Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
August 14, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, AUGUST 14, 2025
মে দিবস: 'দুনিয়ার মজদুর– এক হও' স্লোগান যেভাবে এলো

মতামত

প্রদীপ কুমার দত্ত
01 May, 2024, 11:20 am
Last modified: 02 May, 2024, 03:52 pm

Related News

  • ​​করিডোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত সংসদ থেকে আসতে হবে, জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে: তারেক
  • নতুন বাংলাদেশ গড়তে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
  • ৩০ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরিসহ আরও কয়েক দফা দাবি শ্রমিকদের
  • মে দিবসে নয়াপল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ, ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন তারেক রহমান
  • উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সমাজভূমি নির্মিত হলেই শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে: তারেক

মে দিবস: 'দুনিয়ার মজদুর– এক হও' স্লোগান যেভাবে এলো

প্রলেতারিয়েত বা সর্বহারাদের ঘামে-শ্রমে ও রক্তে সভ্যতা ও সমাজের বিকাশ। কিন্তু তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করে সভ্যতার চাকা ঘোরান। বিশাল এই সর্বহারা শ্রেণির শ্রমের ফল ভোগ করেন স্বল্পসংখ্যক ধনিক বুর্জোয়া শ্রেণি। এই সমীকরণ যুগ যুগ ধরে চলে এসেছে। কারণ বুর্জোয়া শ্রেণি একতাবদ্ধ এবং রাষ্ট্রক্ষমতা তাদের পক্ষে। বিপরীতে, সর্বহারা শ্রেণির একতাবদ্ধ হওয়ার পক্ষে অজস্র বাধা...
প্রদীপ কুমার দত্ত
01 May, 2024, 11:20 am
Last modified: 02 May, 2024, 03:52 pm
হেমার্কেট দাঙ্গার এই চিত্রকর্মটি ১৮৮৬ সালের ১৫ মে তারিখে হার্পারস উইকলিতে প্রকাশিত হয়। ছবি: লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস, ওয়াশিংটন, ডি.সি/ব্রিটানিকা কিডস

সমাজ বদলের কারিগর মহামতি কার্ল মার্ক্স ও ফ্রেডেরিক এঙ্গেলস দুজনেই জার্মান বংশোদ্ভূত। তৎকালীন প্রুশিয়ায় তাঁদের জন্ম ও প্রাথমিক জীবন কাটলেও পরবর্তীকালে তাঁদের সমাজ বদলের চিন্তাধারা ও রাজনৈতিক কার্যকলাপের জন্য উভয়কেই দেশান্তরী হতে হয়। প্রবাসেও তাঁরা সক্রিয় থাকেন এবং তাঁদের শ্রেণিসংগ্রাম ও সর্বহারাদের একনায়কতন্ত্র মতবাদ বিশ্বের বুকে একটি স্থায়ী অবদান রাখতে সমর্থ হয়। 

তাঁরা উভয়েই ছিলেন পড়ুয়া ও অধ্যবসায়ী। ছিলেন একাধারে অর্থনীতিবিদ,দার্শনিক, সাংবাদিক, লেখক,সমাজবিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ ও বিপ্লবী মতাদর্শের ধারক/বাহক। তাঁরা একক এবং যৌথভাবে অজস্র প্রবন্ধ ও পুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশ করেছেন। তারমধ্যে 'ডাস কাপিটাল' এবং 'অ্যান্টি ডুরিং' এর মত গভীর মতাদর্শ প্রকাশ করার বই রয়েছে। কিন্তু উভয়ের যৌথভাবে লেখা কমিউনিস্ট পার্টির ইস্তাহার নামের প্রকাশনা পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেয়।

