Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
December 21, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, DECEMBER 21, 2025
ন্যূনতম মজুরি আন্দোলন: মালিকপক্ষের হার্ড লাইন আত্মঘাতী হবে

মতামত

ফরিদা আখতার
02 November, 2023, 01:00 pm
Last modified: 02 November, 2023, 01:00 pm

Related News

  • জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পোশাকখাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে শ্রম অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা মালিকদের
  • নিম্নমানের আবাসনে পোশাক শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব
  • কুড়িলে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
  • গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ
  • গাজীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে কারখানায় পোশাক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

ন্যূনতম মজুরি আন্দোলন: মালিকপক্ষের হার্ড লাইন আত্মঘাতী হবে

এই রপ্তানি খাতের ওপর আমাদের বৈদেশিক আয় নির্ভরশীল। অতএব এটা শুধুমাত্র শ্রমিক আর মালিকদের দরকষাকষির বিষয় হিসেবে দেখা যাবে না। এটা জাতীয় ইস্যু। এর ন্যায্য মীমাংসা জরুরি। গার্মেন্ট শ্রমিকদের ঘামে ও পরিশ্রমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জিত হয়। অথচ সবসময়ই তাদের মজুরি বাড়ানোর জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়, শ্রমিকের রক্ত ঝরে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির দাবি সব সময়ই উপেক্ষা করা হয়েছে। কেন?
ফরিদা আখতার
02 November, 2023, 01:00 pm
Last modified: 02 November, 2023, 01:00 pm
ফরিদা আখতার। অলংকরণ: টিবিএস

গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলনে মজুরির প্রশ্ন সবসময়ই গুরুত্বপুর্ণ ও কেন্দ্রীয় প্রশ্ন। অন্যান্য দাবি-দাওয়াগুলো, যেমন কাজের পরিবেশ, ওভারটাইম ইত্যাদি খণ্ড খণ্ডভাবে নানা সময়ে অবস্থাভেদে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কিন্তু মজুরি নির্ধারণ শ্রমিকদের জন্য যতটুকু, তারচেয়েও অনেক বেশি রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রের প্রধান দ্বন্দ্বের ক্ষেত্র হিসেবে হাজির হয়। এর মীমাংসার সঙ্গে শুধু শ্রমিকদের বাঁচামরার প্রশ্ন নয়, পুরো দেশের স্থিতি ও ভবিষ্যৎ জড়িত।

মজুরি বোর্ড যখন ১৯৯৪ সালে গঠিত হয়েছিল তখন ন্যূনতম মজুরি ছিল মাত্র ৯৩০ টাকা। কয়েক দফা বৃদ্ধির পর সর্বশেষ ২০১৮ সালে ন্যূনতম মজুরি করা হয় ৮ হাজার টাকা। পাঁচ বছরের জন্যে নির্ধারিত এই মজুরির মেয়াদ এ বছর ৩০ নভেম্বর শেষ হচ্ছে। কাজেই নতুন ন্যূনতম মজুরি দাবি করার সময় হয়েছে, তাই দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শ্রমিকেরা ২৫,০০০ টাকা দাবি করে আসছে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে।

এরইমধ্যে মজুরি বোর্ডের অন্তত পাঁচটি সভা হয়েছে। মজুরি বোর্ডে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ২০,৩৯৩ টাকা; বিপরীতে মালিক পক্ষ মাত্র ১০,৪০০ দিতে চাইছেন, যা বর্তমান ন্যূনতম মজুরি (৮০০০ টাকা) থেকে মাত্র দুই হাজার ৪০০ টাকা বেশি। মুদ্রাস্ফীতির হিসাব করলে আরও কম, শ্রমিকদের দাবির প্রায় অর্ধেক।

এই রপ্তানি খাতের ওপর আমাদের বৈদেশিক আয় নির্ভরশীল। অতএব এটা শুধুমাত্র শ্রমিক আর মালিকদের দরকষাকষির বিষয় হিসেবে দেখা যাবে না। এটা জাতীয় ইস্যু। এর ন্যায্য মীমাংসা জরুরি। গার্মেন্ট শ্রমিকদের ঘামে ও পরিশ্রমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জিত হয়। অথচ সবসময়ই তাদের মজুরি বাড়ানোর জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়, শ্রমিকের রক্ত ঝরে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির দাবি সব সময়ই উপেক্ষা করা হয়েছে। কেন?

