মডেল মেঘনা আলমকে আটকের প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি: আইন উপদেষ্টা

সাবেক মিস আর্থ বাংলাদেশ ও মডেল মেঘনা আলমের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আজ রোববার (১৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, 'মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়াটা হয়তো ঠিক হয় নাই। বিশেষ ক্ষমতা আইনের প্রয়োগটা ঠিক হয় নাই।'
তিনি আরও বলেন, মডেল মেঘনা আলমকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিটেনশন দিয়েছিল। এটা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আছে; পুলিশ তদন্ত করেছে।
গত বুধবার রাতে মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে রাখে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আটকের পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন আদালত।
সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমকে আটক করার ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়।
বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, 'বিশেষ ক্ষমতা আইন বা অন্যান্য নিবর্তনমূলক আইনের ব্যাপারে আমরা বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। আপনারা জানেন রাজনৈতিক ঐক্যমত কমিশনে আলাপ হচ্ছে। কিছুটা রাজনৈতিক কনসেনসাশ তৈরি করা প্রয়োজন।'
'ধরেন আমরা বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করে দিলাম। এরপরে একটা পলিটিক্যাল গভর্নমেন্ট এসে আমাদের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিলো। লাভ আছে কিছু?' বলেন তিনি।
গত বুধবার ফেসবুক লাইভে মেঘনা আলম অভিযোগ করেন, পুলিশ পরিচয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করেন। প্রায় ১২ মিনিটের ওই ফেসবুক লাইভ হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় এবং পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় সরকার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাউকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিচার ছাড়াই হেফাজতে রাখতে পারে। সাধারণত জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার স্বার্থে এই ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়।
মেঘনা আলম ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর 'মিস আর্থ বাংলাদেশ' খেতাব জিতে আলোচনায় আসেন। পরিবেশ রক্ষা করতে ফেলে দেয়া প্লাস্টিক দিয়ে নতুন পণ্য বানিয়ে এবং তা বিক্রয়ের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা তৈরি করে নারীদেরকে স্বাবলম্বী করার প্রচেষ্টার জন্য তিনি প্রশংসিত হন।
সম্প্রতি তিনি নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দাবি করেন, এক বিদেশি কূটনীতিক পুলিশকে প্রভাবিত করে তার পরিচিতজনদের তুলে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তাকে 'সত্য' প্রকাশ না করতে হুমকি দিচ্ছেন। এসব পোস্টও পরবর্তীতে সরিয়ে ফেলা হয়।
এদিকে মেঘনা আলমকে আটক করার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি)। এই সমালোচনার মধ্যে আজ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে। তাকে ডিএমপি হেডকোয়ার্টারে সংযুক্ত করা হয়েছে।