‘আসিফ নজরুলের চেয়ারের বডি মোটা হয়ে গেছে’: নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের চেয়ারের বডি মোটা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী।
তিনি বলেছেন, 'আসিফ স্যার ভার্সিটিতে ছাত্রদের সামনে অনেক বড় বড় কথা বলতেন। কিন্তু উনি যখনই চেয়ারে বসে গেছেন, তখনই চেয়ারের বডি মোটা হয়ে গেছে।'
আজ রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদন জুলাই হত্যাকাণ্ডের ব্যবচ্ছেদ, দায় ও বিচার'- শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া।
এ সময় নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, 'উপদেষ্টা পরিষদে যারা আছেন, তাদের চামড়া গন্ডারের মতো। তাদের যেই কাজ ৬ মাস আগে করতে বলা হয়, তারা সেটা করে ৬ মাস পরে।'
তিনি বলেন, 'যারা বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন তারা দায়িত্ব পালনে বাধ্য, অবাধ্য হওয়ার সুযোগ নেই। যারা দায়িত্ব পালনে অবাধ্য হবেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতা করে নেক্সট গভর্নমেন্ট এ আসার চেষ্টা করবেন, এই সুযোগ আর বাংলাদেশের জনগণ দেবে না। কারণ, আপনারা যে চেয়ারে বসেছেন, সেটা হাজারো শহীদের বিনিময়ে পাওয়া। সম্মান আপনারা পেয়েছেন, সম্মান আপনারা হারাবেন না।'
ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, 'জাতিসংঘ প্রতিবেদনের যারা সমালোচনা করছেন সেগুলো পুরোই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশ যদি মৃত্যুদণ্ড রহিত করে, তাহলে এই বিচারে আন্তর্জাতিক সহায়তা পাবে। আমি মনে করি মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়া উচিত। এখানকার অধিকাংশ সুপারিশ বিচার কীভাবে সুনিশ্চিত করা যায় সে কেন্দ্রিক।'
আলোচনায় ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, 'জাতিসংঘের প্রতিবেদনের গুরুত্ব তার নিরপেক্ষতার কারণে। রিপোর্টটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট চিত্র ও জড়িতদের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রিলিমিনারি ইনভেস্টিগেশনে এটি দারুণ সহায়তা করবে। কিন্তু এটা কনক্রিট এভিডেন্স না। এজন্য তাদের কিছু সুপারিশ মেনে আমাদের বিচারিক প্রক্রিয়ার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।'
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, 'বাংলাদেশের নারকীয় গণহত্যার ভয়াবহতা এখনও আমাদের স্মৃতিতে আছে। আপামর জনতার একটাই কথা যেন প্রত্যেক অপরাধী সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের বিষয়ে যতটা আগ্রহী বিচার ও সংস্কারের বিষয়ে ততটাই উদাসীন।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সরকার এখনও শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে ও বিচার করতে ভারতের সঙ্গে আলাপেই যেতে পারেনি। এখন আমাদের একটাই চাওয়া খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের প্রত্যেকের বিচার। একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হলে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করতে হবে।'
নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, 'বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে চরম উদাসীনতা দেখাচ্ছে। জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনটি কাজে লাগানোর মতে অবস্থা বাংলাদেশে এখনও হয়নি। এই প্রতিবেদনের গুরুত্ব এখানে মানবতাবিরোধী অপরাধের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ভায়োলেন্সের বিষয়ে জাতিসংঘের কনসার্ন উল্লেখ করা হয়েছে। এখানকার আন্তর্জাতিক অপরাধ জাতিসংঘের দ্বারা স্বীকৃত।'
তিনি আরও বলেন, 'এই বিচারের সক্ষমতা নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে। আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ আছে বিচারের মানদণ্ড নিয়ে। যদিও আগ্রহ আছে বলে মনে করি। বিচার নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারছি না। জাতিসংঘের প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে গভীর সংস্কার প্রয়োজন। এখানে বিচার ও সংস্কারকে সম্পর্কযুক্ত বলে লিখেছে।'