প্রলেতারিয়েত বা সর্বহারাদের ঘামে-শ্রমে ও রক্তে সভ্যতা ও সমাজের বিকাশ। কিন্তু তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করে সভ্যতার চাকা ঘোরান। বিশাল এই সর্বহারা শ্রেণির শ্রমের ফল ভোগ করেন স্বল্পসংখ্যক ধনিক বুর্জোয়া শ্রেণি। এই সমীকরণ যুগ যুগ ধরে চলে এসেছে। কারণ বুর্জোয়া শ্রেণি একতাবদ্ধ এবং রাষ্ট্রক্ষমতা তাদের পক্ষে। বিপরীতে, সর্বহারা শ্রেণির একতাবদ্ধ হওয়ার পক্ষে অজস্র বাধা।

মার্ক্স ও এঙ্গেলস সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে শ্রেণি সংগ্রামকে তীব্র থেকে তীব্রতর করে বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে সর্বহারা শ্রেণি সরকার গঠন না করা পর্যন্ত বুর্জোয়া শাসক শ্রেণির শোষণ থেকে তাঁদের মুক্তি নেই। পৃথিবীর সর্বাধিক পঠিত পুস্তিকা সমূহের অন্যতম কমিউনিস্ট পার্টির ইস্তাহার শেষ হয়েছে বিশ্বের প্রলেতারিয়েতের প্রতি এক উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে— শৃঙ্খল ছাড়া সর্বহারা শ্রেণির হারাবার কিছু নাই। জয় করার জন্য রয়েছে সারা দুনিয়া। 

১৮৪৮ সালে এই ইস্তাহার প্রকাশিত হওয়ার পর মার্ক্স ও এঙ্গেলস ১৮৬৪ সালে আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী সমিতি (ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কিংমেন'স অ্যাসোসিয়েশন) গঠন করেন। এই সংগঠন প্রথম ইন্টারন্যাশনাল নামে পরিচিত হয়। লক্ষ্য ছিল ন্যায্য দাবিসমূহ আদায়ে সর্বহারা শ্রেণির ঐক্যস্থাপন। সেই সময় এই ঐক্যের প্রয়োজন প্রকটভাবে অনুভূত হয়।

এখানে আমাদের জাতির জনকের একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে করি— 'বিশ্ব আজ দুই শিবিরে বিভক্ত– শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।'

১৮৮৬ সালের ৪ মে তারিখে ইংরেজি এবং জার্মান ভাষায় হেমার্কেট চত্বরে শ্রমিকদের বৈঠকের ঘোষণা দিয়ে লিফলেট প্রকাশিত হয়। ছবি: লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস, ওয়াশিংটন, ডি.সি/ব্রিটানিকা কিডস

শোষিত মানুষের দাবি আদায়ের সংগ্রামে আমাদের লেখার শিরোনাম স্লোগানটি একটি হাতিয়ার হিসাবে পরিচিতি পায়। আজ অবধি শ্রমজীবী মানুষের যেকোনো আন্দোলন, সংগ্রাম, সভা, মিছিলে 'দুনিয়ার মজদুর– এক হও' স্লোগানের শক্তিশালী ব্যবহার আমরা দেখতে পাই। এই আন্দোলন সংগ্রামের হাত ধরেই পরবর্তী কালে মে দিবস, প্রলেতারিয়েত শ্রেণির দাবি আদায়, এমনকি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আবির্ভূত হওয়া, ইত্যাকার ঐতিহাসিক ঘটনার সৃষ্টি।

মে দিবসের ইতিহাস প্রাচীন। মধ্যযুগের ইউরোপে এই দিনটি বসন্ত উৎসব হিসাবে পালিত হত। ইউরোপে এই দিনটি বসন্ত ও গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ের। এই সময়েই নানা বর্ণের পুষ্পপল্লবে শোভিত হয়ে পৃথিবী অপরূপা হয়ে ওঠে। আনন্দোৎসবের উপযুক্ত এই সময়ে তাই দেশে দেশে মে দিবস পালিত হত সাড়ম্বরে। সেই দিনটিই ইতিহাসের কালচক্রে পরিণত হয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী দিবসে।

