চট্টগ্রাম ওয়াসার সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত, ৭২ ঘন্টার বেশি পানি সরবরাহ নেই ১৬ এলাকায়

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান সঞ্চালন লাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নগরীর ১৬ এলাকার ৭২ ঘণ্টারও বেশি পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) খাল খনন প্রকল্পের কাজ চলাকালীন এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এতে করে, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকেই বন্ধ রয়েছে পানি সরবরাহ। মঙ্গলবার থেকে এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
রাঙ্গুনিয়ায় চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার-১ হতে দৈনিক ১৪.৩ কোটি লিটার সুপেয় পানি— সঞ্চালন পাইপলাইন দিয়ে নগরীর নাসিরাবাদের রিজার্ভারে আসে। এরপর এখান থেকে নগরীর বৃহত্তর হালিশহর আগ্রাবাদ, জামালখান, লালখানবাজার, মাদারবারি, জিইসি, মুরাদপুর, কদমতলি, ধনিওয়ালা পাড়া, নয়াবাজার, ২ নং গেইট, বায়েজিদ, অক্সিজেন, চকবাজার, নন্দনকানন, সিরাজ-উদ-দৌলা রোড এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়।
সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজের খাল খননের সময় গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অনন্যা আবাসিক এলাকায় অক্সিজেন-কুয়াইশ সংযোগ সড়কে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান সঞ্চালন লাইন ছিদ্র হয়ে যায়। ১২০০ মিলিমিটার ব্যাসের ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনটি দিয়ে পানি সরবরাহ বন্ধ করা হয়।
পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন নগরীর লাখ লাখ মানুষ। বিশেষ করে, নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে। নগরীর জামালখান এলাকার বাসিন্দা মঞ্জুরুল হক টিবিএসকে বলেন, "পানি বন্ধ থাকায় - অন্য বাড়ির গভীর নলকূপ থেকে সামান্য পানি এনে ব্যবহার করছি কোনো রকমে।"
চট্টগ্রাম ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদন ক্ষমতা ৫৬ কোটি লিটার। এরমধ্যে মদুনাঘাট পানি শোধনাগার থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার, কর্ণফুলী পানি শোধনাগার ০১ ও ০২ থেকে ১৪.৩ কোটি লিটার করে মোট ২৮.৩ কোটি লিটার এবং মোহরা পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করা হয়। এছাড়া গভীর নলকূপ থেকে আসে ৪ কোটি লিটার পানি।
এছাড়া শহরের বাইরে বোয়ালখালীর ভাণ্ডালঝুড়িতে ৬ কোটি লিটার উৎপাদন সক্ষমতা্র পানি শোধনাগার চালু হয়েছে; যা দিয়ে বোয়ালখালী, আনোয়ারা, পটিয়া ও কর্ণফুলী উপজেলায় পানি সরবরাহ করা হয়।
সংস্থাটির তথ্যমতে, ট্রান্সমিশন পাইপলাইনটি মেরামত করতে আনুমানিক প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ হবে। পাইপ মেরামত করে পুনরায় চালু করা পর্যন্ত—- প্রতি ২৪ ঘণ্টায় পানির উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় প্রায় ৪৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ক্ষতি হবে। সিডিএ'র জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা– সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম টিবিএসকে বলেন, "খালের নিচে পাইপের ওপর অনেক শক্ত ঢালাই ছিল। গত তিন দিন ধরে তা কাটা হচ্ছে। ঢালাই কাটার পর ছিদ্র হওয়া পাইপের অংশটুকু কেটে পরিবর্তন করা হবে। আজ রাতের মধ্যে পাইপ পরিবর্তন করে চালুর চেষ্টা চলছে।"