শ্রমিকরা নিজের গ্রাম ছেড়ে শহরের বস্তিতে এসে থাকেন, পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বুঝতে হবে, গ্রাম ছাড়া মানে শ্রমিকেরা ইতোমধ্যেই উন্নয়ন সহিংসতার শিকার। বাংলাদেশের উন্নয়ন নীতি কৃষির বিরুদ্ধে; কারখানা, নগরায়ন ও ধনীদের পক্ষে। ফলে কৃষিখাতের কোন ইতিবাচক রূপান্তর ঘটেনি, যাতে কৃষিকাজ থেকে মুক্ত হওয়া শ্রমিক গ্রামে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। বাংলাদেশের এযাবতকালের উন্নয়ন নীতির উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের মানুষকে জমি হারা, খাদ্য হারা, বাড়িঘর ছাড়া করে সস্তা শ্রমের বাজার তৈরী করা। যাতে সস্তায় বাংলাদেশে কারখানার মালিকরা শ্রমবাজার থেকে শ্রমিক কিনতে বা বেচাবিক্রি করতে পারে। তাহলে মজুরি নিয়ে যে দ্বন্দ্ব সেটা একইসঙ্গে বিদেশি অর্থপুষ্ট উন্নয়ন নীতির সঙ্গে ভাগ্যাহত জনগণের দ্বন্দ্ব। এই সত্য সবার আগে বুঝতে হবে।

শ্রমিকরা শহরে এসে অমানবিক পরিবেশে বস্তিতে বাড়া বাসায় থাকেন। সেই বস্তির বাসার ভাড়াও দিনে দিনে বাড়তে থাকে। এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য এমন পর্যায়ে এসেছে যে শুধু ভাত আর আলু ভর্তা খাওয়ার সামর্থও শ্রমিকদের নেই। খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে তো বাড়ছেই। এভাবে তো চলতে পারে না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৩%। গার্মেন্ট শ্রমিক যেসব খাদ্যদ্রব্য কেনেন তার মধ্যে আলু, ডিম অন্যতম। সেগুলোর দাম নিয়ে কত কি যে কাণ্ড হচ্ছে তা জনগণ দেখছে। তাই পোশাক শ্রমিক যখন বলেন, 'বেতন বাড়াতে সমস্যা হলে নিত্যপণ্যের দাম কমান' তখন তারা যথার্থই বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নীতি– বিশেষত সারাদেশের জনগণের জীবন দুর্বিষহ করে অল্প কিছু ধনীর পক্ষে থাকা নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।

একইসঙ্গে তারা চলমান পরিস্থিতির গোড়ার দিককার প্রশ্নটাই তুলছেন। নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি শ্রমিকদের দাবি নয়, এটা জাতীয় দাবি। এই জাতীয় দাবিটাই শ্রমিকেরা তুলছেন। অতএব তাদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের নিঃশর্ত সমর্থন জরুরি। এই দাবির সঙ্গে শুধু শ্রমিক নয়, আমাদের সকলের বেঁচে থাকা থাকার প্রশ্ন জড়িত। ২০১৮ সালে ৮০০০ টাকায় যা কেনা যেতো এখন ১০,৪০০ টাকায়ও তা কেনা যাবে না এই কথা বুঝতে কোন অর্থনীতিবিদের পরামর্শ লাগে না।

ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে তিনটি পক্ষের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ পক্ষ হচ্ছে মালিকপক্ষ বা বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ। মজুরি বোর্ড যে মজুরি নির্ধারণ করবে তা বাস্তবায়ন করবে তারা। শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় কারখানা ভাংচুর হলে নিঃসন্দেহে তাদেরও যথেষ্ট ক্ষতি হয়। শ্রমিকরা কখনোই অহেতুক কারখানার ক্ষতি করে না, কারণ কারখানা না থাকলে তাদের কাজ থাকবে না। ফলে কারখানা রক্ষা বা এই শিল্প রক্ষার জন্যে শ্রমিক মালিকের স্বার্থ অভিন্ন।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সম্পর্কের দিক থেকে মালিকপক্ষ টাকার মালিক, আর শ্রমিক হচ্ছে শ্রমের মালিক। মালিকপক্ষ তার বিনিয়োগ ও মুনাফাকেই গুরুত্ব দেয়। শ্রমিককে কম মজুরি দিলে সে উৎপাদন সক্ষমতা হারাবে সে সত্য মালিক পক্ষ কখনই বোঝে বলে প্রমাণ নাই। দ্বিতীয়ত শ্রমিককে কম মজুরি দিলে সমাজের সামগ্রিক অর্থনীতি পিছিয়ে পড়ে এই সহজ সত্য বোঝার মতো রাষ্ট্র বা সরকার আমরা কায়েম করতে পারিনি। শ্রমিককে মজুরি কম দিলে জাতীয় অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি হয় কারণ, শ্রমিকের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া মানে অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের শিল্প – বিশেষত কৃষিপণ্য কেনার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া। কৃষি পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য কেনার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া মানে উন্নয়নের বিকাশ রুদ্ধ হওয়া। অর্থাৎ খাদ্য সার্বভৌমত্ব অর্জন ও সুষম উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়া। বাংলাদেশ আরও গরিব হয়ে যাওয়া। একটি রপ্তানি খাতের মালিকদের স্বার্থে সমগ্র দেশ ও জাতির স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়ার এ এক অদ্ভূত আত্মঘাতী নীতি।