এবারে আসি সেই ইতিহাসে। 

প্রাচীন কালে সমাজ ছিল কৃষিভিত্তিক। সেই আদিকাল থেকেই ভূমি মালিক ও তাদের জমিতে কাজ করা দরিদ্র কৃষি শ্রমিকদের মধ্যে শোষক শোষিতের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কৃষিকাজকে সহজতর করার জন্য প্রয়োজন অনুভূত হয় কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতির। অন্যদিকে, লজ্জানিবারণ ও পরিধেয়, উপাদেয় খাদ্য প্রস্তুত করা, বাসস্থান তৈরি ও চিকিৎসা উপকরণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার আবিষ্কার হতে থাকে। উৎপাদন প্রক্রিয়া চালু রাখার জন্য দৃশ্যপটে আবির্ভাব হয় শ্রমিক শ্রেণির। জনসংখ্যা বিস্তার ও ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে ভোক্তা সংখ্যাও বাড়তে থাকে। তাল মিলিয়ে চলতে থাকে উৎপাদন বৃদ্ধি। উদ্ভব হতে থাকে নতুন নতুন প্রযুক্তির। প্রয়োজন হতে থাকে বৃহত্তর সংখ্যায় শ্রমিকের। 

শিল্প বিপ্লবের সাথে সাথে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে প্রযুক্তির ও উৎপাদনের। বিকাশ ঘটতে থাকে অসংগঠিত শ্রমিক শ্রেণির। শাসন ক্ষমতা ও উৎপাদন প্রক্রিয়া ও উৎপাদনের যাবতীয় মাধ্যম করায়ত্ত থাকে ধনিক বুর্জোয়া শ্রেণির হাতে। নির্মম শোষণ চলতে থাকে শ্রমজীবী মানুষের ওপর। তাঁদের পরিশ্রমে উৎপাদন হয় কৃষি ও শিল্প পণ্য। অথচ তাঁদের জীবন-যাপন থাকে মানবেতর পরিবেশ ও পর্যায়ে। 

অপরদিকে, ধনবান শ্রেণি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগের মাধ্যমে যাবতীয় প্রবৃদ্ধির ভাগীদার হয়। বিলাসবহুল জীবন যাপন ও অর্থে বিত্তে ফুলে ফেঁপে ওঠে তারা। 

হে মার্কেট দাঙ্গার প্রতীকী চিত্রকর্ম। ছবি: সংগৃহীত

শ্রমিকদের কোনো নির্দিষ্ট শ্রমঘণ্টা ছিল না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাঁদের ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হতো। মজুরি ছিল অপ্রতুল। বসবাসের ব্যবস্থা ছিল অস্বাস্থ্যকর। ব্যক্তিগত জীবন ও আমোদ প্রমোদের ছিল না কোনো সুযোগ। নিরাশায় ভরা ছিল তাঁদের জীবন। চরম অসন্তোষ বিরাজ করত তাঁদের মনে। কর্ম ঘণ্টা কমানো এবং উন্নততর জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করার জন্য তাঁদের দাবি কারো কানে পৌঁছাতো না। অসংগঠিত থাকার কারণে তাঁরা নিজেদের দাবি শক্তিশালীভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন না। জানা যায়, যে ষোড়শ শতাব্দীতে স্পেনে একবার শ্রমিকদের জন্য আট ঘণ্টার কর্মদিবস চালুর ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও তা বলবত হয়নি কখনও। 

১৮১৭ সালে স্কটল্যান্ডের একজন নীতিবান ও শ্রমিকদের প্রতি সহানুভূতিশীল শিল্পপতি রবার্ট ওয়েন এক যুগান্তকারী প্রস্তাব আনেন। তিনি শ্রমজীবীদের জন্য দিনের চব্বিশ ঘণ্টাকে সমান তিন ভাগে বিভক্ত করে প্রতি ভাগ যথাক্রমে শ্রম, মনোরণ্জন ও বিশ্রামের জন্য নির্দিষ্ট করার কথা বলেন। শ্রমিক শ্রেণির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ এই প্রস্তাব সামনে রেখে তাঁরা তাঁদের চাহিদাকে তুলে ধরে সংগঠিত হতে থাকেন। তাঁদের চাহিদা ছিল– আট ঘণ্টার কর্মদিবস, সহজ জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় নিম্নতম মজুরি ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করার সুযোগ। শিল্পবিপ্লবের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শিল্প শ্রমিকরা সংগঠিত হতে থাকেন তাঁদের দাবিগুলো আদায়ে। 

শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮৫৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার পাথর-রাজমিস্ত্রিদের সংগঠন সর্বপ্রথম বৃহৎ আকারের আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয় আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবি প্রতিষ্ঠায়। এরপরই ১৮৬৪ সালে মার্ক্স- এঙ্গেলসের নেতৃত্ব প্রথম ইন্টারন্যাশনাল যাত্রা শুরু করে। আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমিক শ্রেণি সংগঠন বিকশিত হওয়ার একটি প্লাটফর্ম হিসেবে তা কাজ করে। দেশে দেশে ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠায় সর্বহারা শ্রেণি একাট্টা হতে থাকে। বিশেষ করে, আট ঘণ্টা শ্রম দিবসের দাবি প্রধান ও প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়।

এরপরের ঘটনা একাধারে মর্মান্তিক ও মাইলফলক সৃষ্টিকারী।

১৮৮৬ সালের পহেলা মে তারিখে আমেরিকার শ্রমিক ফেডারেশন (আমেরিকা ফেডারেশন অফ লেবার) আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে শিকাগো নগরীতে সর্বাত্মক শ্রমিক ধর্মঘটের ডাক দেয়। এঁদের সাথে প্রথম ইন্টারন্যাশনাল এরও একসময় যোগসূত্র ছিল। নীতিগত বিভক্তির কারণে কার্ল মার্ক্স প্রথম ইন্টারন্যাশনালের প্রধান কার্যালয় ইউরোপ থেকে আমেরিকায় স্থানান্তর করেন এবং ১৮৮১ সাল নাগাদ এই সংস্থার কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে যায়।

যাহোক, পহেলা মে ১৮৮৬ সালের ধর্মঘট তাদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে এমনটা অনুমান করে কলকারখানার মালিক বুর্জোয়া শ্রেণি সহযোগী রাষ্ট্রশক্তিকে নিয়ে শ্রমিক আন্দোলনের সকল কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। শ্রমিক শ্রেণি এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং প্রতিদিনই বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। 

৪ মে তারিখে শ্রমিকরা বড় ধরনের শোভাযাত্রা করার প্রস্তুতি নিয়ে শিকাগো হে মার্কেটের কাছে সমবেত হন। অপরদিকে, মালিক পক্ষ রাষ্ট্র ক্ষমতার সহায়তায় আন্দোলনে বাধা দেওয়ার জন্য বিপুল সংখ্যায় পুলিশকে সংঘবদ্ধ করে। 

১ মে, ১৯০৯ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে মে দিবসের মিছিলে শ্রমিকদের অংশগ্রহণ। ছবি: লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস, ওয়াশিংটন, ডি.সি/ব্রিটানিকা কিডস

এই পর্যায়ে ঘটে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পুলিশের অবস্থানে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। কে বা কারা এটি ঘটিয়েছে তা ঐ সময় বা পরবর্তীকালেও নিরূপিত হয়নি। নিজেদের মধ্যে হতাহতের ঘটনায় পুলিশবাহিনী উত্তেজিত হয়ে উঠে শ্রমজীবীদের অবস্থানে গুলিবর্ষণ শুরু করে। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে বিস্তৃত এলাকায় এবং ঐদিন মোট এগারজন মৃত্যুবরণ করেন। আহত হন আরও প্রায় দেড় শত জন। হতাহত উভয়পক্ষেরই ছিল। 

