জঙ্গি হামলায় পর্যটকদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন পেহেলগামের আদিল

দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামে পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তিনজন নাগরিক। হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। খবর আনন্দবাজার-এর।
হামলার সময় সাহসিকতার নজির রাখলেন স্থানীয় যুবক সাইদ আদিল হুসেন শাহ। পর্যটকদের বাঁচাতে এগিয়ে গিয়ে এক জঙ্গির হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সফল হতে পারেননি। উল্টো ওই জঙ্গির গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সাইদ।
পেশায় ঘোড়সওয়ার এই যুবক পেহেলগামে আসা ট্যুরিস্টদের টাট্টু ঘোড়ায় ঘোরানোর কাজ করতেন। সারা বছর এই কাজ করেই সংসার চালাতেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে বৈসরন উপত্যকায় পর্যটকদের লক্ষ্য করে আচমকা গুলি চালানো শুরু করে জঙ্গিরা। পর্যটকদের একে একে হত্যা করতে থাকে তারা।
চোখের সামনে এমন ভয়াবহ হামলা দেখে দমে যাননি সাইদ। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি সাহসিকতার সঙ্গে এক জঙ্গির দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তার শরীর।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন সাইদ। তার উপার্জনেই চলত বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানের জীবন। তার মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারটি এখন বিচার চায়।
সাইদের বাবা হায়দার শাহ জানান, 'মঙ্গলবার কাজে বের হয়েছিল আদিল। বিকেল ৩টার দিকে হামলার খবর পাই। অনেকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ফোন চালু হলেও কেউ ধরেনি। পরে থানায় গিয়ে জানতে পারি, সে আর নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার ছেলে নিরীহ ছিল। কাউকে কোনোদিন কষ্ট দেয়নি। যারা এই হামলার পেছনে রয়েছে, তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়।'
এদিকে, এই জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়া সংগঠন 'দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট' (টিআরএফ)।
হামলার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং বুধবার সকালে নিহতদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিনি নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন।