পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে এস আলম, বেক্সিমকো, পিকে হালদার

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্রতিষ্ঠিত অলাভজনক সংস্থা সূচনা ফাউন্ডেশন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী এস আলম ও বেক্সিমকো, এবং বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত পিকে হালদারের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে।
প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দেশের বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-এর (বিএফআইইউ) একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন অনুসারে, সূচনা ফাউন্ডেশনের অন্যান্য দাতাদের মধ্যে রয়েছে মেঘনা গ্রুপ, সামিট গ্রুপ ও ইউনাইটেড গ্রুপ। প্রতিবেদনটির কপি টিবিএসের হাতে এসেছে।
সন্দেহজনক লেনদেনের জন্য গত বছরের নভেম্বরে সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দেয় বিএফআইইউ।
বিএফআইইউয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, সূচনা ফাউন্ডেশনে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন উৎস থেকে ১৭৯ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ১১৪ কোটি টাকা ইতিমধ্যে খরচ হয়েছে। বর্তমানে ফাউন্ডেশনের অ্যাকাউন্টে ফ্রিজ হিসেবে আটকে আছে ৬৫ কোটি টাকা।
এই ফাউন্ডেশনের টাকা এসেছিল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন এস.আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে।
এছাড়াও তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের (আওয়ামী লীগ) সাবেক সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রাণ গোপাল দত্তের অ্যাকাউন্ট থেকেও টাকা জমা হয়েছে।
অলাভজনক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূচনা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা ২০১৪ সালে। সংস্থাটি মানসিক প্রতিবন্ধকতা, স্নায়বিক ব্যাধি, অটিজম ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে কাজ করত। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন। বোর্ডে ছিলেন আরও তিন ট্রাস্টি—মাজহারুল মান্নান, মো. শামসুজ্জামান ও জাইন বারি রিজভী।
তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলেছে, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের নিবন্ধিত ঠিকানায় গিয়ে তারা অফিসের 'অস্তিত্ব' খুঁজে পায়নি ।
পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুতুলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে।
পূর্বাচলে প্লট অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে 'তথ্য গোপন করা ও ক্ষমতার অপব্যবহার' করার অভিযোগে দুদকও একটি মামলা করেছে পুতুলের বিরুদ্ধে।
শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ শেখ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগে একাধিক মামলা করা হয়েছে।