পুলিশ বাহিনী এরপর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। বহু শ্রমজীবী ও তাঁদের নেতারা গ্রেপ্তার হন। মামলা দায়ের করে নেতাদের বিচার করা হয়। তাঁদের মধ্যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের কেউ কেউ ঐদিন অকুস্থলে ছিলেন না এবং কোনোভাবে অংশগ্রহণও করেননি।

এরপর থেকে প্রতি বছরই শ্রমিকরা হে মার্কেট ঘটনার স্মরণে মে মাসব্যাপি বিভিন্ন কার্যক্রম চালাতে থাকেন। ১৮৮৯ সালে দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনালের প্রথম সন্মেলনে প্রতি বছর ১ মে তারিখে হে মার্কেট আন্দোলনের স্মরণে বিশ্বের সব জায়গায় আট ঘণ্টা কর্মদিবস চালুর জন্য আন্দোলন সংঘটিত করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি বছরই দেশে দেশে এই দাবি জোরদার হতে থাকে। 

১৯০৪ সালে দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনালের ষষ্ঠ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় আর্মস্টারডামে। সেখান থেকে বিশ্বের সকল শ্রমিক সংগঠনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয় সক্রিভাবে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলে আট ঘণ্টার কর্মদিবসের দাবিকে সফল করার। সাথে সাথে ১ মে তারিখকে আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী দিবস হিসাবে পালন করা এবং এই দিন নিজেদের মধ্যে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রেখে আট ঘণ্টা কর্মদিবস চালুর দাবি ও অন্য সকল ন্যায্য দাবি শক্তিশালীভাবে উপস্থাপন করা। ফলশ্রুতিতে এই জনপ্রিয় দাবি শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য দাবি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। 

তবে এরমধ্যে ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে গোটা বিশ্ব যুদ্ধ উন্মাদনায় মেতে ওঠে এবং অন্য সকল আন্দোলনে ভাঁটা পড়ে।

১৯১৭ সালে রাশিয়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রচণ্ড ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে যুদ্ধ পরিত্যাগ করার জন্য শ্রমিক, কৃষক, মধ্যবিত্ত জনতার প্রবল চাপের মুখে পড়ে। প্রবল প্রতাপান্বিত জার শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ পরিত্যাগ করেও শেষরক্ষা করতে পারেননি। মহামতি লেনিনের নেতৃত্বে সর্বহারাদের দল কমিউনিস্ট পার্টি সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ার ক্ষমতা দখল করে। 

১৮৪৮ এ কমিউনিস্ট পার্টির ইস্তাহারে করা মার্ক্স ও এঙ্গেলস এর ভবিষ্যৎ বাণী বাস্তবে রূপ নিল। গোড়াপত্তন হলো সোভিয়েত রাশিয়ার। পরবর্তীকালে রাশিয়ার এক সময়ের অঙ্গ দেশসমূহ নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠা হয়। ক্ষমতায় আসার পরপরই সোভিয়েত দেশে আট ঘণ্টা কর্মদিবস চালু করা হয়। শ্রমজীবী শ্রেণির দল তখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়। তাই তাঁদের অপরাপর ন্যায্য দাবিগুলোও মেনে নেওয়া হয়। 

শিকাগো শহরে হেমার্কেট মেমোরিয়াল। ছবি: শিকাগো ডট গভ

শুরু হলো বিশ্বব্যাপী আট ঘণ্টা কর্মদিবস চালু হওয়া। ১৯১৮ সালে শেষ হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ১৯১৯ সালে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা (ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন বা সংক্ষেপে আইএলও) গঠিত হয়। সেখানে মালিক, শ্রমিক, সরকার, অর্থনীতিবিদ, সমাজকর্মীসহ বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট শ্রণি পেশার প্রতিনিধিত্ব ছিল। ১৯২০ সালে আইএলও বিশ্বব্যাপী আট ঘণ্টা কর্মদিবস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পায়। সেই থেকে ধীরে ধীরে পৃথিবীর সকল দেশেই আট ঘণ্টার কর্মদিবস চালু হতে থাকে। 

