এটি আমি কি না নিশ্চিত নই: হত্যামামলার অভিযোগের বিষয়ে উপদেষ্টা বশির

অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন তার বিরুদ্ধে হত্যামামলায় জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে বলেছেন, মামলায় যে ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি আসলে তিনি নাকি তার সঙ্গে নামের মিল থাকা অন্য কেউ, তা তিনি নিশ্চিত নন।
আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে বেশি কিছু জানি না। আমাদের আইনি দল বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। মামলার নথিতে আমার নামে ও আমার বাবার নামের কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। আমি নিশ্চিত নই যে এটি আসলেই আমি কি না। যদি আমি হই, তাহলে আইনিভাবেই বিষয়টি মোকাবিলা করা হবে।'
গতকাল রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান সেখ বশির।
মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, 'যারা প্রতিবাদ করছেন, তাদের সঙ্গে আমি একমত নই। আমি মনে করি তাদের ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সোহান শাহ নামের (৩০) এক যুবক গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় করা মামলায় আসামির তালিকায় নাম রয়েছে 'শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়া' নামের এক ব্যক্তির।
এ নামের সঙ্গে উপদেষ্টা সেখ বশিরের নামের আংশিক মিল রয়েছে। এমনকি তার বাবার নামের সঙ্গেও মামলায় অভিযুক্তের বাবার নামের আংশিক মিল রয়েছে।
সোহান হত্যার ঘটনায় তার মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে রাজধানীর রামপুরা থানায় গত ১৮ অক্টোবর একটি হত্যামামলা করেন। মামলায় ৫৭ জনের মধ্যে শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়া ৪৯ নম্বর আসামি। মামলায় তাকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তার বাবার নাম উল্লেখ করা হয়েছে শেখ আকিজ উদ্দিন ভূঁইয়া।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন সোহান শাহ। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলায়। তিনি ভারগো গার্মেন্টস কারখানায় মেকানিক্যাল বিভাগের প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি করতেন। গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরা সিএনজি স্টেশনের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সোহান শাহ।
মামলায় বলা হয়, সেদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগসহ অন্যরা ছাত্র–জনতার আন্দোলনে নির্বিচার গুলি চালায়। তখন সোহান শাহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে সোহান শাহকে স্থানীয় ফারাজী হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন ওই হাসপাতালের মালিক ইমন ফারাজীর নির্দেশে (মামলার ১৯ নম্বর আসামি) তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। পরে সোহান শাহকে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২৩ আগস্ট ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখানেই গত ২৪ আগস্ট তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে সুফিয়া বেগম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'যখন আমার ছেলে মারা যায়, তখন আমি পাগলের মতো ছিলাম। কয়েকজন আমাকে মামলার নথিতে স্বাক্ষর করতে বলেছিলেন, আমি স্বাক্ষর করেছিলাম। তবে মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে, তা আমি জানি না।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান আকন্দ বলেন, মামলায় নাম থাকা আসামির পুরো নামের সঙ্গে সেখ বশিরের নামের মিল নেই। তবে ঠিকানা মিল রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।