নভেম্বর মাসের ১ তারিখে উদ্ভুত পরস্থিতি নিয়ে মালিকপক্ষ বিশেষ আলোচনা সভা করেছে। 'মেড ইন বাংলাদেশ উইথ প্রাইড' ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে যাদের কারণে এই প্রাইড, তাদের দাবি না মানা নিয়েই আলোচনা হয়। এমনকি শ্রমিকের আন্দোলনকে 'বিশৃঙ্খলায় অংশ নেওয়া' আখ্যায়িত করে কাজ বন্ধ রাখলে কিংবা বিশৃঙ্খলার কারণে কারখানা বন্ধ রাখতে হলে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুযায়ী 'নো ওয়ার্ক, নো পে' বা 'কাজ নেই, মজুরি নেই'—এই নিয়ম কার্যকরের প্রস্তাব করেছেন তৈরি পোশাক কারখানার মালিকেরা। এই সভায় প্রায় ২০০ মালিক উপস্থিত ছিলেন। তারা শ্রমিকের মজুরি বাড়ানোর দাবি মেনে নেওয়ার কী উপায় করা যায় সেই পথে না গিয়ে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা বেছে নিলেন যা শ্রমিক বিরোধী। এই ধারা অনুসারে, 'বেআইনি' ধর্মঘটের কারণে কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকলে এবং সে রকম পরিস্থিতিতে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ রাখলে কারখানা মালিকেরা কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন এবং এই সময়ে শ্রমিকদের মজুরি দিতে হবে না।

প্রশ্ন হচ্ছে, শ্রমিকদের এই আন্দোলন কি বেআইনি? শ্রম আইনের এই ধারা ব্যবহার করার প্রেক্ষিত কি আদৌ তৈরি হয়েছে? একদিকে কারখানার মালিকরা বলছেন শ্রমিকরা ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত নয়। যারা করছে তারা বহিরাগত। তাই যদি হয় তাহলে শ্রমিকের বিরুদ্ধে ১৩(১) কেন প্রয়োগ করা হবে? এই হার্ড লাইনে গিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন হবে না। যদিও এই প্রস্তাব এসেছে, কিন্তু এটা বাস্তবায়ন আদৌ করা যাবে কিনা সেই বিষয় নিয়ে মালিকদের মধ্যেও শঙ্কা আছে। কারণ কারখানা বন্ধ করে দিলে মালিকের ক্ষতিও কম নয়। শ্রমিকের বিরোধিতা করতে গিয়ে নিজের নাক কাটবার তামাশা তারা করছেন কেন?

মজুরি বোর্ডের একটি সভা ১ নভেম্বর হয়েছে। এর আগের ২২ অক্টোবরের সভায় শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিরা ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। একইদিন শ্রমিকপক্ষের প্রস্তাবের বিপরীতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দেয়। দুই পক্ষের প্রস্তাবের ব্যবধান অনেক বড়, তাই দীর্ঘ আলোচনা করেও ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করতে পারেনি কোনো পক্ষই। তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ সরকারের দিক থেকে শ্রম মন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, মালিক পক্ষ যা বলেছে ন্যূনতম মজুরি তার চেয়ে বেশি হবে, কিন্তু কত হবে সেটা বলেন নি। এর আগে যে মজুরি ঠিক করা হয়েছিল তার মেয়াদ শেষ হবে ৩০ নভেম্বর। নতুন মজুরি কাঠামো কার্যকর হবে ১ ডিসেম্বর থেকে। জানুয়ারি মাসে তারা নতুন মজুরি পাবেন। কিন্তু কত হবে সে মজুরি?

মালিক পক্ষ যাকে 'বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি' আখ্যায়িত করছেন সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন মালিকপক্ষ নিজেই। প্রায় সাড়ে ৬ মাস ধরে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণের কাজ করছে। শ্রমিকদের দাবিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে প্রায় অর্ধেক বা ১০,৪০০ টাকা মজুরি প্রস্তাব দেয় কি করে মালিকপক্ষ? এর কারণেই শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে এবং বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে। প্রায় ৯ দিন (এই লেখা পর্যন্ত) ধরে চলা এই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, পুলিশের গুলিতে শ্রমিকের প্রাণ গেছে। এর দায় মালিকপক্ষকেই নিতে হবে।

গার্মেন্ট কারখানা রপ্তানীমুখী শিল্প। রপ্তানীর জন্যই উৎপাদন হয়। সেই দিক থেকে শ্রমিকের মজুরি ডলারেই আসে এবং রূপান্তর করলে ২০১৮ সালে নিম্নতম মজুরি ৮০০০ টাকা ছিল ডলারে ৯৫ ডলার ৩৫ সেন্ট। ডলার বিনিময় হার ছিল ৮৩.৯০ টাকা। এখন ডলারে বিনিময় হার হয়েছে ১১০-১২০ টাকা পর্যন্ত। গার্মেন্ট মালিকরা ডলারেই আয় করেন। এই শ্রমিকদের কাজের কারণে তারা হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন। ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমে যাওয়ায় সহজ বুদ্ধিতেই বোঝা যায় যে তারা একই পরিমাণ ডলারের বিনিময়ে বেশি টাকা ১০,৪৮৮ (১১০ টাকা বিনিময় হার ধরলে) শ্রমিকদের দিতে পারেন। কিন্তু সেটাও তারা করছেন না । তাহলে মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব হলো কোথায়? ডলারের হিসাবে তো মজুরি একই থাকলো।
 
শ্রমিকদের এখন থেকে ডলারে মজুরি বৃদ্ধির দাবি তুলতে হবে। অর্থাৎ ৯৫ ডলার ৩৫ সেন্টের বেশি মজুরি তাদের দিতে হবে। মালিকরা যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা বর্তমান ন্যূনতম মজুরিকে ডলারের বিনিময় হারের সাথে মিলিয়ে করেছেন; দেশের মূল্যস্ফীতি, খাদ্য মূল্যস্ফীতি কোন কিছুই হিসাবে আনেন নি। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিও অতএব ডলার দিয়েই হবে। এটাই ন্যায্য।

মালিকদেরও অনেক ক্ষোভ আছে। তারা বলছে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা তাদের যথেষ্ট মূল্য দেয় না, তারা নিজেরাও আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সাথে কম দামে পণ্য দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নামেন বেশি অর্ডার পাবার জন্যে। ফলে বায়াররা কম দাম দেন; কাজ করতে গেলে সবক্ষেত্রে ঘুষ দিতে হয়, বিশেষ করে কাস্টমসে। গার্মেন্ট মালিকরা বলেন ফ্যাক্টরির জন্যে দুশ্চিন্তায় এবং সরকারি নানান জটিলতায় তাদের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাচ্ছে, তাদের হার্টে সমস্যা আছে। এক মালিকের দাবি, ঘুষ বন্ধ করলে তারা শ্রমিকের বেতন বাড়িয়ে দেবে। ঘুষ দি্তে হলে বাড়াবে না। এসব কথা তারা বলেছেন ১ নভেম্বরের সভায়। এই সভার ভিডিও ইউটিউবেই পাওয়া যাবে। এই আন্দোলনের সময় অন্তত ৩০০ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে বলে দাবি করা হয়।

শ্রমিকের দাবি মেনে নেওয়া দেশের এই গুরুত্বপুর্ণ রপ্তানীমুখি শিল্পকে টিকিয়ে রাখা এবং সামগ্রিকভাবে জাতীয় অর্থনীতির সঙ্গে সমন্বয় বহালের জন্য অত্যন্ত জরুরি, রপ্তানী খাতের ৮৫% এই শিল্প থেকেই আসে। ফলে শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়।

