‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ দিয়ে কনটেন্ট নির্মাণের সেঞ্চুরি করলাম: মিজানুর রহমান আরিয়ান

ক'দিন আগে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পায় তরুণ নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের প্রথম চলচ্চিত্র 'নেটওয়ার্কের বাইরে'। অনেকেই ছবিটির প্রশংসা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলছেন দর্শকেরা।
তবে রিলিজের দিনকয়েকের মধ্যেই ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন ছবির চার অভিনয়শিল্পী।
সেসব বিষয়সহ পুরো চলচ্চিত্রটি নির্মাণ নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন আরিয়ান।
টিবিএস: আপনার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রটি অনেকেই খুব পছন্দ করেছেন; কেমন লাগছে?
মিজানুর রহমান আরিয়ান: অনেক মানুষ দেখছেন এবং প্রশংসা করছেন, এটা অবশ্যই ভালো লাগছে। মুক্তির আগে একটু ভয় ছিল। এখন সেটা কেটে গেছে। এটা সত্যি, আমি এই সময়ের তরুণদের পছন্দ বা রুচি একটু হলেও বুঝতে পারি। সেই সাহস থেকেই বানিয়েছি।
তবে হুট করে একটা দুর্ঘটনায় 'নেটওয়ার্কের বাইরে'র বেশ ক'জন শিল্পী আহত হয়েছেন। তারা এখন চিকিৎসাধীন। আমি এটা নিয়ে আপসেট। আশা করছি, তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।
টিবিএস: আপনি অনেকদিন ধরে নাটক বানিয়েছেন। প্রথম চলচ্চিত্র বানাতে গিয়ে প্রস্ততি কেমন ছিল?
আরিয়ান: আমিএর আগে নাটক, টেলিফিল্ম ও বিজ্ঞাপন বানিয়েছি সব মিলিয়ে ৯৯টা। 'নেটওয়ার্কের বাইরে' আমার ১০০তম কনটেন্ট। মানে 'নেটওয়ার্কের বাইরে' দিয়ে কনটেন্টে সেঞ্চুরি করলাম। এটা আমার জন্য অবশ্যই ভালো লাগার ব্যাপার।
গল্পটা আমার অনেকদিন ধরেই লালন করছিলাম। এটা নিয়ে চলচ্চিত্র বানাব, এ রকম একটা মনস্থির করে রেখেছিলাম। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত ভেবেছি। কোন লোকেশনে গল্পটা বলব, কীভাবে বলব, এসব ভেবেছি। চরিত্রগুলো নিয়ে সারাক্ষণ চিন্তা করেছি। ছেলেগুলো কি হোটেলে উঠবে, নাকি ক্যাম্প করে থাকবে- এসব ভাবনা সারাক্ষণই মাথায় ছিল। এগুলো ভাবার সময় কিন্তু চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য প্রস্তুত হয়নি। অবশেষে যখন চরকির সঙ্গে চুক্তি হয়, তখনই এটার চূড়ান্ত কাজ শুরু করি।
আমি ছোটপর্দায় গল্প বলতে বলতে কিছুটা তো শিখেছি, এটা একটু বড় মাধ্যমে গল্প বলা। বড় পর্দার জন্য যতটুকু দরকার, ততটুকু প্রস্তুতি ছিল। যারা চলচ্চিত্রটি দেখেছেন, তারা নিশ্চয় বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন।

টিবিএস: বেশ কয়েক বছর আগে 'নেটওয়ার্কের বাইরে' স্ট্যাটাস দিয়ে ঘুরতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন এক তরুণ। ওই ঘটনাই কি আপনার চলচ্চিত্রের অনুপ্রেরণা?
আরিয়ান : এটা নিয়ে আসলে আমি খুব বেশি বলতে চাই না। যারা দেখেছেন, তারা নিশ্চয় সেটা বুঝবেন। আমি শুধু বলব, সমুদ্রে অনেক ঘটনা ঘটেছে, ঘটে। একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্পটা। তবে চলচ্চিত্রের গল্প, চরিত্র, প্রেম, ঘটনা প্রবাহ- যাবতীয় সবই পরিচালক ও তার টিমের মতো করে সাজানো। এটাই আমি বলতে চাই।
টিবিএস: চলচ্চিত্রটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে?
আরিয়ান: গত ১০ বছর নাটক নির্মাণ করেছি। দর্শকের রুচি আমি বুঝি। আমার কাছ থেকে সবার প্রত্যাশাটাও বুঝি। দর্শকের দিক থেকে আমার কিছু প্রত্যাশা ছিল, আছে। সেই চিন্তা থেকেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি। সেটার ফিডব্যাকও পেয়েছি। আমাদের পরিশ্রম, চেষ্টা সবকিছু সফল।
টিবিএস: বন্ধুত্বের জার্নি নিয়ে এই দেশে আরও কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। সেগুলো থেকে এটার কি ব্যতিক্রম বলে আপনার মনে হয়?
ব্যতিক্রম আসলে বন্ধুত্বের দারুণ কিছু মোমেন্ট। দারুণ কিছু লোকেশন যেখানে বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যেতে পারেন। কক্সবাজার সেন্টমার্টিনে শুটিং করেছি। এখানকার ল্যান্ডস্কেপ খুবই দারুণ। আমাদের ডিওপি দারুণভাবে তুলে ধরেছেন। সবশেষে এটার গল্পটা আলাদা। আমরা আসলে বন্ধুত্বের গল্পটাই বলতে চেয়েছি। যেটা দেখে এই সময়ের তরুণেরা নিজেকে কানেক্ট করতে পারবেন। মনে হবে তারই গল্প।
টিবিএস: 'নেটওয়ার্কের বাইরে' চলচ্চিত্র নির্মাণের পেছনে অনুপ্রেরণা কার?
আরিয়ান: মূল অনুপ্রেরণা আসলে গল্প। একইসঙ্গে একটা গল্পে স্ট্রং বন্ধুত্ব, লাভ স্টোরি, আবার ফ্যামিলির ক্রাইসিস আছে।
টিবিএস: আপনার মূলত প্রেমের নাটক বা লাভ স্টোরি নির্মাণ করেন। এর কারণ কী?
আরিয়ান: ঠিক প্রেমের নাটক না। আমি তিনটা জনরা নিয়ে বেশি কাজ করি। ইমোশনাল স্টোরি, ফ্যামিলি ড্রামা ও লাভ স্টোরি। কিন্তু মানুষ বেশি দেখে লাভ স্টোরি। এই কারণে মনে হয় আমি লাভ স্টোরি বেশি বানাই। সত্যি কথা হলো, আমি লাভ স্টোরিতে বেশি স্বস্তি পাই। এটা বোধহয় প্রচুর সিনেমা দেখা ও বই পড়ার প্রভাব।
টিবিএস: নতুন চলচ্চিত্র নিয়ে কী ভাবছেন?
আরিয়ান: আমি প্রতি বছর দুটি করে চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি। এরইমধ্যে আমার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র চূড়ান্ত হয়েছে। স্ক্রিপ্ট শেষের দিকে।