আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ইজতেমার প্রথম ধাপ

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নিজামের উদ্যোগে আয়োজিত এবারের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ।
আজ রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশের শীর্ষ মুরুব্বি, কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা জোবায়ের আহমেদ।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ সবকিছু বন্ধ রাখা হয়।
রোববার সকাল ৯টা ১১ মিনিটে শুরু হয়ে মোনাজাত শেষ হয় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে। ইজতেমা ময়দানের ভেতরে বিদেশি মুসল্লিদের খিত্তার পাশের বিশেষ মোনাজাত মঞ্চ থেকে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। দেশ বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি এতে শরিক হন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করা লাখ লাখ মুসল্লি ছাড়াও মোনজাতে অংশ নিয়েছেন ঢাকা ও গাজীপুরের চারপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অসংখ্য মুসল্লি। এক দিন আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, মোনাজাত হবে রোববার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে। ফলে মোনাজাত উপলক্ষে শনিবার রাতের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পুরো ইজতেমা ময়দান।
ময়দানে জায়গা না পেয়ে রাতভর ও সকালে অনেক মুসল্লি মহাসড়ক ও আশেপাশের গলিতে অবস্থান করেন। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের ভোগড়া এবং আশেপাশের মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখ মুসল্লি বাস, ট্রাক, কার, মাইক্রোবাস, ট্রেন, লঞ্চে করে রোববার সকালে টঙ্গীতে আসেন আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে।
ইজতেমা ময়দানে নারীদের জন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ময়দানের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে অনেক নারীকে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা গেছে। কয়েক হাজার নারী ইজতেমা ময়দানের আশেপাশে, বিভিন্ন কলকারখানা, বাসা-বাড়ি ও বিভিন্ন দালানের ছাঁদে বসে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন বলেন, "ইজতেমার মুসল্লিদের সেবায় জেলা প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করেছে। ইজতেমার মুরুব্বি, অংশগ্রহণকারী মুসল্লি– সকলের সহযোগীতায় প্রথম পর্ব অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।"
এদিকে, ইজতেমার ময়দান ও এর আশেপাশে এত মানুষ জড়ো হওয়ায় বাড়ি ফিরতে রাস্তাঘাটে ভোগান্তি শুরু হয়েছে ইতোমধ্যেই।
গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করীম খান বলেন, "ইজতেমায় আগত দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের নিরাপত্তা, তাদের যাতায়াতের জন্য মহানগর পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করেছে।
তিনি বলেন, "ফিরতি পথে একসাথে লাখ লাখ মানুষ সড়কে নেমে আসায় প্রথমে একটু অসুবিধা হলেও পরে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি। মুসল্লিরা যাতে দ্রুত এবং নিরাপদে ইজতেমা ময়দান ত্যাগ করতে পারেন– সেজন্য বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে। ইজতেমা অত্যন্ত সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।"