একপক্ষের চাপে ভিসির পদত্যাগ মেনে নেবে না কুয়েট শিক্ষক সমিতি

ছাত্রদের এক পক্ষের দাবিতে উপাচার্যের পদত্যাগ মেনে নেবে না বলে জানিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক সমিতি।
বুধবার দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. ফারুক হোসেন।
তিনি বলেন, একজন ভাইচ চ্যান্সেলরের মর্যাদার প্রশ্ন তথা একজন শিক্ষকের মর্যাদার প্রশ্নের জায়গায় আমরা অটুট আছি। যেহেতু সরকার এখানে হস্তক্ষেপ করেছেন, তারা যদি কোন দোষ ত্রুটি খোঁজে পান, তাহলে ব্যবস্থা নিবেন। সেটা যদি না হয়, এইভাবে কোনো পক্ষ বা গ্রুপের চাপে একজন ভাইস চ্যান্সেলার কে পদত্যাগ করতে হবে আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার জেরে ছাত্রদের দ্বারা শিক্ষকরাও নির্যাতিত হয়েছে। শিক্ষক নির্যাতনের বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরাও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, "আজ শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। তিনি শুধু ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরাও খুব আশায় ছিলাম তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে তিনি কথা বলতে না আসায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত।"
বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষক ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের অধ্যাপক ড. আশরাফুল গনি ভূঁইয়া বলেন, "কুয়েট একটা ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। নানাভাবে এখন এর সুনাম নষ্ট করা হচ্ছে।"
কুয়েট ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দাবিতে আমরণ অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার সকাল ১০ টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসে এসেছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার। এসময়ে তিনি অনশন প্রত্যাহার করার জন্য শিক্ষার্থীদের বারবার অনুরোধ করেন। তবে ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এক পর্যায়ে উপদেষ্টা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির নেতারা তার সাথে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও তিনি অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীদের সাথে সাক্ষাতের সময়ে উপদেষ্টা বলেন, তোমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতি শীঘ্রই তারা তোমাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তারপর তোমাদের দাবি অনুযায়ী আমরা যথারীতি ব্যবস্থা নিব। আইনগত তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই, কারণ তা আদালতে টিকেনা।
তবে পাল্টা জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, "আমরা দুই মাস ধরে আন্দোলন করে আসছি। তবে আমাদের দাবি মানা হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়ে আর সময় দিতে চাই না। আপনারা আপনাদের কাজ করতে থাকেন। আমরা লাশ হয়ে গেলেও ভিসির পদত্যাগ ছাড়া অনশন ভাঙ্গবো না।"
গত সোমবার বিকেল ৩ টায় অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন ৩২ জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করলে ইতোমধ্যে ৬ জন অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া দুইজন বাড়িতে চলে গেছেন।