চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ

চট্টগ্রাম দক্ষিণ, উত্তর ও মহানগর কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ। দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টা থেকে নগরীর লালবাজার মোড়ে সংগঠনটির সদস্যরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। এতে ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন, তবে সড়কের একপাশ খোলা ছিল।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে কেন্দ্রীয় কমিটি আগামী ছয় মাসের জন্য চট্টগ্রামের তিনটি কমিটির অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে মহানগর কমিটিতে ৩১৫, উত্তর জেলায় ১১২ এবং দক্ষিণ জেলায় ৩২৭ সদস্য রয়েছেন। তবে নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই এটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে অর্ধশতাধিক সদস্য কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে লালখান বাজার মোড়ে অবরোধ শুরু করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন—
১. বিকেল ৩টার মধ্যে কমিটি বাতিল করে তিন দিনের আলোচনার ভিত্তিতে নতুন অন্তর্ভুক্তিমূলক কমিটি গঠন করতে হবে।
২. নতুন কমিটি গঠনের আগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. কমিটি গঠনে ব্যক্তিগত পছন্দকে প্রাধান্য দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের পরিচয় প্রকাশ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, 'চট্টগ্রামে তিন কমিটিই প্রহসনের কমিটি। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশীজনদের মূল্যায়ন করা হয়নি। চাঁদাবাজ, নারী হেনস্তাকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কেন্দ্রীয় সদস্য রাসেল আহমেদ এই কমিটির বিষয়ে অবগত নয়। আরেক সমন্বয় খান তালাত রাফির ইন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল এই প্রহসনের কমিটি গঠন করে। আমরা এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। এই কমিটি বাতিল না করা পর্যন্ত হাসনাত আবদুল্লাহ, আরিফ সোহেল ও খান তালাত মাহমুদ রাফিকে বীর চট্টলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।'
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার নতুন কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদ পাওয়া জুবায়ের মানিক মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশীজনদের বাদ দিয়ে এমন বৈষম্যমূলক কমিটি আমরা মানি না। আমার পদ থেকে পদত্যাগ করেছি গতকালই (সোমবার)। আজ অনেকে পদত্যাগ করেছে। কমিটিতে যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই আজকের মধ্যে এই কমিট বাতিল এবং তিনদিনের মধ্যে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মফ কবির ভূইয়া সাংবাদিকদের বলেন, অবরোধে যানবাহন চলাচল ও জনসাধারণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ছাত্রদের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছে ছাতদের লেঁয়াজু কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে শিগগির একটা ফিডব্যাক আসবে। এরপর তারা অবরোধ তুলে নেবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে একটি অংশের নেতৃত্বে সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ ও অন্য অংশের নেতৃত্বে সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি।