তার বাস্তবতার মাটি। আবার পাচ্ছে নতুন স্বাধীনতা–তরল, পরিবর্তনশীল, নিয়ন্ত্রিত।

এদিকে কালরাইজেশন টুল বা এআইয়ের সাহায্যে এখন পুরোনো সাদা-কালো ছবিকেও রঙিন করা সম্ভব। ১৯৪৭ সালের বিহারের পাথর কী মসজিদ এলাকার ছবি এখন যদি রঙিন করে দেখি, ইতিহাস যেন নতুনভাবে কথা বলে উঠবে।

রঙের এই ডিজিটালকরণ একদিকে প্রশ্ন তোলে–আমরা কি আসল রং দেখছি, না কল্পনার? আরেক দিকে তা উন্মোচন করে নতুন জগৎ, যেখানে বাস্তব ও কল্পনা মিলেমিশে যায়।

এমনকি সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পথে রয়েছেন, যেখানে অন্ধ মানুষও একধরনের সাউন্ড-টু-কালার ট্রান্সলেটর দিয়ে শ্রবণের মাধ্যমে রং 'অনুভব' করতে পারেন। প্রযুক্তির সাহায্যে রং এখন আর শুধু দৃষ্টির বিষয় নয়; বরং বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতার অংশ।

রং শুধু চোখের খেলা নয়। এটা আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি আর বিজ্ঞানের আয়না। নিউটনের প্রিজম থেকে গ্যেটের আবেগ, লে ব্লনের মুদ্রণ থেকে থায়ারের ছদ্মবেশ–রং আমাদের জীবনকে রাঙিয়ে দিয়েছে। প্রতিটি রঙের পেছনে লুকিয়ে আছে একটা গল্প, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা যে রং দেখি, তা শুধু আলো নয়, আমাদের মন আর সংস্কৃতির প্রতিফলন।

উপসংহারে বলা যায়, রং, এক বহুরৈখিক অভিজ্ঞতা। রং শুধু দৃষ্টির আনন্দ নয়। এটি একটি ঐতিহাসিক, বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা। রঙের মাধ্যমে আমরা ইতিহাসকে বুঝি, সংস্কৃতিকে চিহ্নিত করি, প্রযুক্তিকে কাজে লাগাই এবং আত্মপরিচয় গড়ে তুলি। লাল, নীল বা সবুজ–এই সাধারণ শব্দগুলোও একেকটি জটিল বার্তা বহন করে। রং আমাদের বলে দেয়, আমরা কে, কীভাবে দেখি এবং কীভাবে ভাবি। তাই রঙের অভিযাত্রা আসলে মানুষের মননেরই প্রতিচ্ছবি।

'আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ,/ চুনি উঠল রাঙা হয়ে।/ আমি চোখ মেললুম আকাশে,/ জ্বলে উঠল আলো/ পুবে পশ্চিমে।/ গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম "সুন্দর",/ সুন্দর হলো সে।'

Related Topics

টপ নিউজ

রং / স্যার আইজ্যাক নিউটন / পান্না / ক্যানভাস / বিজ্ঞান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে
  • ‘মবের নামে আগুন, ভাঙচুরের সুযোগ নেই’: সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা
  • দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত
  • থার্ড টার্মিনাল চালু: সরকারের টার্গেট ডিসেম্বর, জাপানি কনসোর্টিয়াম চায় আরও ২ মাস
  • আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে
  • জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ৫০০ কোটি টাকা লোকসান আইএফআইসি ব্যাংকের

Related News

  • তরুণদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান ডা. জুবাইদার
  • চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির অভিযোগ
  • যে কারণে ভ্যান গখ এক পোস্টম্যান ও তার পরিবারের ২৬টি প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন
  • প্রথম বাংলা ক্যালকুলেটর ‘ধারাপাত’!
  • বিক্রির জন্য পান্না: তালেবানরা অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে মাটির নিচে নজর দিচ্ছে

Most Read

1
অর্থনীতি

কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে

2
বাংলাদেশ

‘মবের নামে আগুন, ভাঙচুরের সুযোগ নেই’: সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা

3
বাংলাদেশ

দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত

4
বাংলাদেশ

থার্ড টার্মিনাল চালু: সরকারের টার্গেট ডিসেম্বর, জাপানি কনসোর্টিয়াম চায় আরও ২ মাস

5
অর্থনীতি

আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে

6
অর্থনীতি

জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ৫০০ কোটি টাকা লোকসান আইএফআইসি ব্যাংকের

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net