উল্লেখ্য, মে দিবসে আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী দিবসের আন্দোলন গোড়াপত্তনের দেশ আমেরিকায় ১৯৩৮ সালে আট ঘণ্টা কর্মদিবস ও ৪৮ ঘণ্টার কর্মসপ্তাহ চালুর আইন হয়। অবশ্য ১৯৪০ সালে নতুন আইন করে ৪০ ঘণ্টার কর্মসপ্তাহ চালু করে তাঁরা। এখন বিশ্বের বহু দেশেই ৪০ ঘণ্টার কর্মসপ্তাহ চালু হয়েছে।

মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী দিবস ইতিহাসের শোকাতুর দিনের ভাবগাম্ভীর্য ও বহন করে। আবার এটি আনন্দের দিনও বটে। দিনটি শ্রমজীবী মানুষের বিজয়ের দিনও। এই দিনটি উদযাপনের নানান কার্যক্রম দেশে দেশে। শোভাযাত্রা, সভা, সেমিনার, আনন্দোৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভোজ, আতশবাজি ইত্যাদি নানান অনুষঙ্গে পালিত হয় এই ঐতিহাসিক দিনটি।

মহান মে দিবস - অমর রহে!
দুনিয়ায় মজদুর - এক হও!

শ্রমিক আন্দোলন যেন শ্রমিকদের হাতিয়ার হিসাবে থাকে। মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন এই আন্দোলনের সুবিধাভোগী না হয় এই আকাঙ্খা জানাই।
 

Related Topics

টপ নিউজ

মে দিবস / আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা / শ্রম দিবস / শ্রমজীবী / হে মার্কেট

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের সম্পদ বিক্রি: ৩৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত চেয়ে ইউসিবি’র চিঠি
  • ‘আপনারে কে এখানে বসাইছে, তার কইলজা খুলিহালাইম’: কুমিল্লায় বিএনপি নেতার কল রেকর্ড ফাঁস
  • মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ‘গ্রাজুয়েট প্লাস ভিসা’ চালুর উদ্যোগ
  • ২০২৪ সালে রাজনৈতিক দলের আয়ে শীর্ষে জামায়াত; বিএনপির তুলনায় দ্বিগুণ, জাতীয় পার্টির ১১ গুণ
  • নদী পরিবহন প্রকল্পের কাজ থেকে তমা কনস্ট্রাকশনকে বাদ দিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়
  • একটি অকার্যকরী ‘না ভোট’ ব্যবস্থা পুনর্বহাল করছে নির্বাচন কমিশন

Related News

  • ​​করিডোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত সংসদ থেকে আসতে হবে, জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে: তারেক
  • নতুন বাংলাদেশ গড়তে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
  • ৩০ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরিসহ আরও কয়েক দফা দাবি শ্রমিকদের
  • মে দিবসে নয়াপল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ, ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন তারেক রহমান
  • উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সমাজভূমি নির্মিত হলেই শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে: তারেক

Most Read

1
বাংলাদেশ

যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের সম্পদ বিক্রি: ৩৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত চেয়ে ইউসিবি’র চিঠি

2
বাংলাদেশ

‘আপনারে কে এখানে বসাইছে, তার কইলজা খুলিহালাইম’: কুমিল্লায় বিএনপি নেতার কল রেকর্ড ফাঁস

3
বাংলাদেশ

মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ‘গ্রাজুয়েট প্লাস ভিসা’ চালুর উদ্যোগ

4
বাংলাদেশ

২০২৪ সালে রাজনৈতিক দলের আয়ে শীর্ষে জামায়াত; বিএনপির তুলনায় দ্বিগুণ, জাতীয় পার্টির ১১ গুণ

5
বাংলাদেশ

নদী পরিবহন প্রকল্পের কাজ থেকে তমা কনস্ট্রাকশনকে বাদ দিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়

6
বাংলাদেশ

একটি অকার্যকরী ‘না ভোট’ ব্যবস্থা পুনর্বহাল করছে নির্বাচন কমিশন

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net