এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখার নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি

সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও বাসাবাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর উপরে রাখার অনুরোধ জানিয়ে পরিপত্র জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আজ রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ পরিপত্র জারি করে, এবং তা বাস্তবায়নে সকল মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিব, দপ্তর ও সংস্থার প্রধানদের পাঠিয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের অভীষ্ট তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নির্ধারণের পরামর্শ পাওয়া গেছে।
এবার রমজান, গ্রীষ্মকাল ও সেচ মৌসুম একই সময়ে শুরু হবে জানিয়ে পরিপত্রে বলা হয়, সেজন্য আসন্ন মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। শীতাতপ থার্মোস্ট্যাট নির্ধারিত তাপমাত্রায় ব্যবহারের মাধ্যমে এ চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
এতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায়, সব সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর ওপরে নির্ধারণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত যথাযথ বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের মাধ্যমে বেসরকারি খাতকে অবহিত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে, এবং বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে অবহিতকরণের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও এনজিও বিষয়ক ব্যুরোকে অনুরোধ জানানোর কথা বলা হয় পরিপত্রে।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক সম্মেলনের একটি অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, এবারের গরমে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় এসি চালানো যাবে না। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে নির্দেশনা জারি করা হবে এবং কেউ নির্দেশনা অমান্য করলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'গ্রীষ্ম মৌসুমে লোডশেডিং কমানোর জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ শীত মৌসুমে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ৯ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু গ্রীষ্ম মৌসুমে চাহিদা বেড়ে ১৭ থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াট হয়ে যায়।'
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, 'দুটো কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়, তার একটি হচ্ছে সেচ। সেচে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে। এটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেটা আমরা দিতে চাই। এর বাইরে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে শুধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র চালানোয়। এসি এখন শুধু শহরে নয়, গ্রাম পর্যন্ত ব্যবহার হয়। অনেকে সোয়েটার, কোট পরে ১৯ বা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও এসি চালায়। আমাদের দেশে এত কম তাপমাত্রার দরকার নেই।'
তিনি বলেন, 'এজন্য এসি (চালানোর) তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিতরণ কোম্পানিগুলো মনিটরিং টিম গঠন করবে। কোনো লাইনে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখা গেলে– সেখানে লোডশেডিং করা হবে।'