দেশের ডলার রিজার্ভের জন্য রেমিট্যান্স এবং গার্মেন্ট রপ্তানীর আয় খুব গুরুত্বপুর্ণ। অথচ এই শিল্পের শ্রমিকদের প্রতি যেভাবে নির্দয় আচরণ করা হচ্ছে, যেভাবে পুলিশি অত্যাচার চলে এবং যেভাবে তাদের ন্যায্য লড়াই দমন করা হয় সেটা কোনভাবেই কাম্য নয়। তাদের ধমক দিয়ে, হুমকি দিয়ে বা বল প্রয়োগ করে হয়তো আন্দোলন সাময়িকভাবে থামবে, কিন্তু এই খাতের মালিকদের হু্মকি ধামকি ও নিপীড়নের যে ভাষা দেখছি তাতে পরিষ্কার, বাংলাদেশে জাতীয় স্বার্থে ন্যায্য সমঝোতার ক্ষেত্র তৈরির ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। শ্রমিকরা ভিক্ষা চাচ্ছে না, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতেই বেঁচে থাকার জন্যে ন্যায্য মজুরি চাচ্ছে।


লেখক: প্রাবন্ধিক ও মানবাধিকার কর্মী


বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিবন্ধের বিশ্লেষণটি লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণের প্রতিফলন। অবধারিতভাবে তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের অবস্থান বা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়।

 

Related Topics

টপ নিউজ

পোশাক শ্রমিক / গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন / নূন্যতম মজুরি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • হাঁড়ির মুখ আটা দিয়ে আটকে মৃদু আঁচে রান্না হচ্ছে লখনৌয়ের বিরিয়ানি। ছবি: মারুফ কালমেন
    কাবাব, বিরিয়ানিসহ 'বাহারি স্বাদের শহর' লখনৌকে ‘গ্যাস্ট্রোনমি’র স্বীকৃতি দিল ইউনেস্কো
  • ছবি: সংগৃহীত
    বছরজুড়ে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিল চীন; আর তাতে নিজের অজান্তেই ‘সাহায্য’ করলেন ট্রাম্প
  • এমবি স্বপ্নতরী। ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত
    ক্রুজে ভেসে সমুদ্রবিলাস: ‘স্বপ্নতরী’তে চড়ে কক্সবাজার ভ্রমণের নতুন অভিজ্ঞতা
  • স্বাদ যেমন আলাদা, নামটাও তেমনি অদ্ভুত—‘আতিক্কা পিঠা’। ছবি: আসমা সুলতানা প্রভা
    বিন্নি চাল, কলা আর কলাপাতা: চট্টগ্রামের আতিক্কা পিঠার গল্প
  • ছবি: টিবিএস
    ৩ ঘণ্টা পর শাহবাগ ছাড়লেন বিক্ষোভকারীরা, যান চলাচল স্বাভাবিক
  • ইয়েমেনের ফার্মিহিনে ড্রাগন ব্লাড গাছের সবচেয়ে বড় বন রয়েছে । ছবি: সংগৃহীত
    রেইনফরেস্ট কি এখন জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধান, নাকি উল্টো বিপদের কারণ?

Related News

  • জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পোশাকখাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে শ্রম অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা মালিকদের
  • নিম্নমানের আবাসনে পোশাক শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব
  • কুড়িলে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
  • গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ
  • গাজীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে কারখানায় পোশাক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

Most Read

1
হাঁড়ির মুখ আটা দিয়ে আটকে মৃদু আঁচে রান্না হচ্ছে লখনৌয়ের বিরিয়ানি। ছবি: মারুফ কালমেন
আন্তর্জাতিক

কাবাব, বিরিয়ানিসহ 'বাহারি স্বাদের শহর' লখনৌকে ‘গ্যাস্ট্রোনমি’র স্বীকৃতি দিল ইউনেস্কো

2
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক

বছরজুড়ে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিল চীন; আর তাতে নিজের অজান্তেই ‘সাহায্য’ করলেন ট্রাম্প

3
এমবি স্বপ্নতরী। ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত
ফিচার

ক্রুজে ভেসে সমুদ্রবিলাস: ‘স্বপ্নতরী’তে চড়ে কক্সবাজার ভ্রমণের নতুন অভিজ্ঞতা

4
স্বাদ যেমন আলাদা, নামটাও তেমনি অদ্ভুত—‘আতিক্কা পিঠা’। ছবি: আসমা সুলতানা প্রভা
ফিচার

বিন্নি চাল, কলা আর কলাপাতা: চট্টগ্রামের আতিক্কা পিঠার গল্প

5
ছবি: টিবিএস
বাংলাদেশ

৩ ঘণ্টা পর শাহবাগ ছাড়লেন বিক্ষোভকারীরা, যান চলাচল স্বাভাবিক

6
ইয়েমেনের ফার্মিহিনে ড্রাগন ব্লাড গাছের সবচেয়ে বড় বন রয়েছে । ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক

রেইনফরেস্ট কি এখন জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধান, নাকি উল্টো বিপদের কারণ?

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net